জার্মানিতে সারা বিশ্বের গবেষকদের আলোচনায় বাংলা
সম্প্রতি জার্মানির হালে শহরে অনুষ্ঠিত হলো ‘বেঙ্গল স্টাডিজ কনফারেন্স’৷ পঞ্চমবারের মতো আয়োজিত এই সম্মেলনে যোগ দেন ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকেরা৷ বিস্তারিত ছবিঘরে...
কেন এই সম্মেলন?
দু’বছর অন্তর জার্মানির হালে (সালে) শহরে আয়োজিত হয় ‘বেঙ্গল স্টাডিজ কনফারেন্স’৷ সারা বিশ্বের গবেষকেরা কী ভাবছেন বাংলার বিভিন্ন দিক নিয়ে, তা তুলে ধরতেই এই আয়োজন করে মার্টিন লুথার বিশ্ববিদ্যালয় ও ‘বেঙ্গল লিঙ্ক’ নামের একটি সংস্থা৷ এবছর অক্টোবরের ২৬ থেকে ২৮ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে যোগ দেন ভারত, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ২১জন তরুণ গবেষক৷
কারা কারা যোগ দিলেন?
ভারতের জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এই সম্মেলনে বাংলাদেশের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিও ছিলেন৷ এছাড়া নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যোগ দেন এই সম্মেলনে৷ সম্মেলনের সার্বিক আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন জার্মানির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলা নিয়ে কাজ করেন এমন একদল গবেষক৷
বাউল গান থেকে ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’
সম্মেলনটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলা নিয়ে বর্তমান গবেষণার একটি মঞ্চ হওয়ায় এই দুদিনে উঠে আসে বহু বিচিত্র বিষয়৷একদিকে গবেষকরা আলোচনা করলেন ইউরোপে অভিবাসী বাঙালিদের অবস্থা নিয়ে, অন্যদিকে আলাপচারিতায় উঠে এলো দুই বাংলার ইতিহাসের নানা দিক৷ শুধু তাই নয়, বাংলা নিয়ে গবেষনার বৈচিত্র্য এতই যে, গবেষণার বিষয় থেকে বাউল গান বা ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, কিছুই বাদ পড়েনি৷
বিশ্বে বাংলা, বাংলা বিশ্বে
বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের আলোচনা থেকে উঠে আসে বাংলা বা ‘অবিভক্ত বঙ্গ’ নিয়ে জ্ঞানচর্চার গুরুত্ব৷ সেই সাথে ইউরোপেও বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার মূল কেন্দ্র জার্মানি হওয়ার কারণে এই উদ্যোগ অবশ্যই উল্লেখযোগ্য৷
বাংলাদেশের প্রতিনিধি
বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে এই সম্মেলনে যোগ দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম খালেদ৷ তাঁর বক্তব্যে তিনি তুলে ধরেন নেদারল্যান্ডসে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ একটি চিত্র৷ এর আগে নেদারল্যান্ডসের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল স্টাডিজ’-এ এই বিষয়ে মাস্টার্স পর্যায়েও গবেষণা করেছেন তিনি৷
ভারত থেকে এলেন যাঁরা...
ভারত থেকে এই সম্মেলনে একাধিক গবেষক যোগ দেয়ায় বক্তব্যের বিষয়েও ছিল বৈচিত্র্য৷ কেউ ভারতের জাতিভেদ প্রথা নিয়ে তাঁর গবেষণার কথা শোনান৷ বর্তমান ভারতীয় রাজনীতিতে নারীদের গুরুত্ব বা বাঙালির তন্ত্রসাধনার ইতিহাসও তুলে ধরা হয়৷
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সম্মেলনের শেষে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে এমন আয়োজন ভবিষ্যতে ভারত ও বাংলাদেশেও করার প্রস্তাব রাখা হয়৷ এর ফলে দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ গবেষকদের জন্য দুই বাংলাসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বাঙালিদের নানা সমস্যা নিয়ে গঠনমূলক গবেষনার মঞ্চ তৈরি হবে৷ জার্মানিতেই আবার ২০২০ সালে আয়োজিত হবে এই সম্মেলন, সেই আশ্বাসও দেন এবারের আয়োজকরা৷