জার্মানিতে যেভাবে করদাতার অর্থ নষ্ট হয়
করদাতাদের অর্থ। তা দিয়ে এমন সরকারি কাজ করা হয়, যা কারো কাজে লাগে না। জার্মানির সেরকমই কিছু উদাহরণ থাকলো এখানে।
কার জন্য রেল-রোড ক্রসিং
রিপোর্টটা প্রকাশ করেছে জার্মান ট্যাক্সপেয়ারস ফেডারেশন। কীভাবে করদাতাদের টাকা নষ্ট হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ আছে রিপোর্টে। এখানে যেমন রেল ক্রসিং তৈরি করা হয়েছে মাঠের মধ্যে। কিন্তু কার জন্য? রাস্তাই তো নেই। যানবাহন যাবে না। পথ নেই, তাই পথচারীও যাবে না। এর জন্য খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ইউরো।
সরকারি হোটেলে অর্থ নষ্ট
বনের সরকারি হোটেল পিটার্সবার্গ। একসময় বন ছিল জার্মানির রাজধানী। তারপর রাজধানী সরানো হয়েছে বার্লিনে। এই সরকারি অতিথিশালায় গত সাত বছরে চার কোটি ৫০ লাখ ইউরো খরচ করা হয়েছে নবীকরণের জন্য। কিন্তু এই হোটেলে বেশি মানুষ যান না। তাই লোকসান হয়েছে সাত বছরে সাত কোটি ইউরো। অর্থ তো আসে করদাতার পকেট থেকে।
কেন এই বেড়া
উত্তর জার্মানির একটি শহরে মাঠ ঘিরে ৪২৬ ফুট লম্বা এই বিশাল বেড়া দিতে খরচ হয়েছে ৮১ হাজার ইউরো। কিন্তু তাতে কী লাভ হলো? স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছিলেন, খেলার মাঠ থেকে প্রচুর শব্দ আসে। তাই একটা শব্দ-নিরোধক বেড়া দিতে। যে বেড়া দেয়া হলো, তাতে শব্দ আটকাবে না। আর যে ক্লাবের সদস্যরা এখানে খেলেন, তাঁদের সঙ্গেও আগে কথা বলা হয়নি। ফলে অর্থ খরচ হলো, তাতে লাভ হলো না।
এই ব্রিজ কেন
পশ্চিম জার্মানির শহর লাডেনবার্গে ১২ লাখ ইউরো খরচ করে এই ব্রিজ বানানো হয়েছে। কিন্তু ব্রিজের সংযোগকারী রাস্তা তৈরি হয়নি। এই ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল একটি শিল্পসংস্থার নিজস্ব রেললাইনের উপর দিয়ে যাতায়াতের জন্য। কিন্তু ওই শিল্পসংস্থা জানিয়ে দিয়েছে, তারা রেললাইন আর করছে না। ব্রিজও তাই অকেজো।
করোনা রুখতে
করোনা মোকাবিলায় ছোট ব্যবসায়ী, ফ্রিল্যান্সারদের সাহায্য করেছে সরকার। রিপোর্টে বলা হয়েছে, অনেকেই ভুয়ো ওয়েবসাইট খুলে, ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে অর্থ পেয়েছে। জুলাইতে সরকার জানিয়েছিল, এই রকম পাঁচ হাজার সন্দেহজনক ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। সংগঠনের মতে, করোনায় সাহায্য জরুরি। কিন্তু তার মাপদণ্ড কড়া হওয়া উচিত। না হলে করদাতাদের অর্থের অপচয়।
সরকারি কাজ মানেই
উপমহাদেশে সরকারি কাজ নিয়ে হামেশা অভিযোগ ওঠে, অর্থ খরচ হয়, কিন্তু তা কারো কাজে লাগে না। সেখান থেকেই প্রশ্ন ওঠে, তা হলে কি এর মধ্যেও দুর্নীতি আছে? দেখা যাচ্ছে, জার্মানির মতো উন্নত দেশের হালও আলাদা কিছু নয়। তা হলে সরকারি কাজ মানেই কি সব দিক বিবেচনা না করে কিছু একটা করে দেয়া? আর লোকেদের জালিয়াতি করার অভ্যাসও কি উন্নত দেশে কম নয়?