জার্মানদের প্রিয় ১০টি সুপ
জার্মানরা সুপ তৈরিতে ওস্তাদ৷ প্রায় প্রতিটি মৌসুম ও প্রত্যেক এলাকার জন্য কোনো-না-কোনো বিশেষ সুপের নাম করা যায়৷ বলতে কি, ডাল-ভাত বা রুটি-সবজি মতো জার্মানিতে সুপ আর রুটি একটি আটপৌরে খাবার, যেমন গরীবদের, তেমন বড়লোকদের৷
কুমড়োর সুপ
জার্মানিতে কুমড়ো ফলে না; অথচ হেমন্তে, মানে হ্যালোইনের সিজনে জার্মানির প্রায় সব রেস্টুরেন্টের মেনুতেই কুমড়োর সুপ থাকবেই থাকবে৷
প্যানকেকের সুপ
রেসিপিটা এসেছে খুব সম্ভবত অস্ট্রিয়ার টিরোল এলাকা থেকে, দক্ষিণ জার্মানিতে এই ‘ফ্ল্যেডলে’ সুপের চল খুব৷ প্যানকেকের সরু সরু চাকলি আর মাংসের সুরুয়া দিয়ে তৈরি হয়৷ অন্য সব সুপের মতোই পেঁয়াজ জাতীয় ‘চাইভ’ ও ‘লিক’, তেজপাতা, ‘পার্সলে’, নুন-মরিচ ইত্যাদি যোগ করে স্বাদ বাড়িয়ে নেওয়া হয়৷ তবে প্যানকেকগুলো হয়তো প্রাতরাশ থেকে বেঁচে গেছে!
সেমোলিনার সুপ
সেমোলিনা মানে গমের শুঁড়ি, না বুঝলে ইটালীয় পাস্তার কথা ভেবে নিন – তাই দিয়ে তৈরি ‘ডাম্পলিং’ কিংবা বড়া৷ সেই বড়া সবজি বা মাংসের ঝোলে দিয়ে এই সুপ তৈরি হয়৷ তাতে অল্পস্বল্প দুধ, ফেটানো ডিম, মাখন, ‘নাটমেগ’, গাজরের টুকরো, ‘চাইভ’ ইত্যাদি দেওয়া যেতে পারে৷ পালং শাক বা মাছের ঝোলে ‘ডাম্পলিং’ দিয়েও এই সুপ বানানো হয় বাভেরিয়ায়৷
বিয়ার সুপ
রেসিপিটা বিয়ারের রাজ্য বাভেরিয়া থেকে এসেছে, যেখানকার মানুষ বিয়ার খেতে এত ভালোবাসেন যে, তা দিয়ে সুপ বানাতেও তাদের দ্বিধা নেই৷ পেঁয়াজ কুচিয়ে মাখনে অল্প ভেজে নিয়ে, তাতে টোস্ট করা পাউরুটির গুঁড়ো মিশিয়ে, পরে মাংসের সুরুয়া দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে বিয়ার আর নুন-মরিচ যোগ করলেই হয়ে গেল বিয়ারের সুপ৷ ওপরে চাকলি করে কাটা ‘চাইভ’ বা পেঁয়াজ ছড়াতে পারেন৷
কড়াইশুঁটির সুপ
এটি পশ্চিমের নর্থ রাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের একটি ক্লাসিক৷ রঙটা কড়াইশুঁটির মতোই সবুজ, তাতে সসেজের টুকরো দেওয়া থাকতে পারে৷ সাথে দেওয়া হয় একটা ব্রেড রোল৷ কোলন কার্নিভালের সময় খুব চলে৷
মাছের সুপ
অবশ্যই উত্তর জার্মানির খাবার, বলতে কি, একেবারে উপকূলের৷ জার্মান সুপ ইনস্টিটিউটের মতে হামবুর্গকে জার্মানির ‘সুপের রাজধানী’ বলা চলে – হবে না-ইবা কেন, হামবুর্গ যে জার্মানির বৃহত্তম বন্দর৷ মাছের সুপে মাছ ছাড়া চিংড়ি, কাঁকড়া, ‘মাসেল’ বা ঝিনুক, সব কিছুই থাকতে পারে৷
আলুর সুপ
বার্লিনের রেস্টুরেন্টগুলোর মেনুতে আলুর সুপ থাকতে বাধ্য, যদিও তাকে সুপ না বলে ‘স্টু’ বলাই ভালো৷ তবে বার্লিন কিংবা কাছের ব্রান্ডেনবুর্গে যবের সুপ, সিরাপ আর আলুবোখারা দেওয়া মাংসের সুপ, অ্যাস্পারাগাসের টুকরো দেওয়া চিংড়ির সুপ- এ সবও পাবেন৷
গুলাশ সুপ
এই সুপটি আদতে হাঙ্গেরি থেকে এসেছে৷ আসলে ঘন করে ঝোল সুদ্ধ রাঁধা মাংস ছাড়া আর কিছু নয়, যা নুডল কিংবা আলুর সঙ্গে খাওয়া যায়৷ সেই রান্নাটিকেই আরো কিছুটা পাতলা করে জার্মানিতে গুলাশ সুপ বলে চালানো হয়, বিশেষ করে শীতকালে৷
বুনো রসুনের সুপ
রসুন গাছের পাতা আর ফুল থেকেই এই সুপের নাম ও স্বাদ – রসুনের কোয়া থেকে নয়৷ সুপের রঙটাও সাদা নয়, সবুজ৷
অ্যাস্পারাগাস ক্রিম সুপ
অ্যাস্পারাগাসের বাংলা নাম হলো শতমূলী৷ এই সবজিটি জার্মানদের বিশেষ প্রিয়, বিশেষ করে বসন্তের শেষে যখন অ্যাস্পারাগাস ওঠে৷ শীতেও গতানুগতিক ক্রিম সুপ বানিয়ে, তারপর ক্যান খুলে তাতে কিছু অ্যাস্পারাগাসের টুকরো মিশিয়ে নিলে বেশ একটা বসন্তের আমেজ পাওয়া যায়, নয় কি?