1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম কাজের উপায়

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১

জার্মানিতে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজের সুযোগ-সুবিধা কতটুকু? চাইলেই কি কাজ পাওয়া সম্ভব? অথবা সেই পার্ট টাইম কাজ থেকে কি পড়াশোনার পুরো খরচটি উঠে আসবে ?

https://p.dw.com/p/10QUW
ছবি: DW/Niksadat

জার্মানিতে কেউ যদি কাজ করে পড়াশোনা করতে চায় তাহলে প্রতিমাসে তাকে অন্তত আটশো ইউরো উপার্জন করতে হবে৷ এই খরচের মধ্যে ইউনিভার্সিটির ডর্মে থাকা, খাওয়া এবং টুক-টাক হাতখরচ পুষিয়ে নেওয়া যায়৷ তবে সবচেয়ে কঠিন হল কাজ খুঁজে পাওয়া৷ তার চেয়েও কঠিন হল ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ পাওয়া৷

তবে জার্মানির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট সার্ভিস সেন্টার রয়েছে৷ সেখানে কোথায় কাজ আছে, বেতন কত হবে তা নিয়ে নানা ধরণের তথ্য দেওয়া থাকে৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরাই বেশি ভিড় করে এখানে৷ তবে বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাজ করা নিষিদ্ধ, কারণ তাদের খরচ জার্মান সরকার বা অন্য কোনো সংগঠন বহন করছে বৃত্তি দিয়ে৷

কড়া নিয়মের বেড়াজাল

স্টুডেন্ট ভিসার আওতায় কাজের সুবিধা থাকলেও তা ভীষণভাবে সীমাবদ্ধ৷ বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা বছরে নব্বই দিনের বেশি কাজের অনুমতি পাবে না৷ ভিসাতেই তার স্পষ্ট উল্লেখ থাকে৷ বছরে নব্বই দিন অর্থাৎ সপ্তাহে দুই দিন, ৮ ঘন্টা অথবা বছরে ১৮০ দিন অর্ধেক দিন, অর্থাৎ সপ্তাহে ১০ ঘন্টা৷ অর্ধেক দিন বলতে দিনে পাঁচ ঘন্টা কাজ করাকে বোঝাচ্ছে৷ পুরো দিনে কাজ করার অর্থ হল দিনে আট ঘন্টা৷ এত অল্প সময়ের জন্য পছন্দমত কাজ পাওয়া কঠিন৷ এছাড়া সপ্তাহে মাত্র দুই দিন অর্থাৎ মাসে মাত্র আট দিন কাজ করে মাসে আটশো ইউরো উপার্জন করা আরো কঠিন৷ তাই বিভিন্ন ছাত্র-ছাত্রীরা ঝুঁকে পড়ে বিভিন্ন রেস্তোঁরার কাজের দিকে৷ সেখানে সপ্তাহে ১০ থেকে ১৬ ঘন্টা সহজেই কাজ পাওয়া যায়৷ যে কোন ছাত্র-ছাত্রী যদি এর চেয়ে বেশি কাজ করতে চায় তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে৷

ভাষার সমস্যা

তবে কাজ পাওয়ায় সবচেয়ে বড় সমস্যা হবে ভাষাজ্ঞান না থাকা৷ জার্মানিতে যে কোন কাজের জন্য জার্মান ভাষা জানা জরুরি৷ ভাষাটি জানা না থাকলে কোন ধরণের কাজই পাওয়া সম্ভব হবে না৷ আর জার্মানরা সহজে ইংরেজি বলতে চায় না৷ যে কারণে পথে-ঘাটে, কর্মস্থলে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম জার্মান ভাষা৷ যে কোন কাজের জন্য সাক্ষাৎকারটিও হবে জার্মান ভাষায়৷ জার্মান ভাষায় দক্ষ হওয়া একারণেই অনেক বেশি প্রয়োজন৷

BIMUN - Konferenz
ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ পাওয়া কঠিনছবি: Tom Gross

সাক্ষাৎ অভিজ্ঞতা

চেক প্রজতন্ত্রের ছাত্র টোমাস৷ পড়াশোনার পাশাপাশি সে কাজ করে ইউনিভার্সিটি ক্যাফেটেরিয়ায়৷ সপ্তাহে মাত্র ১০ ঘন্টা৷ এদিয়েই সে তার খরচ চালায়৷ টোমাসের উপার্জন মাসে ৬৪৩ ইউরো এবং তা যথেষ্ট নয়৷ টোমাস বললো, ‘‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পরপরই ক্যাফেটেরিয়াতে কাজ পেয়ে যাই৷ পার্ট-টাইম জব বা মিনি-জব বলা যেতে পারে৷ সপ্তাহে দশ ঘন্টা৷ এই কাজটি আমি আনন্দের সঙ্গে করছি কারণ কাজের জন্য আমাকে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে হচ্ছে না৷ কাজ থেকেই আমি সরাসরি ক্লাসে যেতে পারি৷ আমার কোন ক্লাস মিস হচ্ছে না৷''

তবে যে কোন কাজের আগে যা দেখে নিতে বল হয় তা হলো, এই বিশেষ কাজ করার অনুমতি আপনার আছে কি না৷ অনুমতি না থাকার পরও যদি কাজটি আপনি নেন তাহলে ভিসা অফিস বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আপনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারেন৷ টোমাসের জন্য কাজ পাওয়া এবং করে যাওয়া সহজ হয়েছে কারণ সে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশের নাগরিক৷ কাজের জন্য কোন ধরণের অনুমতির প্রয়োজন হয়নি টোমাসের৷ তবে তৃতীয় বিশ্বের ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাধীনভাবে অর্থাৎ ফ্রিল্যান্স কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না৷

তবে যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে সবসময়ই রিসার্চ এ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে লোক খোঁজা হয়৷ যে কোন ছাত্র-ছাত্রীর জন্য তা সবচেয়ে উপযুক্ত কাজ৷ প্রথমত যে কোন সময়, যে কোন দিন এসে তারা কাজ করতে পারে, এ ধরণের কাজের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতির প্রয়োজন হয় না এবং ক্যাম্পাসেই গবেষণাগার থাকায় ক্লাস থেকে খুব বেশি দূরেও যাওয়ার প্রয়োজন হয় না৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক