জার্মানির ফুটবলের পুনর্জন্ম হল তার নতুন প্রজন্ম
২৮ জুন ২০১০এক হিসেবে এর একটা রাজনৈতিক দিকও আছে৷ জার্মানিতে বিদেশী-বহিরাগতদের নিয়ে অনন্ত আলাপ-আলোচনা চলে, বিশেষ করে তাদের সমাজের অঙ্গ করে তোলা নিয়ে৷ কিন্তু যে জার্মান দলে ক্লোজে, পোডোলস্কি বস্তুত পোলিশ বংশোদ্ভূত, ওয়েজিল তুর্কি, সেই সঙ্গে আছে সামি খেদিরা কি বোয়াটেং-এর মতো পৃথিবীর বিভিন্ন দিক ও দিশারা দেওয়া নানান খেলোয়াড়, সেই দলই প্রমাণ করে দেয় যে, অন্তত জার্মান ফুটবলে বিদেশী-বহিরাগতরা একটা সমস্যা নয়, তারা একটা সম্পদ৷
হয়তো সেই কারণেই এই তরুণ জার্মান দল বহির্বিশ্বে জার্মানির ভাবমূর্তি বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে, স্বয়ং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল টরোন্টোয় বসে যেমন বলেছেন: ‘‘আমি এই প্রথম ইংরিজি ভাষ্য সহ একটি খেলা দেখলাম, এবং সেই ভাষ্যে তরুণ জার্মান দলকে যেভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে, তা সারা বিশ্বের নজর কাড়বে৷''
অথচ তারুণ্যের সঙ্গে ছিল অভিজ্ঞতা৷ প্রথম গোলটি করেন মিরোস্লাভ ক্লোজে, যাঁর বয়স এখন ৩২৷ অপরদিকে শেষ দু'টি গোল করে বায়ার্ন মিউনিখের থমাস ম্যুলার, যার বয়স ২০৷ প্লেমেকার - এক কথায় জার্মানির ক্ষুদে জিদান - মেসুত ওয়েজিল সবে ২৩-এ পা দেবে৷ কিন্তু ওয়েজিল, খেদিরা কিংবা গোলরক্ষক মানুয়েল নয়ার, এরা সবাই আন্ডার-টোয়েন্টিওয়ানে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলেছে এবং ৪-০ গোলে জিতেছে৷
বিজয়ী দলের খেলোয়াড় থেকে কোচ ইওয়াখিম লোয়েভ, সকলের মুখেই শোনা যাচ্ছে দলের প্রশংসা, কোনো বিশেষ খেলোয়াড়ের নয়৷ এবং সেটাই এই দলের বিশেষত্ব৷ ফরোয়ার্ডে ক্লোজে, পোডোলস্কি, ম্যুলার, প্রয়োজনে কাকাও - এবং অবশ্যই ওয়েজিল, এরা যে কোনো সময় গোল করতে সমর্থ৷ মাঝমাঠে অবলীলাক্রমে বালাকের অভাব ভুলিয়েছে বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার: বাঘের মতো খেলেছে সে৷ তার শারীরিক উপস্থিতি বালাকের মতো৷ ডিফেন্সে মের্টেসাকার'এর সাম্প্রতিক দুর্বলতা পুরোপুরি সামলে দিয়েছে আর্নে ফ্রিডরিশ৷ গোলে মানুয়েল নয়ার'এর মধ্যে ইতিমধ্যেই বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক হবার সম্ভাবনা দেখছেন স্বয়ং অলিভার কান৷
অথচ গোটা দল মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভুগছে না৷ খেলার পর পোডোললস্কি বলেছে: ‘‘আমরা অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার পর যে ভুল করেছিলাম, অর্থাৎ পরের খেলাটি কিছুটা ঢিলেভাবে শুরু করেছিলাম, এবার সে ভুল করলে চলবে না৷ বরং আমাদের পরের গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলির উপর ঠিক একই ভাবে মনঃসংযোগ করতে হবে৷ আমাদের এখনও তিনটে খেলা বাকি আছে এবং আমরা শেষ পর্যন্ত থাকতে চাই৷'' মানে ফাইনাল অবধি৷
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: আরাফাতুল ইসলাম