1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অবশেষে মুখ খুললেন টিলারসন

২৮ আগস্ট ২০১৭

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন শার্লটভিলে জাতিগত উত্তেজনা প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবস্থান থেকে তাঁর দূরত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2ixQs
USA Rex Tillerson in Malaysia
ছবি: Getty Images/AFP/M. Vatsyayana

রবিবার একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে টিলারসনকে ভার্জিনিয়া প্রদেশের শার্লটভিল শহরে উগ্র দক্ষিণপন্থিদের সমাবেশে প্রাণঘাতী সহিংসতা সম্পর্কে মন্তব্য করতে বলা হয়৷ উত্তরে টিলারসন দৃশ্যত জাতি সম্পর্কে অ্যামেরিকার মূল্যবোধকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মনোভাব থেকে পৃথক করেন৷

টিলারসন বলেন যে, জাতিগত অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামে দেশের দৃঢ়সংকল্প স্পষ্ট৷ ‘‘ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (স্টেট ডিপার্টমেন্ট) থেকে আমরা অ্যামেরিকার মূল্যবোধ ব্যক্ত করি৷ আমরা মার্কিন জনগণের প্রতিনিধিত্ব করি, আমরা অ্যামেরিকার মূল্যবোধের প্রতিনিধিত্ব করি, স্বাধীনতার প্রতি আমাদের অঙ্গীকার, সারা বিশ্বে সব মানুষের প্রতি সমান আচরণের জন্য আমাদের অঙ্গীকার – এবং সেই বার্তা কোনোদিনই বদলায়নি,'' ফক্স নিউজ-কে এ কথা বলেন টিলারসন৷ ঐ মূল্যবোধের প্রগতি ও প্রতিরক্ষার প্রতি মার্কিন সরকার বা তার সংস্থাসমূহের অঙ্গীকার সম্পর্কে কারো কোনো সন্দেহ থাকা উচিৎ নয় বলেও টিলারসন মনে করেন৷ 

নব্য-নাৎসিবাদ, যোগ্য প্রতিবাদ

প্রেসিডেন্টের মূল্যবোধ

এ প্রসঙ্গে টিলরসন বলেন, ‘দ্য প্রেসিডেন্ট স্পিকস ফর হিমসেল্ফ' – অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজের মনোভাবই ব্যক্ত করে থাকেন৷

১১ ও ১২ আগস্ট শার্লটভিলে ‘হোয়াইট সুপ্রিমেসিস্ট' বা শ্বেতাঙ্গ জাতিবাদি, শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদি, নব্য নাৎসি ও অপরাপর চরম দক্ষিণপন্থি গোষ্ঠীদের ব়্যালিতে তিনজন মানুষ নিহত ও আরো অনেকে আহত হন৷ মার্কিন গৃহযুদ্ধের আমলের এর কনফেডারেট জেনারেলের মূর্তি অপসারণ করার বিরুদ্ধে এই দক্ষিণপন্থি প্রতিবাদের আয়োজন করা হয়েছিল৷

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই ঘটনা সম্পর্কে বেশ কয়েক ঘণ্টা নীরব থাকার পর যে বিবৃতি দেন, তাতে মনে হতে পারে যে, যারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলেন, তাদের তিনি নিও-নাৎসিদের সঙ্গে একই পর্যায়ে ফেলছেন৷

‘‘ঘৃণা, গোঁড়ামি ও সহিংসতার এই আশ্চর্য প্রকাশ''-এর নিন্দা করার সময় ট্রাম্প যোগ করেন, ‘‘সব তরফ থেকেই, সব তরফ থেকেই৷'' প্রতিবাদের ‘‘দু'পক্ষেই অনেক ভালো মানুষ'' ছিলেন, বলে ট্রাম্প আরো মন্তব্য করেন৷ ট্রাম্পের এইসব উক্তি জাতীয়বাদি মহলে হাততালি কুড়োলেও, স্বদেশে ও বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে৷ 

‘জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার' অভিযোগ

এ অভিযোগ এসেছে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তরফ থেকে৷ রবিবারেই তিনি ‘‘জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করার'' ব্যাপারে  প্রেসিডেন্টের ‘অসীম প্রস্তুতি'-র কথা বলেন৷

‘‘আমাদের এমন একজন অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট আছেন, যিনি (একদিকে) নিও-নাৎসি ও ক্লু-ক্লুক্স-ক্ল্যানের সদস্যবৃন্দ ও (অপরদিকে) যারা তাদের বিষ ও ঘৃণার বিরোধী, (এই দুই-এর মধ্যে) নৈতিক সমমূল্যতার কথা প্রকাশ্যভাবে ঘোষণা করেছেন,'' এবং এর মাধ্যমে ‘‘শ্বেতাঙ্গ জাতিবাদিদের সাহস দিয়েছেন,'' বলে বাইডেন অভিযোগ করেন৷ 

জাতিগত বৈষম্য সংক্রান্ত জাতিসংঘের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠানও শার্লটভিলের ঘটনার প্রতি ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার নিন্দা করেছে ও ওয়াশিংটনের প্রতি ‘দ্ব্যর্থহীন ও নিঃশর্তভাবে' জাতিবাদি ‘হেট স্পিচ' ও অপরাপর অপরাধ প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছে ও বলেছে যে, ট্রাম্পের এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়া উচিৎ৷

একটি মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গত সপ্তাহে প্রকাশিত জরিপ অনুযায়ী, মার্কিনিদের ৬০ ভাগ বনাম ৩২ ভাগ শার্লটভিলের ঘটনা সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্যে সুখি নন৷ উত্তরদাতাদের একটি অনুরূপ শতাংশ জাতিগত সম্পর্কের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের নীতি প্রত্যাখ্যান করে থাকেন৷ ট্রাম্প গত নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যাবৎ বিদ্বেষ ও পরস্পরের প্রতি বিরূপ মনোভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উত্তরদাতাদের দুই-তৃতীয়াংশের বিশ্বাস৷

এসি/এসিবি (এএফপি, এপি)