1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভুলটা আসলে সাংবাদিকের?

আশীষ চক্রবর্ত্তী২১ জানুয়ারি ২০১৬

অভিযোগ ছিল পুলিশের বিরুদ্ধে, পুলিশ আর ল্যাঙ্কাশায়ারের স্থানীয় প্রশাসন এখন উল্টো দায়ী করছে বিবিসি এবং ব্রিটেনের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমকেই৷ মুসলিম কিশোর ভুল বানান লিখেনি, বরং সাংবাদিকরাই নাকি ভুলভাবে খবর প্রকাশ করেছেন!

https://p.dw.com/p/1Hhc7
Symbolbild Russland Geschichte-Unterricht
প্রতীকী ছবিছবি: picture alliance/dpa/B. Anton

উত্তর ইংল্যান্ডের শহর ল্যাঙ্কাশায়ারের স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের এই বক্তব্য ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি) সহ আরো কিছু সংবাদমাধ্যমও ছেপেছে৷

মূল ঘটনা গত ৭ ডিসেম্বরের৷ বিবিসির এক খবরে জানা যায়, ১০ বছর বয়সি এক মুসলিম শিশু স্কুলে ‘টেরেসড হাউজ' লিখতে গিয়ে ভুল করে ‘টেররিস্ট হাউজ' লিখে ফেলায় ব্যাপক পুলিশি হয়রানির মুখে পড়েছে৷ খবরে জানানো হয়, ছেলেটি আসলে বোঝাতে চেয়েছিল ও একটি ‘টেরেসড হাউজ'-এ বাস করে, কিন্তু বানান ভুল করায় স্কুল কর্তৃপক্ষ আতঙ্কিত হয়ে পুলিশে খবর দেয়, ছুটে এসে ১০ বছরের শিশুকেই ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ৷

বিষয়টি নিয়ে ব্রিটেনে খুব আলোচনা হচ্ছে৷ সংবাদমাধ্যম লুফে নিয়েছে খবরটি৷ বাংলাদেশের কিছু পত্রিকাতেও গুরুত্ব পেয়েছে ল্যাঙ্কাশায়ারের এক কিশোরের অকারণে পুলিশি হয়রানির শিকার হওয়ার খবর৷ সব জায়গাতেই সমালোচনার তীর ছোড়া হচ্ছে ল্যাঙ্কাশায়ারের পুলিশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের দিকে৷

কিন্তু ল্যাঙ্কাশায়ারের পুলিশ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় প্রশাসন এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘নিছক একটি বানান ভুলের জন্য বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে বলে যে খবর প্রকাশ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ অসত্য৷' বিবৃতিতে দাবি করা হয়, পুলিশ এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন বিষয় নিয়ে যেভাবে কাজ করার কথা, কাজটি ঠিক সেভাবেই করা হয়েছে৷ যৌথ বিবৃতির কিছু অংশ উল্লেখ করে খবরও প্রকাশ করেছে বিবিসি৷ এবারের খবরের শিরোনাম, ‘‘ল্যাঙ্কাশায়ার ‘টেররিস্ট হাউজ' বিতর্ক ‘ভুল বানানের কারণে' নয়৷''

কিন্তু শিরোনামে ‘ভুল বানানের কারণে নয়' বলা হলেও খবরে কিন্তু তা স্বীকার বা অস্বীকার করা হয়নি৷ শুধু জানানো হয়েছে, বানান ভুলের কারণে ছেলেটিকে জেরা করার বিষয়টি বিবিসি সেই ছেলের এক বোনের কাছ থেকে জেনেছিল৷ মেয়েটি তাদের বলেছে, ‘‘এমন ঘটনা কোনো ৩০ বছর বয়সির সঙ্গেই হয়ত কল্পনা করা যায়, এই বয়সের কোনো শিশুর সঙ্গে নয়৷ এখানে শিক্ষকদের শুধু ওর বানান ভুল নিয়েই দুশ্চিন্তার কিছু থেকে থাকতে পারে, অন্য কিছু নিয়ে নয়৷ এই বাচ্চাটিকে তাঁদের এমন একটি অবস্থায় ফেলা উচিত হয়নি৷ ও এখন লিখতে ভয় পাচ্ছে, কল্পনা শক্তিকে ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছে৷'' নিরাপত্তার স্বার্থে শিশুটির পরিচয় গোপন রাখার প্রয়োজনের উল্লেখ করে এমন বক্তব্য দেয়া মেয়েটির নামও গোপন রেখেছে বিবিসি৷

কিন্তু যার বক্তব্যের কারণে এমন তোলপাড়, তার নাম প্রকাশ না করায় আলোচনা-সমালোচনা আরো বেড়েছে৷ নতুন করে যোগ হয়েছে সাংবাদিকতায় দায়িত্বশীলতার প্রশ্নটি৷ কেউ কেউ জানাচ্ছেন, ল্যাঙ্কাশায়ারের শিশুটিকে ওর এক চাচা প্রায়ই পেটায়৷ সে কারণেই ও লিখেছিল, ‘‘আমার চাচা যখন আমাকে মারে, তখন মনে হয় আমি সন্ত্রাসীদের বাড়িতে থাকি৷'' এই বক্তব্যও ঠিক কিনা তা এ মুহূর্তে ল্যাঙ্কাশায়ারের স্কুল কর্তুপক্ষ এবং পুলিশই বলতে পারবে৷ কিন্তু তদন্তাধীন কোনো বিষয় সম্পর্কে খোলাখুলিভাবে কিছু বলতে কোনো দেশের পুলিশই বাধ্য নয় এবং তা বলা অনেক ক্ষেত্রে যথার্থ দায়ীত্বশীলতাও নয়৷ অবশ্য ওই শিশু বা ওর পরিবারের কোনো প্রাপ্ত বয়স্ক সদস্য এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সংবাদমাধ্যমও নিশ্চয়ই বিষয়টি যাচাই করে আবার খবর প্রকাশ করতে পারে৷

বিবিসি কি সব পক্ষের বক্তব্য নিয়ে পুরো বিষয়টি ভালোভাবে যাচাই না করেই খবর প্রকাশ করেছিল? অনেকের সেরকমই ধারণা৷ তাই এখন যেভাবে পুলিশ ও স্কুল কর্তুপক্ষের বক্তব্য তুলে ধরে নতুন করে আগের খবরই প্রকাশ করা হচ্ছে, তার সমালোচনাতেও মুখর অনেকে৷ কেউ কেউ বলছেন, পুরো বিষয়টিতে এখনো রং চড়ানো হচ্ছে৷

সাংবাদিকদের কি সব পক্ষের বক্তব্য না জেনে খবর প্রকাশ করা উচিত? মন্তব্য জানান নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান