চলতি সপ্তাহেই জার্মানিতে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে
১৮ অক্টোবর ২০২১ফেডারেল জার্মানির ইতিহাসে বহু দশক পর তিন দলের জোট সরকার গড়ার উদ্যোগ অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে৷ শুক্রবার সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি, পরিবেশবাদী সবুজ দল ও উদারপন্থি এফডিপি দলের নেতারা প্রাথমিক আলোচনা সম্পর্কে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট গঠন সংক্রান্ত আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন৷ সেই ঘোযণার ঠিক পরেই এসপিডি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বমণ্ডলী সর্বসম্মতিক্রমে সেই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে৷ রবিবার সবুজ দলের সম্মেলনেও সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়৷ সোমবার এফডিপি দলও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেবার পর নতুন জোট সরকারের রূপরেখা স্থির করতে দ্রুত আলোচনা শুরু হবার কথা৷ সে ক্ষেত্রে বড়দিনের আগেই চ্যান্সেলর হিসেবে সরকার গঠনের আশা করছেন এসপিডি নেতা ওলাফ শলৎস৷
সম্ভাব্য জোট সরকারের দুই শরিক – সবুজ দল ও এফডিপি আগামী সরকারের অংশ হতে কতটা বদ্ধপরিকর, নেতাদের একটি মন্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷ এক সপ্তাহ আগে সবুজ দলের নেতা রোব্যার্ট হাবেক বলেছিলেন, ‘ব্যর্থতা কোনো বিকল্প হতে পারে না'৷ এবার এফডিপি নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারও সেই একই মন্তব্য করলেন৷
বিরোধী আসনে বসে সরকারের সমালোচনা ও অনড় আদর্শগত অবস্থান আঁকড়ে ধরে দাবির পক্ষে সোচ্চার হওয়ার তুলনায় জোট সরকারের অংশ হিসেবে যতটা সম্ভব কাজ করে দেখানোর সুযোগের সদ্ব্যাবহার করতে চাইছে এফডিপি ও সবুজ দল৷ সেইসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের উপর নিয়ন্ত্রণও তাদের লক্ষ্য৷ তার বদলে বেশ কিছু নীতির প্রশ্নে আপোশ মানতেও প্রস্তুত দলের নেতারা৷ এসপিডি দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার পর যে খসড়ার ভিত্তিতে কোয়ালিশন গড়ার আলোচনায় রাজি হয়েছে এই দুই দল, তাতে এমন অনেক দাবির উল্লেখ না থাকায় তৃণমূল স্তরে কিছুটা অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে৷ তবে নেতৃত্বের সরাসরি বিরোধিতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না৷
তিন দলের নেতারা প্রাথমিক আলোচনার সময়ে যে পারস্পরিক আস্থা ও শ্রদ্ধাবোধ দেখিয়ে এসেছেন এবং গোপনীয়তা বজায় রেখেছেন, তা দলমতনির্বিশেষে জার্মানির রাজনৈতিক মহলে সম্ভ্রম আদায় করেছে৷ তবে মন্ত্রণালয় বণ্টনের প্রশ্নে এফডিপি ও সবুজ দলের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে৷ এফডিপি দল অর্থ মন্ত্রণালয়ের জন্য তাদের শীর্ষ নেতা লিন্ডনারকেই সবচেয়ে উপযুক্ত হিসেবে তুলে ধরছে৷ সবুজ দল কোয়ালিশন গঠনের প্রক্রিয়ার আগেই পদ নিয়ে এমন দাবিদাওয়া সম্পর্কে বিরক্তি প্রকাশ করেছে৷
ভবিষ্যৎ অর্থমন্ত্রীর পদ ছাড়াও এই মন্ত্রণালয় কীভাবে তিন দলের সব মৌলিক নীতি কার্যকর করার অর্থের জোগান দেবে সে বিষয়েও নানা প্রশ্ন উঠছে৷ বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রেখে ও করের বোঝা না বাড়িয়ে কীভাবে এমন অসাধ্যসাধন করা সম্ভব, সে বিষয়ে সংশয় দেখা যাচ্ছে৷ রবিবার রাতে এসপিডি নেতা শলৎস এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এমন সংশয় দূর করার চেষ্টা করেছেন৷ তাঁর মতে, দেশের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে বিশাল কর্মযজ্ঞের জন্য অবশ্যই অর্থের প্রয়োজন হবে৷ তবে সে ক্ষেত্রে শুধু সরকার নয়, বেসরকারি উদ্যোগেরও বড় অংশগ্রহণ থাকবে৷ দুইয়ের মধ্যে সঠিক ভারসাম্যের ভিত্তিতেই এমন চ্যালেঞ্জ সামলানো সম্ভব বলে শলৎস মনে করেন৷
এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)