চোরাকারবারিদের পথ ধরে আসছেন শরণার্থীরা
ভূমধ্যসাগর পার হওয়ার ঝুঁকি না নিয়ে ক্রমেই আরো বেশি উদ্বাস্তু সীমান্তের এভ্রস নদী পার হয়ে তুরস্ক থেকে গ্রিসে আসছেন৷ কিন্তু এ পথেও বিপদ কিছু কম নয়৷
সীমান্ত বলতে এভ্রস নদী
মাত্র পাঁচ থেকে ছ’মিনিটের মধ্যে এভ্রস নদী পার হওয়া যায়৷ নদী ছোট হলেও তাতে স্রোতের কিছু কমতি নেই৷ এককালে স্মাগলাররা এই পথ দিয়ে মাল পাচার করতো৷ উদ্বাস্তুরা সে পথ ধরার পর থেকে এই রুটে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে৷
দু’দেশের সেন্ট্রি টাওয়ার
সীমান্তে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষীদের একাধিক সেন্ট্রি টাওয়ার খাড়া রয়েছে৷ দৃশ্যত তা সত্ত্বেও উদ্বাস্তুরা এই পথ দিয়ে গ্রিসে ঢোকার চেষ্টা করে চলেছেন৷ জার্মান ‘স্পিগেল’ পত্রিকার বিবরণ অনুযায়ী, তুরস্ক জ্ঞাতসারে উদ্বাস্তুদের এই নতুন পথ ধরে ইউরোপে আসতে দিচ্ছে৷ এমনকি গ্রিসের দু’জন সৈন্য ভুলক্রমে সীমান্ত অতিক্রম করলে তুরস্কে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ তারপর থেকে গ্রিস নীরব রয়েছে৷
এভ্রস পার হওয়ার পর
ভূমধ্যসাগর দিয়ে এলে গ্রিসের কোনো দ্বীপে ১৫,০০০-এর বেশি অধিবাসী সম্বলিত কোনো উদ্বাস্তু শিবিরে আশ্রয় নিতে হয় – তারপরেও তুরস্কে ফেরত পাঠানোর ভয় থাকে৷ এভ্রস রুট দিয়ে এলে সেখান থেকে বিনা বাধায় দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করা যায়৷
রেললাইন ধরে হেঁটে পাইস শহর অভিমুখে
এভ্রস উদ্বাস্তুদের গ্রিসে ঢোকার পর রেজিস্ট্রি করা হয় ও গ্রিসে অবস্থানের জন্য তিন মাসের ভিসা দেওয়া হয়৷ শুধু এপ্রিল মাসেই ২,৯০০ উদ্বাস্তু এভ্রস হয়ে গ্রিসে ঢুকেছেন৷ গোটা ২০১৭ সালেই এসেছিল মাত্র ১,৪৫০ জন৷
রেল স্টেশনে বিশ্রাম
পাইস শহরটি এভ্রস নদী থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে৷ উদ্বাস্তুরা এখানে খানিকটা জিরিয়ে নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করেন৷ বিশেষ করে শিশুরা পথের কষ্ট আর অভাব-অনটনে কাহিল হয়ে পড়ে৷
নি ভিসা শহরের কাছে পুলিশের অপেক্ষায়
এখান থেকে পুলিশ উদ্বাস্তুদের প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাবে৷ উদ্বাস্তুদের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তাতে স্থানীয় কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন৷ সিরিয়া বা ইরাক যুদ্ধের তীব্রতা বাড়লে এভাবেই উদ্বাস্তুদের আগমন বাড়ে৷
পুলিশের গাড়িতে চড়ে প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে
উদ্বাস্তুদের ফিলাকিও শহরে অবস্থিত প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷ তবে সেখানেও কর্মকর্তারা বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুর আগমন সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন৷
কাঁটাতারের বেড়ার পিছনে
ফিলাকিও-র প্রাথমিক রেজিস্ট্রেশন কেন্দ্র দেখলে মন খুশি না হওয়ারই কথা৷ উদ্বাস্তুদের আগমন বাড়ার ফলে জায়গা ও পর্যাপ্ত কর্মকর্তার অভাব৷ এভ্রস রুট আপাতত সীমান্ত নিরাপত্তা সম্পর্কে ইইউ আর তুরস্কের চুক্তির আওতায় পড়ে না৷ এর ফলে উদ্বাস্তুরা শীঘ্রই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পেয়ে যান৷
বাসে চড়ে বড় শহরে
ফিলাকিও-য় রেজিস্ট্রি করার অল্প পরেই উদ্বাস্তুদের বাসে করে এথেন্স বা থেসালোনিকিতে নিয়ে যাওয়া হয়৷ কিন্তু সেখানেও উদ্বাস্তু শিবিরগুলিতে তিলধারণের জায়গা নেই, কর্মকর্তারাও ব্যতিব্যস্ত৷