1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে আইনি সহায়তা

২৮ জুন ২০১৯

জার্মানিতে রয়েছে লাখো রকমের বিমা৷ সেগুলোর একটি হচ্ছে আইনি সহায়তা পাওয়ার বিমা৷ মানে আপনি অধিকারের জন্য লড়তে চাইলে পাবেন আইনজীবী এবং অন্যান্য সুবিধা৷

https://p.dw.com/p/3LER8
ছবি: DW/M. von Hein

জার্মানিতে একটি ইন্সুরেন্স বেশ জনপ্রিয়৷ জার্মান ভাষায় সেটিকে বলা হয় ‘‘রেক্সটশ্যুৎসফেরৎজিসারুং'' যার বাংলা অর্থ দাঁড়ায় আইনি খরচ বিমা৷ আমার বিবেচনায় এই বিমা মূলত দু'টি কারণে করেন জার্মানরা: প্রথমত, আইনি সহায়তার প্রয়োজন হলে যাতে সেটা দ্রুত পাওয়া যায়৷ দ্বিতীয়ত, জার্মানিতে মামলা মোকাদ্দমার খরচ অনেক৷ বিমা থাকলে সেই খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়৷ 

বিমা থাকার কারণে কারো অধিকার ভঙ্গ হলে বা কেউ যদি কোন অন্যায়ের শিকার হন, তাহলে সহজেই তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন৷ এই সুযোগ আছে বলে সাধারণ মানুষ অনেকটাই আস্বস্ত থাকেন৷ ফলে অনেক ছোটখাট বিষয় নিয়েও আদালতের শরনাপন্ন হন অনেকে৷ এইতো কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি নিজের বারান্দায় ধূমপান করেও বিপাকে পড়েন৷ তাঁর প্রতিবেশীর অভিযোগ সিগারেটের ধোঁয়ার কারণে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ আদালত শেষমেষ যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়েছেন৷ অর্থাৎ নিজের বারান্দাতেও তিনি চাইলেই যখন তখন ধূমপান করতে পারবেন না৷

এরকম উদ্ভট সব মামলার কথা জার্মানিতে হরহামেশাই শোনা যায়৷ এদেশের বিচার ব্যবস্থার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে শুধুমাত্র সন্দেহের বশে কাউকে গ্রেপ্তার বা জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ নেই৷ পুলিশের ক্ষমতা খুবই সীমিত৷ নেহাত যদি কাউকে গ্রেপ্তারের প্রয়োজন হয় তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র অকাট্য প্রমাণ পাওয়ার পর সেটা করতে পারে৷ তবে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সন্দেহভাজনকে আদালতে তুলতে হয়৷

আর সন্দেহভাজন কাউকে নিয়ে ‘মিডিয়া ট্রায়ালের' সুযোগও নেই৷ কেননা কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যমে তার পুরো নাম, ছবি বা তার ঠিকানা কিংবা পরিবারের পরিচয় প্রকাশের সুযোগ নেই৷ আমাদের দেশের বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে জার্মানির এক বড় পার্থক্য এখানে৷ একজন ব্যক্তির গোপনীয়তা এদেশে আইন দিয়ে কঠোরভাবে সুরক্ষিত৷

জার্মানিতে মৃত্যুদণ্ড নেই৷ আর এদেশে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে অপরাধীকে শোধরানোর সুযোগ আছে কিনা সেটা বিশেষভাবে বিবেচনায় আনা হয়৷ লঘু অপরাধের ক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের সুযোগও দেয়া হয়৷ 

Arafatul Islam Kommentarbild App
আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

তবে, জার্মানির বিচার ব্যবস্থাতে বড় ভুলও হয়৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ২০১২ সালে একবার ভুল বিচারের ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছিলেন৷ একদল নব্য নাৎসি কয়েকজন বিদেশি বংশোদ্তভূকে হত্যা করেছিল৷ কিন্তু, সেসব হত্যাকাণ্ডের বিচারকালে পারিবারিক বিষয়াদিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল৷ ফলে কয়েকবছর সময় লেগে যায় প্রকৃত ঘটনা বুঝতে৷ বিচার কাজে এই ভুলের দায় স্বীকার করে খোদ চ্যান্সেলর ক্ষমা চান৷

জার্মানি এবং বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার তুলনা করতে গেলে একটি বিষয়ই বলতে হয়৷ এদেশে যেকোন পর্যায়েই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়৷ তাই, বিচারের কাজে ভুল করার সুযোগ যেমন অত্যন্ত কম, তেমনি ভুল হলে সেই ভুলের দায় নিতেও প্রস্তুত থাকতে হয়৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য