1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জকোউই-র আপোষ করা উচিত

গ্রেহেম লুকাস/এসিবি২১ অক্টোবর ২০১৪

ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করবেন জকো উইডোডো বা ‘জকোউই'৷ কিন্তু দুশ্চিন্তা এখনো কাটেনি৷ ডিডাব্লিউ-র গ্রেহেম লুকাস মনে করেন, জকোউই-র সংস্কার কার্যক্রমকে বেসামাল করে দেয়ার সব চেষ্টাই করবে বিরোধীরা৷

https://p.dw.com/p/1DYqy
Indonesischer Präsident Joko Jokowi Widodo
জকো উইডোডোছবি: Reuters

ইন্দোনেশিয়ায় জকো উইডোডোর ভাবমূর্তি অনেকটা গণমানুষের প্রতিনিধির মতো৷ সাধারণ মানুষ মনে করে, তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য যেসব পরিবর্তন দরকার, জকো উইডোডোই তা নিয়ে আসতে পারবেন৷ আপোষে আগ্রহ নেই তাঁর৷ বরং জকো উইডোডো বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম অধ্যুষিত দেশে স্বৈরশাসন পরবর্তী তরুণ প্রজন্মের দুর্নীতিবিরোধী বড় একটি অংশের মন জয় করে নিয়েছেন বিরোধী দলগুলোর চাপের মুখেও অনড় থেকে৷

গত জুলাই মাসে এ কারণেই ইন্দোনেশিয়ার সাবেক স্বৈরশাসক সুহার্তোর জামাতা প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তোকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন জকোউই৷ সুবিয়ান্তোর পেছনে আছেন দেশের পুঁজিপতিরা৷ তাই হয়ত তিনি এবং তাঁর অনুসারীরা মনে করেন, টাকা দিয়ে সবকিছু কেনা সম্ভব৷ উইডোডো জয়ী হওয়ার পর থেকেই এটা পরিষ্কার যে, সুবিয়ান্তো ও তাঁর জোটসঙ্গীরা পরাজয় মানতে রাজি নয় এবং আগামীতে রাজনীতির ময়দানে তাঁদের বিচরণ মোটেই শান্তিপূর্ণ হবে না৷ তাঁরা যে শুধু সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে উইডোডোর জয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন, তা-ই নয়, দেশের সবচেয়ে সিনিয়র বিচারকদের রায়ে হার মানতেও অস্বীকার করেছেন৷

এখন নতুন প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক বিরোধীদের সংগঠিত করে দেশের রাজনীতিতে অচলাবস্থা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন তাঁরা৷ তাঁরা আশা করছেন, এভাবে নতুন প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় জেঁকে বসার আগেই তাঁর প্রশাসনের বিচলিত করা যাবে৷ গত সপ্তাহে বিদায়ী সংসদের শেষ অধিবেশনে তাঁরা সরাসরি স্থানীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়াটি বাতিল করতে সক্ষম হয়েছেন৷

Indonesien Treffen Prabowo Subianto mit Präsident Joko Widodo in Jakarta
প্রাবোয়ো সুবিয়ান্তো (বাঁ দিকে) ও জকো উইডোডোছবি: Reuters/Beawiharta

অথচ এই প্রক্রিয়াতেই ইন্দোনেশিয়ার মাঝারি শহর সোলো-র মেয়র নির্বাচিত হয়ে উজ্জ্বল এক রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন জকোউই৷ স্থানীয় নেতাদের সরাসরি ভোটে তারপর রাজধানী জাকার্তার মেয়রও হয়েছিলেন৷ সংসদে বিরোধীদের এ জয়কে উইডোডো এবং তাঁর সহযোদ্ধাদের জন্য বড় এক চপেটাঘাত বলেই মনে করা হচ্ছে৷

সুবিয়ান্তো এবং তাঁর জোটসঙ্গীরা ইতিমধ্যে শক্তি প্রদর্শন শুরু করেছেন৷ নতুন সংসদে শতকরা ৬৩ ভাগ আসন প্রাপ্তির জোরে নিজেদের লোককেই স্পিকার করেছেন৷ চার ডেপুটি স্পিকারও বিরোধী জোটের৷

তার মানে, সংসদে প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, সংসদ থাকবে বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে৷ গণতন্ত্রে এমনটি হতেই পারে৷ এমন কিছুর মাঝে, বিরোধীরা ভবিষ্যতে অসাংবিধানিক উপায়ও অবলম্বন করতে পারেন – এমন ইঙ্গিত আছে, তা সন্দেহাতীতভাবে বলা যাবে না৷ তবে পরিস্থিতি যে আশঙ্কাজনক – তা নিশ্চয়ই বলা যায়৷

Deutsche Welle Grahame Lucas
গ্রেহেম লুকাস, ডিডাব্লিউ’র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিভাগের প্রধানছবি: DW/P. Henriksen

এদিকে সুবিয়ান্তো নৈতিক অবস্থান থেকে একটুও সরেননি৷ তিনি জানিয়েছেন, মন্ত্রী পরিষদে সুহার্তো-অনুসারীদের রাখবেন না৷ ইন্দোনেশিয়ার লাখো মানুষ যে আশায় তাঁকে ভোট দিয়েছিলেন, সে কথা মনে করে ভিদোদো নৈতিক অবস্থানে অনড় থাকতে চাচ্ছেন৷ এটা সম্মানজনক অবস্থান, একে সম্মানের দৃষ্টিতেই দেখা উচিত৷

তবে সব মিলিয়ে ইন্দোনেশিয়া যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে প্রসিডেন্ট আর সংসদের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত কে জিতবে, বলা মুশকিল৷ সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে৷ জুলাইয়ের নির্বাচনের পরই সে দেশে ‘স্টক মার্কেট'-এ ধস নামে৷ এ পরিস্থিতিতে জকোউই দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে যে বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছিলেন, কার্যক্ষেত্রে তা শিগগিরই দেখা যাবে কিনা সন্দেহ৷

স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে, যে অবস্থানের কারণে তিনি প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন, জকোউই সেখান থেকে সরতে নারাজ৷ কিন্তু জার্মানির সাবেক চ্যান্সেলর অটো ফন বিসমার্ক একবার বলেছিলেন, ‘‘রাজনীতি হলো ‘সম্ভাব্য' এবং ‘অর্জনযোগ্য'-র মধ্যে সমন্বয়ের শিল্প – এটা আগামীর সেরার শিল্প৷'' আপোষকে ‘তেতো স্বাদের' মনে হলেও জকোউই-র এই শিক্ষাটা নিতে হতে পারে৷ যে লক্ষ্য নিয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, তা পূরণের এটাই সম্ভবত একমাত্র উপায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য