চাকরি হারিয়ে বিপর্যস্ত পোশাক শ্রমিকদের কথা
করোনা মহামারিতে অর্ডার কমে যাওয়াসহ নানা কারণ দেখিয়ে ছাঁটাই করা হচ্ছে পোশাক শ্রমিকদের৷ ফলে তাদের ভবিষ্যৎ হয়ে পড়েছে অনিশ্চিত৷ ছবিঘরে থাকছে এরকম কয়েকজন পোশাক শ্রমিকের কথা৷
অর্ধেক বেতন দিয়ে বিদায়
৩৫ বছর বয়সি তাসলিমা আক্তার ঢাকার একটি কারখানায় সাত বছর কাজ করেছেন ‘ফিনিশিং কোয়ালিটি’ হিসেবে৷ তার মাসিক বেতন ছিল ৭,৭৪৫ টাকা৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ‘‘মার্চ পর্যন্ত এই বেতনে কাজ করার পর এপ্রিল মাসে আমাকে অর্ধেক বেতন দিয়ে চাকরিচ্যূত করা হয়৷ এখন অন্য কোনো চাকরি পাওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷’’ তাসলিমার দশজনের সংসার এই বেতনের উপর নির্ভরশীল৷
মার্চেই শেষ চাকরি
১৭ বছর বয়সি সোনিয়া পোশাক কারখানায় কাজ করতেন ফিনিশিং হেলপার হিসেবে৷ মাসে বেতন পেতেন ৫,৩০০ টাকা৷ তিনি বলেন, ‘‘মার্চ পর্যন্ত কাজ করার পর চাকরি হারিয়েছি৷ করোনার জন্য এখন অন্য কোনো চাকরি পাওয়াও অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷’’
করোনার কারণে মিলছে না চাকরি
৪৫ বছর বয়সি খোদেজা ফিনিশিং হেলপার হিসেবে ৯ বছর কাজ করেছেন৷ প্রতি মাসে ৭,৬০০ টাকা মাসিক বেতনে তিনি কাজ করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘মার্চ মাস থেকে বেকার৷ করোনার কারণে এখন অন্য কোথাও চাকুরিও পাওয়া যাচ্ছে না৷’’
শ্রমিক ইউনিয়নের সহায়তা
১৯ বছর বয়সি সীমা আক্তার কাজ করেছেন হেলপার হিসেবে৷ প্রতি মাসে ৮,৩০০ টাকা বেতন ছিল তার৷ করোনার কারণে হঠাৎই চাকুরিচ্যুত করা হয় তাকে৷ পরবর্তীতে অবশ্য শ্রমিক ইউনিয়নের সহায়তায় চাকুরি ফেরতও পেয়েছেন তিনি৷
রিয়াজুলের বেকার জীবন
পোশাক শ্রমিক রিয়াজুল ইসলামের বয়স ৩৩ বছর৷ দুই বছর বেশি সময় কাজ করেছেন ঢাকার একটি পোশাক কারখানায়৷ বর্তমানে তিনি চাকরিচ্যূত, করোনার কারণে তিনি কোথাও চাকরি পাচ্ছেন না৷
এক মাসের বেতন দিয়ে বিদায়
মশিউর রহমানের বয়স ২৪ বছর৷ ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় জ্যাকার অপারেটর হিসেবে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় চাকুরি করেছেন৷ মাসে বেতন পেতেন ১৩,৫০০ টাকা৷ একমাসের বেসিক দিয়ে মে মাসে তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়৷
করোনায় মেলে না চাকরি
স্ত্রীসহ ঢাকায় থাকেন ৩১ বছর বয়সি পোশাক শ্রমিক এরশাদুল৷ একটি পোশাক কারখানায় তার মাসিক বেতন ছিল ১০,১০০ টাকা৷ বর্তমানে তিনি চাকরিচ্যূত, করোনার কারণে তিনি কোথাও চাকরি পাচ্ছেন না৷
বকেয়া বেতনের দাবিতে কর্মবিরতি
৪ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কর্মবিরতি পালন করছেন শ্রমিকরা৷ তারা দাবি করেছেন, মালিকপক্ষ তাদের বেতন না দিয়ে চাকরি থেকে ছাঁটাই করতে চায়৷ তবে বকেয়া বেতন ছাড়া চাকরি থেকে বিদায় নিতে রাজি নন কেউ৷