1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জিএম খাদ্য’ চাষ স্থগিত, ভারতের রাজনীতিতে বেগুন বিতর্ক

১০ ফেব্রুয়ারি ২০১০

পরিবেশের ক্ষতি এবং ভোক্তাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ‘জিএম’ বা জিনগতভাবে পরিবর্তিত বেগুন চাষ স্থগিত করেছে ভারত৷ সমালোচকদের ভাষ্য, এ সিদ্ধান্ত ক্ষমতাসীন কংগ্রেস জোটের দ্বন্দ্বের ফল এবং তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার চেষ্টা৷

https://p.dw.com/p/Lxhc
আমাদের চির পরিচিত ভারতীয় বেগুনছবি: cc-by-sa-mysticalangel

ভারতের উদ্ভাবিত ‘বিটি ব্রিনজাল' নামের এই বেগুনের প্রজাতিই বিশ্বে জিনগতভাবে পরিবর্তিত প্রথম বেগুন৷ উচ্চ ফলনশীল এবং পোকামাকড়ের সংক্রমণ থেকে মুক্ত এই বেগুন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য এই অক্টোবরে কৃষকদের হাতে এর বীজ পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশ জানালেন, এই বেগুন চাষের ফলাফল নিয়ে আরও বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আপাতত এই পরিকল্পনা বাদ দিচ্ছে সরকার৷

এর আগে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য ছাড়পত্র দিলেও রমেশ বলছেন, হাইব্রিড এই বেগুন মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কি না কিংবা পরিবেশের ওপর এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না তা খতিয়ে দেখতে আরও স্বতন্ত্র গবেষণা প্রয়োজন৷

Auberginen gefüllt mit Lammragout
জার্মানিতেও বেগুন এখন সহজলভ্যছবি: DW-TV

রমেশ বলেন, ‘‘পূর্বসতর্কতার মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে একটা সাবধানী পদক্ষেপ নেওয়াটা আমার দায়িত্ব৷'' তিনি বলেন, ‘‘সবাইকে সন্তুষ্ট করার মতো পর্যাপ্ত পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বজায় থাকবে ৷ পরীক্ষায় যদি দেখা যায় যে এর উৎপাদন শুরু করা যাবে না, তাহলে তাই হবে৷''

অবশ্য এর আগেই দেশজুড়ে এই বেগুন চাষ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে জনমত যাচাই বিতর্কের আয়োজন করেছিলেন রমেশ৷ বেগুনচাষ বেশি হয় এমন অঞ্চলগুলোসহ কংগ্রেস শাসিত নয় এমন রাজ্যগুলোতে তীব্র বিরোধিতার শিকার হয়েছে এই ‘জিএম বেগুন' চাষের পরিকল্পনা৷ এর আগে ২০০২ সালে ‘জিএম তুলা' চাষ শুরু করলেও ভারতে কোনো ‘জিএম-খাদ্য' চাষের চেষ্টা এই প্রথম৷

Jairam Ramesh
ভারতের পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশছবি: AP

কিন্তু, জনমনে বিরোধিতা সত্ত্বেও পরিবেশ মন্ত্রীর এই সতর্কতাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন, ‘জিএম-খাদ্য' প্রবর্তনের পক্ষে কাজ করা তদবিরি সংগঠনসমূহের কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷ তাদের দাবি, এই স্থগিতাদেশ যতোটা সতর্কতামূলক তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত৷ একে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোটের অন্তর্দ্বন্দ্বের ফল হিসেবেও দেখছেন কেউ কেউ৷

কংগ্রেস জোটের অন্যতম শরীক ‘ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি'র নেতা কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রী শরদ পাওয়ার এই বেগুন চাষের উদ্যোগ নিয়েছিলেন৷ কিন্তু এদিকে, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে পরস্পরের দিকে কাদাছোঁড়াছুঁড়ি শুরু করে দিয়েছে শরদের দল এবং কংগ্রেস৷ এরই পরিপ্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন জোটে কংগ্রেসের একক নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি সমালোচকদের৷

নতুন দিল্লির সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ-এর এন. ভাস্কর রাও বলছিলেন, ‘‘তারা এক ঢিলে তিনটে পাখি মারার চেষ্টা করছে৷ এই বেগুন চাষের বিরোধী জনরোষ দমাচ্ছে তারা৷ দ্বিতীয়ত, এর ফলে বিরোধী রাজনৈতিক শিবির আর কোনো সুযোগ পেল না এবং তৃতীয়ত শরদ পাওয়ারকে একহাত দেখে নিল তারা৷''

প্রতিবেদন : মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা : আব্দুল্লাহ আল-ফারূক