1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চিজের মধ্যে আস্ত ক্যামেরা!

২৮ নভেম্বর ২০১৯

গতানুগতিক জীবনধারার বাইরে ভাবনাচিন্তার ক্ষমতা, প্রতিভা বা সাহস ক'জনের রয়েছে? যেমন এক ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার অদ্ভুত, অপ্রচলিত উপকরণ কাজে লাগিয়ে ক্যামেরা তৈরি করে চলেছেন এবং সেই ক্যামেরা দিয়ে ছবিও তুলছেন৷

https://p.dw.com/p/3Tre1
ছবি: DW

ব্রেন্ডন ব্যারি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ পশ্চিমে এক্সেটার শহরে ফটোগ্রাফির ক্লাস নেন৷ মূল ছবির চেয়েও তার নেপথ্যের প্রক্রিয়া তাঁর কাছে বেশি আকর্ষণীয়৷ তাই তিনি নিজেই ক্যামেরা তৈরি করেন৷ নানা প্রচলিত ও অদ্ভুত উপকরণ ব্যবহার করেন তিনি৷ চিজ দিয়েও আস্ত একটি ক্যামেরা তৈরি করেছেন তিনি! এমন ভাবনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ক্যামেরা ও তার কর্মক্ষমতা সম্পর্কে মানুষের বদ্ধমূল ধারণা নিয়ে খেলতে আমার ভালো লাগে৷ এক টুকরো চিজ বা অন্য কোনো অপ্রত্যাশিত উপকরণ দিয়ে ক্যামেরা তৈরি করলে মানুষ সেটি এবং সেই ক্যামেরা দিয়ে তোলা ছবি দেখে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া দেখায়৷’’

ক্যামেরা বানানো তার শখ!

এমন ক্যামেরা তৈরির কাজ কিন্তু বিস্ময়কর রকমের সহজ৷ তবে গন্ধ থেকে যায়৷ লাইট সেনসিটিভ পেপার রাখার স্ট্যান্ড শেষ পর্যন্ত ছিদ্রে ভরা একটি চিজের সঙ্গে লাগিয়ে দেওয়া হলো৷ অন্য প্রান্তে একটি লেন্স বসালেই কাজ শেষ৷ সেই লেন্সের ভিতর দিয়ে আসা আলো ফটো পেপারের উপর নিক্ষেপ করতে হয়৷ তারপর ডেভেলপিং প্রক্রিয়া শুরুর পালা৷

ক্যামেরা তৈরির কাজ শুরু হবার দুই ঘণ্টা পর চিজের ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার পালা৷ ব্রেন্ডন পুরানো পোলারয়ে়ড ফিল্ম ব্যবহার করেন, যেগুলি নিজে থেকেই ডেভেলপিং-এর কাজ সেরে ফেলে৷ তিনি বলেন, ‘‘এই ফিল্ম মান্ধাতার আমলের৷ বছর দশেক আগেই এগুলির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে৷ সে সময়ে আমি বেশ কিছু ফিল্ম ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলাম৷ তাই সর্বত্র তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷’’

লেগো ক্যামেরা, অ্যাকর্ডিয়ন ক্যামেরা, লাকড়ির ক্যামেরা – এমন আরো কত কিছুই যে তিনি সৃষ্টি করেছেন! লাগোয়া ডার্করুমসহ ক্যারাভ্যান ক্যামেরাও রয়েছে৷ সেটি নিয়ে ব্রেন্ডন গ্রামাঞ্চলে বেড়াতে বেড়িয়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘ক্যারাভ্যানের আইডিয়ার পেছনে আমার এক ভাবনা ছিল৷ মনে হলো আমি নিজে ডার্করুমসহ ক্যামেরার মধ্যে থাকলে এবং নীচে চাকা লাগানো থাকলে আমি সেগুলি নিয়ে যে-কোনো জায়গায় যেতে পারি৷ স্টুডিওর মধ্যে আবদ্ধ না থেকে যে-কোনো জায়গাকেই স্টুডিও করে তুলতে পারি৷’’

ক্যারাভ্যান ক্যামেরা দিয়ে ফটো সেশনের আগে প্রস্তুতির শেষ কাজগুলি সেরে ফেলতে হয়৷ ব্রেন্ডন বলেন, ‘‘কয়েক মুহূর্ত পর আমি আলো নিভিয়ে দেবো, লেন্সের মুখ বন্ধ করে দেবো এবং তারপর ঘন অন্ধকারে একটি বোর্ডের উপর ফটোগ্রাফিক পেপার লাগিয়ে দেবো৷ তারপর চট করে লেন্স খুলে ও বন্ধ করে একটি এক্সপোজার সৃষ্টি করবো৷’’

ডেভেলপিং প্রক্রিয়ার প্রথম কাজ তিনি ক্যারাভ্যানের মধ্যেই করেন৷ বাকিটা বাইরে হয়৷ এমনকি টেলিফোন বুথও ক্যামেরা হয়ে উঠতে পারে৷ অন্য অনেক কিছু নিয়ে ব্র্যান্ডনের এমন পরিকল্পনা রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘একদিন আমি নৌকা দিয়ে ক্যামেরা তৈরি করতে চাই৷ ডবলডেকার বাস নিয়েও পরিকল্পনা রয়েছে৷ সাবমেরিনের পেরিস্কোপকে ক্যামেরা হিসেবে ব্যবহার করলেও দারুণ হবে৷’’

ক্যামেরা নিয়ে ব্রেন্ডন ব্যারির আইডিয়াগুলি অদ্ভুত মনে হতে পারে৷ কিন্তু সে সব ফটোগ্রাফির জগতকে নতুন করে উন্মোচন করে৷ এবং অসাধারণ ফটোও সৃষ্টি হয়৷

ইয়েন্স ফন লার্খার/এসবি