1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু সম্মেলনের জন্য বন কী প্রস্তুত?

৫ নভেম্বর ২০১৭

‘জাতিসংঘ শহর' হিসেবে পরিচিত বনে আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা৷ তারপরও ছোট এই শহর এত বড় সম্মেলন আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে৷

https://p.dw.com/p/2mzVM
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Vennenbernd

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে বছরে একবার মিলিত হন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, জলবায়ু বিজ্ঞানী, বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি আর সাংবাদিকরা৷ বাৎসরিক এই সম্মেলন আয়োজন করতে কিছু বিষয়ের দিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়৷ এগুলো হচ্ছে: সময়, অর্থ আর স্থান৷ তবে বনে জলবায়ু সম্মেলন আয়োজন করতে গিয়ে নগর কর্তৃপক্ষ আর ইউএনএফসিসিসিকে সবচেয়ে বড় যে পরীক্ষা দিতে হয়েছে তা হচ্ছে, ধৈর্য্য এবং ইস্পাত কঠোর স্থির মানসিকতা৷ ৬ থেকে ১৭ নভেম্বর অবধি জার্মানির প্রাক্তন রাজধানীতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সম্মেলনটি৷

বড় সম্মেলন, বড় আয়োজন

বিশ্বের ১৯৬টি পক্ষ দুই সপ্তাহ ধরে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে দর কষাকষি করবেন বন শহরে৷ আর তাদের এই বৈঠকের আয়োজন করতে গিয়ে জার্মানির খরচ হচ্ছে ১১৭ মিলিয়ন ইউরো, এর মধ্যে শুধু দুই মিলিয়ন ইউরো খরচ হচ্ছে হঠাৎ বন্যা প্রতিরোধের ব্যবস্থা তৈরি রাখতে, কেননা সম্মেলনের অস্থায়ী ভেন্যু একেবারে রাইন নদীর তীরে অবস্থিত৷

অস্থায়ী ভৈন্যু তৈরিও ছিল এক এলাহিকাণ্ড৷ আটটি ফুটবল মাঠের সমান জায়গায় ২৫,০০০ মানুষের অবস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে মাত্র তিন মাসের মধ্যে৷ বনের সবচেয়ে বড় পার্কটিতে এবং ডয়চে ভেলের পেছনের উঠোনে তৈরি করা হয়েছে দু'টি বড় অস্থায়ী স্থাপনা৷

একদিক থেকে দেখলে ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস চুক্তি থেকে সরিয়ে নেয়ায় এই চুক্তির গুরুত্ব কমেছে মনে হতে পারে৷ তবে অন্যদিকে বাকি বিশ্ব চেষ্টা করছে প্যারিস চুক্তির আওতায় একটি রূপরেখা তৈরি করতে, যা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখবে এবং ২০১৮ সালে পোল্যান্ডে সম্মেলনের সময় থেকে প্রয়োগ করা যাবে৷

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে আরো উদ্যোগী করে তোলার দিকেও গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে৷ ইউএনএফসিসিসি'র নিকেল নুটেল এই বিষয়ে বলেন, ‘‘স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ বছর বিশেষ ভূমিকা পালন করবে৷ শুধুমাত্র গোটা বিশ্বের সরকারের প্রতিনিধিরাই একত্র হচ্ছেন না, তাদের সঙ্গে বিভিন্ন প্রগতিশীল কোম্পানি এবং শহরও যুক্ত হচ্ছেন৷''

দাঙ্গার আশঙ্কা

তবে জলবায়ু সম্মেলনকে ঘিরে বনে দাঙ্গার আশঙ্কাও করা হচ্ছে৷ বিশেষ করে কিছুদিন আগে হামবুর্গে জি-টোয়েন্টি সম্মেলনের সময় যে রকম ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং সহিংস বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছিল, বনেও তেমন কিছু ঘটতে পারে বলে কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন৷ সেরকম কিছু হলে তা বনবাসীর নিত্যদিনের কর্মকাণ্ডের উপর কী ধরনের প্রভাব ফেলবে তা নিয়েও আলোচনা চলছে৷

যদিও আয়োজকরা আশাবাদী যে, সম্মেলন ভালোভাবেই শেষ হবে, তবে এই প্রশ্নও রয়েছে যে, বনের মতো ছোট শহর ২৫,০০০ মানুষের সম্মেলন আয়োজন করার জন্য কতটা উপযুক্ত৷ এই শহরের সব হোটেল মিলিয়ে বিছানার সংখ্যা মাত্র নয় হাজার৷ ফলে জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে আসা অনেককে পাশের শহর কোলন বা কোবলেন্সে থাকতে হবে৷ আর অংশগ্রহণকারীদের থাকা-খাওয়া ছাড়াও শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার উপরও তাদের যাতায়াত এক বড় প্রভাব ফেলবে৷ ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও ভোগান্তিতে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

আয়োজকরা বনে এই আয়োজন করার জন্য সময় পেয়েছেন মাত্র এগারো মাস৷ তা সত্ত্বেও আশাবাদী তারা৷ নুটেল এই বিষয়ে বলেন, ‘‘চলতি বছর এটা শুধু জার্মানির সবচেয়ে বড় সম্মেলনই নয়, সবচেয়ে সবুজ জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলনও৷''

হেলেনা ভাইসে / এআই