1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে আত্মহত্যা প্রবণতা

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী১৫ জুন ২০১৬

এদেশে বছরে যত মানুষ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান, তার দ্বিগুণ, অর্থাৎ প্রায় দশ হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে থাকেন৷ আত্মহত্যার হার দীর্ঘমেয়াদি সূত্রে কমলেও, ২০২০ সালের মধ্যে তা আরো দশ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা চলেছে৷

https://p.dw.com/p/1J4Kc
যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যা প্রবণতা বেশি
প্রতীকী ছবিছবি: imago/blickwinkel

যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে আশির দশকে আত্মহত্যার হার চরমে পৌঁছানোর পর পরের তিন দশকে তা কমে অর্ধেক হয়ে আসে৷ ২০০৭ সাল থেকে কিন্তু আত্মহত্যার হার আবার বাড়ছে৷ বছরে দশ হাজার মানুষের আত্মহত্যা ছাড়াও, আত্মহত্যার প্রচেষ্টা করেন অন্তত এক লক্ষ মানুষ৷

আত্মহত্যার পরিসংখ্যানের অসুবিধা হল এই যে, তা অঙ্কের মতো; অঙ্ক আছে, কিন্তু উত্তরটা নিজেই আঁক কষে বার করে নিতে হয়৷ যেমন জার্মানিতে ৯০ শতাংশ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে কোনো মানসিক রোগের কারণে৷ অথবা: বেশি বয়সের মানুষরাই বেশি আত্মহত্যা করে থাকেন৷ অপরদিকে তরুণ-কিশোরদের মধ্যে দুর্ঘটনার পরেই আত্মহত্যা হল মৃত্যুর অন্যতম কারণ৷ ১৫ থেকে ২৫ বয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা সবচেয়ে বেশি; এক্ষেত্রে আবার তরুণ মহিলারাই সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার প্রচেষ্টা করে থাকেন৷ কিন্তু সব মিলিয়ে যারা আত্মহত্যা করেন, তাদের ৭০ শতাংশই পুরুষ৷ আত্মহত্যা করার সময় আত্মহন্তাদের গড় বয়স দাঁড়ায় ৫৭৷

Deutsche Welle DW Arun Chowdhury
অরুণ শঙ্কর চৌধুরীছবি: DW/P. Henriksen

চিকিৎসকদের মধ্যে আত্মহত্যার হার ও প্রবণতা দেখলে চমকে যেতে হয়: পুরুষ ডাক্তারদের আত্মহত্যার হার সাধারণ নাগরিকদের চেয়ে ৩ দশমিক ৪ গুণ বেশি; মহিলা ডাক্তারদের ক্ষেত্রে তা ৫ দশমিক ৭ গুণ! দেশের কারাগারগুলিতে বন্দিদের মধ্যে আত্মহত্যাই হলো মৃত্যুর প্রথম কারণ৷

১৯৮০ থেকে ২০০৭ অবধি যে আত্মহত্যার সংখ্যা কমে অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল,তার একটা কারণ সম্ভবত আশির দশকের সূচনায় জার্মানিতে মানসিক চিকিৎসা সংক্রান্ত সংস্কার৷ সেযাবৎ আরো অনেক ছোট ছোট মানসিক রোগের হাসপাতাল ও চিকিৎসাকেন্দ্র সৃষ্টি করা হয়েছে৷ এছাড়া মানসিক বিষাদ, সাইকোসিস বা মনোবৈকল্য ইত্যাদি রোগের জন্য ওষুধপত্রের প্রভূত উন্নতি ঘটেছে৷ সবচেয়ে বড় কথা, সুইসাইড বা আত্মহত্যা আর সমাজে ‘ট্যাবু' নয়, তা নিয়ে কথাবার্তা বলা চলে, সাহায্য খোঁজা ও নেওয়া চলে৷

জার্মানিতে আত্মহত্যা নিবারণ সমিতি বহুদিন ধরেই আছে, যেমন আছে বিপন্ন ও পীড়িতদের জন্য বিভিন্ন হটলাইন – কেননা যে আত্মহত্যা করার কথা ভাবছে, তার সবচেয়ে আগে প্রয়োজন একজন কথা বলার লোক৷ সমৃদ্ধ সমাজে একাকীত্বের সমস্যাটা ব্যাপক, কাজেই সাইকোথেরাপির সাহায্য নেওয়াই বোধহয় ভালো: মানুষজন আজকাল সে রকম সাহায্য নিতে আগের চেয়ে অনেক কম দ্বিধা করেন৷

মনে রাখতে হবে, বিশেষ করে কম বয়সের মানুষদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা এক হিসেবে এসওএস, মানে সাহায্য প্রার্থনা: ‘‘আমাকে বাঁচাও!'' কাজেই চিকিৎসক ও মনস্তত্ত্ববিদরা আর এর মধ্যে কোন আত্মহত্যার প্রচেষ্টাটা ‘আন্তরিক', আর কোনটা শুধু মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা, এই অবান্তর ভেদাভেদ করেন না৷ যারা একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে,তাদের মধ্যে প্রতি তৃতীয়জন আবার আত্মহত্যার চেষ্টা করবে – প্রতি দশজনের একজন কোনো না কোনোদিন সত্যিই আত্মহত্যা করবে৷ এই হলো বাস্তব সত্য৷

কাজেই জার্মানি জুড়ে আছে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন হটলাইন, ক্রাইসিস লাইন, টেলিফোন কাউন্সেলিং – আর সে সব নম্বর হাতের কাছে না থাকলে, ১১২ এমার্জেন্সি তো আছেই!

এ বিষয়ে আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য