চিলির ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১০শনিবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪০০ পেরিয়ে গেছে৷ চিলির প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ কোন না কোন ভাবে এই বিপর্যয়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচেলেট৷ তাঁর মতে, প্রকৃত চিত্র বুঝে উঠতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে৷ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পুনর্গঠন করতে বিশাল উদ্যোগ ও অর্থের প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ এক বিশেষজ্ঞের মতে, অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দেড় থেকে তিন হাজার কোটি ডলার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে৷ দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিত রাষ্ট্র চিলির জন্য এটা একটা বড় ধাক্কা৷
প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে তুলে রবিবার উদ্ধারকার্য পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে৷ ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে কনসেপসিয়ন শহরে ধ্বংসলীলা সবচেয়ে বেশী টের পাওয়া যাচ্ছে৷ সেখানে এক বহুতল আবাসন ভেঙে পড়ার পর প্রায় ১০০ মানুষ জীবিত অবস্থায় ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে আছে৷ দমকল কর্মীরা সারা রাত ধরে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন৷ কিন্তু জ্বালানির অভাবের কারণে তাদের যন্ত্রপাতি পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না৷ তাছাড়া পানীয় জলের অভাবও একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ টেলিভিশনের পর্দায় ভূমিকম্প বিধ্বস্ত এলাকায় ভাঙা গাড়ি, ছিঁড়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার, আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে৷ অরাজকতার সুযোগ নিয়ে কিছু মানুষ মরিয়া হয়ে দোকান-বাজার ভেঙে লুটপাট করতে শুরু করেছে৷ পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে তাদের থামানোর চেষ্টা করেছে৷ খাদ্য ও পানীয়র যোগান বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় এমন ঘটনা ঘটছে৷
রবিবার ভোরে রাজধানী সান্তিয়াগো সহ বেশ কিছু এলাকায় এক শক্তিশালী কম্পনের ফলে ঘরবাড়ি আবার কেঁপে ওঠে৷ আরও কম্পনের আশঙ্কায় কনসেপসিয়ন শহরে হাজার-হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে তাঁবু বা অস্থায়ী আস্তানায় রাত কাটাচ্ছেন৷
চিলির ভূমিকম্পের পর গোটা প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল জুড়ে সুনামির যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল, তা পুরোপুরি কেটে গেছে৷ শুধুমাত্র চিলির হুয়ান ফ্যার্নান্দেজ দ্বীপে সুনামির ফলে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে৷ সেখানে কমপক্ষে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন, সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই