জার্মানিতে যে সব নারী চ্যান্সেলর হতে চান
জার্মানির সাতটি মুখ্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে চারটি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হলেন মহিলা৷ চলুন, পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক...
‘মা ম্যার্কেল’
জার্মানির প্রথম মহিলা চ্যান্সেলর হিসেবে ২০০৫ সালে শপথ গ্রহণ করার পর ১২ বছর কেটে গেছে – ম্যার্কেল এখনও সেই পদেই অধিষ্ঠিত রয়েছেন৷ এমনকি নিজের দলের লোকেরাও আজ তাঁকে ‘মুটি’ বা ‘মা’ বলে অভিহিত করে – মা বলতে জাতির জননী – এবং সেটা ঠাট্টা বা অশ্রদ্ধা করে নয়৷ আর্থিক সংকট থেকে শুরু করে উদ্বাস্তু সমস্যা অবধি হাল ধরে রেখে জার্মানিকে বাঁচিয়ে চলেছেন ‘মা’ – এই হলো জনমানসে ম্যার্কেলের ভাবমূর্তি৷
আরো চার বছর?
জরিপ বলছে, ম্যার্কেলের সিডিইউ দল আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনেও ৪০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেতে চলেছে৷ অর্থাৎ চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেলের একটি চতুর্থ কর্মকালের পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে৷
‘সবুজ দলের আঙ্গেলা’
জার্মানির সবুজ পার্টি যে পশ্চিমি বিশ্বের সফলতম পরিবেশবাদী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে গণ্য, তার একটি কারণ হলো, জার্মানির সবুজদের ডান কিংবা বাম, কোনোদিকেই ফেলা চলে না৷ ঠিক সেইভাবেই সবুজদের কাট্রিন গ্যোরিং-একহার্ড একদিকে কট্টর পরিবেশবাদী, অন্যদিকে আবার গভীরভাবে ধর্মানুরাগী৷
সবুজদের ডবল টিকিট
জার্মানির সবুজদের এবার একজনের বদলে দু’জন মুখ্য প্রার্থী: কাট্রিন গ্যোরিং-একহার্ড ও চেম ও্যজদেমির, একজন মহিলা ও একজন পুরুষ, কিন্তু দু’জনেই মধ্যমপন্থি, এই দু’জনেই আবার দলের যুগ্ম সভাপতি৷ শোনা যাচ্ছে, সবুজরা নাকি এবার ম্যার্কেল সরকারে জোট সহযোগী হবার আশা করছে৷
বামপন্থি নেত্রী
বামদলের প্রধান সারা ভাগেনক্নেশ্ট কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির ইয়েনা শহরে বড় হয়েছেন৷ তাঁর বাবা ইরানি বংশোদ্ভূত ও মা জার্মান, তাই তাঁর নামের বানান কিন্তু প্রচলিত জার্মান ‘সারাহ’ নয়, বরং ইরানি ধাঁচের ‘সাহরা’৷ তিনি একবার মন্তব্য করেছিলেন, সমাজতন্ত্রের আদর্শের সঙ্গে সাবেক পূর্ব জার্মানির ‘‘কোনো সম্পর্ক নেই’’৷ অপরদিকে তিনি ‘‘শিকার ধরা পুঁজিবাদের’’ বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছেন৷
বিরোধীর ভূমিকায় চিরকাল?
বামদল গত চার বছর ধরে জার্মান সংসদে বৃহত্তম বিরোধী দল৷ ২০১৩ সালে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল বলেছিল, তারা কোনোমতেই বামদলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করবে না৷ এবার কিন্তু এসপিডি এ বিষয়ে নীরব৷ হয়ত এসপিডি সিডিইউ-সিএসইউ-এর চেয়ে কম আসন পেলেও অন্য একটি জোট সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে৷
‘জার্মানির জন্য বিকল্প’
অ্যালিস ভাইডেলকে উগ্র দক্ষিণপন্থি, বহিরাগত বিদ্বেষি এএফডি দলের মুখাবয়ব বলা চলে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক আছে৷ উচ্চশিক্ষিতা ভাইডেল নিজে সমকামী; তাঁর দল সমকামী বিবাহের বিরোধী৷ এএফডি দল যখন মূলত ইউরো মুদ্রা বিরোধী দল ছিল, তখন ভাইডেল যোগদান করেন৷ সেযাবৎ তাঁর দলে দক্ষিণপন্থি প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে ও দলের একাধিক সদস্যকে সম্প্রতি জাতিবাদী ও বহিরাগত বিদ্বেষি মন্তব্য করতে শোনা গেছে৷
ভাইডেল একা নন
এএফডি দলও এবার চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে দু’জনকে মনোনীত করেছে, ভাইডেল ও এএফডি দলের যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা আলেক্সান্ডার গাউল্যান্ড৷ ভাইডেল তাঁর দলকে কেন্দ্র করে সব বিতর্ক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করে যথেষ্ট সফল হয়েছেন – যদিও সম্প্রতি একটি টেলিভিশন বিতর্কে তাঁকে সঞ্চালিকার উপর বিরূপ হয়ে স্টুডিও ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়৷