জার্মান সংস্কৃতির কিছু মিথ
জার্মানির সংস্কৃতি সম্পর্কে অনেক প্রচলিত ধারণা আছে৷ কোনোটি ভুল, কোনোটি আংশিক ভুল৷ এমন কিছু ধারণা ও বাস্তবতা নিয়ে এই ছবিঘর৷
রুপালি পর্দার প্রতি আকর্ষণ
জার্মানিতে সিনেমা দেখতে যান কত লোক বলুন তো? শুনে চমকে যাবেন না৷ একেকজন দু’বছরে গড়ে মাত্র তিনবার৷ ১৯৫০ সালে যেখানে বছরে ৮০ কোটি দর্শনার্থী সিনেমায় যেতেন, সেখানে এখন যান বছরে মাত্র ১২ কোটি ১০ লাখ৷
বার্লিন কি ‘সৃজনশীলতার শহর’?
বার্লিন শহরের প্রতি হাজার বাসিন্দার জন্য ১১ জন আঁকিয়ে আছেন৷ রাজধানীতে গোটা জার্মানির অন্য যে কোনো শহরের তুলনায় শিল্পীর সংখ্যা বেশি, ৩৭০ জন৷ তাই ছবির প্রদর্শনীও হয় সবচেয়ে বেশি৷ এমনকি এখানে ৫ ভাগের প্রায় এক ভাগ ব্যবসা সংস্কৃতি নির্ভর৷
অর্কেস্ট্রার চারনভূমি
জার্মানি হলো অর্কেস্ট্রার স্বর্গরাজ্য৷ এখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি অর্কেস্ট্রা দল আছে৷ এখন ১৩১টি পাবলিক অর্কেস্ট্রা দলে প্রায় ১০ হাজার মিউজিশিয়ান কাজ করেন৷ সবচেয়ে পুরোনো অর্কেস্ট্রা দলটি ১৫০৩ সালে প্রথম পারফর্ম করে৷
এত নাট্যমঞ্চ আর কোথাও নেই
সরকারি তহবিলেই জার্মানিতে চলে ১৪২টি নাট্যমঞ্চ৷ নাউমবুর্গে সবচেয়ে ছোট থিয়েটারটির ধারণক্ষমতা ৮০ জন এবং এতে ১১ জন স্টাফ কাজ করেন৷ আর সবচেয়ে বড় থিয়েটারটি হামবুর্গে, যেখানে রয়েছে ১,২০০টি সিট৷ আবার স্টুটগার্টে নাটক, ব্যালে ও অপেরার জন্য যে পারফর্মিং আর্ট সেন্টারটি আছে, তার হলটির ধারণক্ষমতা ১,৪০০৷ এখানে বছরে শো হয় ৯০০টি৷ কাজ করেন ১,৩৫০ জন কর্মী৷
ঐতিহ্যবাহী অপেরা
ঐতিহ্যবাহী অপেরা শোয়ের ক্ষেত্রেও ঠিক পিছিয়ে নেই জার্মানি৷ পৃথিবীর মধ্যে জার্মানি বছরে ৫২৭টি অপেরা শো হয় বার্লিনে, যা পুরো জার্মানির মধ্যে সর্বোচ্চ, তবে পৃথিবীর মধ্যে নয়৷ মস্কোতে বছরে ৫৮২টি ও ভিয়েনায় ৫৩৫টি অপেরা শো হয়৷ তবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অপেরা হাউস কিন্তু বৈরুতে৷
শিল্পকর্ম ব্যবসা
যুক্তরাষ্ট্রের পরে জার্মানিতেই সবচেয়ে বেশি আর্ট গ্যালারি ও ডিলার আছে৷ সংখ্যায় ৯,৮০৪টি৷ তবে ছবি বিক্রিবাট্টায় খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থানে নেই দেশটি৷ ছবি বিক্রি থেকে সারা পৃথিবীতে যা আয় হয়, তার মাত্র ২ ভাগ হয় জার্মানিতে৷ এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও চীন অনেক এগিয়ে৷
বইয়ের পসরা
বছরে ৯০ হাজারেরও বেশি বই আসে জার্মানির বাজারে৷ পাশাপাশি রাখলে এটা একটি আড়াই কিলোমিটার লম্বা লাইব্রেরির আকার ধারণ করবে৷
সংগীত উৎসব
জার্মানির সবচেয়ে বড় সংগীত উৎসব বখুম টোটালে প্রতি বচর আট লাখেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন৷ তবে বাণিজ্যিক উৎসব বলতে সবচেয়ে বড় হলো রক আম রিং উৎসব৷ এখানে বছরে ৮৭ হাজার সংগীতপ্রেমী যোগ দেন৷
ভালোবাসার সংগীত
জার্মানির অর্কেস্ট্রাগুলোতে প্রায় ৩০ লাখ অ্যামেচার মিউজিশিয়ান কাজ করেন৷ এর বাইরে আরো ৬৪ হাজার পেশাদার মিউজিশিয়ান আছেন৷
স্থাপত্য কলা
ইউনেস্কোর তালিকায় দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হলো কোলন ক্যাথিড্রাল৷ বছরে ৬০ লাখ দর্শনার্থী এই গোথিক স্থাপত্যটি দেখতে আসেন৷ এছাড়াও অসম্ভব সুন্দর সব স্থাপত্যে ভরা মধ্য ইউরোপের দেশটিতে৷