জাপানের খাবারে তেজস্ক্রিয়তা, ইবারাকিতে ভূমিকম্প
১৯ মার্চ ২০১১আট দিন আগের ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং সুনামির আবর্জনায় এখনও চলছে প্রাণের খোঁজ৷ স্বজন হারানো মানুষ এখনও অসংখ্য লাশের মাঝে খুঁজে ফিরছে তাদের প্রিয় মুখ৷ অনেকেই আশায় বুক বেঁধে দিন গুনছেন স্বজনদের উদ্ধার কিংবা খোঁজ পাওয়ার৷ তবে বিশ্ববাসীকে কাঁদিয়ে এখনও হতাশার ছবি প্রকাশ করছে উদ্ধারকারী দল৷ বেড়ে চলেছে নিহত ও নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা৷ শনিবার জাপানের পুলিশ দপ্তর জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ৭,৩০০ এবং নিখোঁজ ১১ হাজারেরও বেশি৷
যারা বেঁচে আছে তাদেরও অবস্থা শোচনীয়৷ প্রচণ্ড শীত এবং খাবার ও পানীয় সংকটে কোনরকমে দিন কাটাচ্ছে তারা৷ তার সাথে যোগ হলো দুধ, শাক এবং ট্যাপের পানিতে তেজস্ক্রিয়তার ছোবল৷ ফুকুশিমা পরমাণু স্থাপনার একাধিক চুল্লিতে বিস্ফোরণের পর তেজস্ক্রিয়তার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন সরকার এবং সাধারণ মানুষ৷ সেই আশঙ্কা আরো বেড়ে গেল শনিবার দুধ এবং শাকে এর অস্তিত্ব ধরা পড়ায়৷ তেজস্ক্রিয়তার আশঙ্কায় সাধারণ মানুষকে ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেওয়া হলেও শনিবার সেই বিপদসীমার বাইরের অঞ্চলের খাবারে তেজস্ক্রিয়তা ধরা পড়ল৷
সরকারি মুখপাত্র ইয়ুকিও এদানো এই তেজস্ক্রিয়তার কথা স্বীকার করলেও জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, কেউ বছরে একবার এই দুধ পান করলে দেহে যতটুকু তেজস্ক্রিয়তা প্রবেশ করবে তা হাসপাতালে একবার সিটি স্ক্যান করলে দেহে ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয়তার মাত্রার সমান৷ তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই৷ তবে কিছুক্ষণ আগে রাজধানী টোকিও'র ট্যাপের পানিতেও তেজস্ক্রিয়তার অস্তিত্ব পেয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ৷
এদিকে, ইবারাকি জেলায় নতুন করে ভূমিকম্প হয়েছে আজ৷ জাপানের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, এই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬.১৷ এতে রাজধানী টোকিওতেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে৷ তবে ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর পাওয়া যায়নি৷
অবশ্য কিছুটা আশার খবর দিয়েছেন ফুকুশিমা পরমাণু স্থাপনায় কর্মরত কর্মীরা৷ তাঁরা বলছেন যে, ফুকুশিমার একটি চুল্লির সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে৷ ফলে নতুন করে কোন বিপদ না ঘটলে ছয়টি চুল্লির চারটিতে শীঘ্রই বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে পারবে৷ আর এর মাধ্যমে আবারও শীতলীকরণ প্রক্রিয়া চালু করতে পারলে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: জাহিদুল হক