1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মান সংবাদ মাধ্যমে পাকিস্তানের বন্যা

২২ আগস্ট ২০১০

জার্মান পত্রপত্রিকাগুলির শিরোনাম জুড়ে রয়েছে পাকিস্তানের ভয়াবহ বন্যা এবং ত্রাণ তৎপরতা৷ এছাড়া, সেদেশের নেতিবাচক ভাবমূর্তির কারণে অর্থ সংগ্রহে সমস্যার বিষয়গুলিও উঠে এসেছে সংবাদপত্রের পাতায়৷

https://p.dw.com/p/OtQU
Press, Germany, Pakistan, Asia, জার্মান, সংবাদ, মাধ্যম, পাকিস্তান, বন্যা,

সাপ্তাহিক ‘ডি সাইট' পত্রিকায় এই কঠিন সময়ে পাকিস্তানকে কেন সাহায্য করা উচিত, তার সপক্ষে কিছু যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে৷ সংবাদভাষ্যের মূল বক্তব্য, ‘পাকিস্তানকে আমরা সাহায্য না করলে অশুভ শক্তি এগিয়ে আসবে, যার ফলে বন্যাকবলিত দেশটি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে৷' পাকিস্তান দুর্নীতিগ্রস্ত ও পরমাণু শক্তিধর এক রাষ্ট্র, যার অস্তিত্ব আজ বিপন্ন, যে দেশ সন্ত্রাস রপ্তানি করে ও তালেবান শক্তিকে সাহায্য করে৷ আফগানিস্তানে জার্মান সৈন্যরা আক্রান্ত হলে প্রায়ই দেখা যায়, কলকাঠি নাড়া হচ্ছে পাকিস্তান থেকে৷ জার্মানিতে বিফল সন্ত্রাসী হামলার ষড়যন্ত্রের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, যে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ পেয়েছে৷ দেশের একটা বড় অংশের উপর প্রেসিডেন্ট জারদারির প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷ যেখানে আছে, সেখানেও সরকারি অর্থের সিংহভাগ যায় সামন্ততান্ত্রিক কিছু পরিবারের পকেটে৷ সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এমন এক দেশকে সাহায্য করতে জার্মানির মানুষ যে নারাজ হবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই৷ কিন্তু সাহায্য না করার মূল্যের কথাও ভাবতে হবে৷ শূ্ণ্যস্থান পূর্ণ করতে ইসলামী উগ্রবাদীরা বিপুল উৎসাহের সঙ্গে এগিয়ে এসেছে৷ ফলে কৃতজ্ঞ বন্যার্তদের মধ্য থেকে জেহাদের জন্য যোদ্ধা নিয়োগ করা অনেক সহজ হয়ে উঠতে পারে৷ মনে রাখতে হবে, সৌদি আরবের দেওয়া ত্রাণের অঙ্ক ইউরোপীয় সাহায্যের প্রায় দ্বিগুণ৷ সোভিয়েত দখলদারি বাহিনীকে তাড়াতে ও তালেবান সৃষ্টি করতে পশ্চিমা বিশ্ব পাকিস্তানের সরকার, সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাকে কোটি কোটি ডলার দিয়েছে৷ আর আজ জাতিসংঘের আহ্বানে বন্যার্তদের সাহায্য করতে মাত্র ৫০ কোটি ডলার যোগাড় করা যাচ্ছে না? – এই প্রশ্ন তুলেছে ‘ডি সাইট'৷

বন্যাত্রাণে তৎপরতার ক্ষেত্রে সংবাদ মাধ্যমে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি আবার উজ্জ্বল হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছে ‘নয়ে স্যুরশার সাইটুং' সংবাদপত্র৷ সেনাবাহিনী এই সুযোগে প্রচারণা চালাচ্ছে৷ ইসলামী উগ্রবাদীদের পেছনে ফেলে ত্রাণ তৎপরতায় কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা সরকার স্বীকার করে নিয়েছে৷ তবে সরকারের ভাবমূর্তি মোটেই উজ্জ্বল নয়৷ মুশাররফের প্রস্থানের পর জেনারেল কায়ানি যখন সেনাবাহিনীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন, তখন সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি অত্যন্ত নেতিবাচক ছিলো৷ কায়ানি রাজনীতি থেকে সেনার প্রভাব হটিয়ে তালেবান বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করেন৷ ইতিমধ্যে সংবাদ মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ‘লবি'ও বেড়ে গেছে৷ ফলে সরকারের মুণ্ডপাত ও সেনাবাহিনীর প্রশংসা বেড়ে চলেছে৷ পাকিস্তানের জেনারেলরা শিল্প বাণিজ্য জগতের উপর যে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছেন, সেবিষয়ে অবশ্য সংবাদ মাধ্যমে কোনো উচ্চবাচ্য করা হয় না৷ মনে রাখতে হবে, অতীতে সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারের নিষ্ক্রিয়তার জিগির তুলে দেশকে বাঁচানোর স্বার্থ তুলে ধরে বার বার ক্ষমতা দখল করেছে৷

সংকলন: সঞ্জীব বর্মন

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ