ঘুরে আসুন টাঙ্গুয়ার হাওর
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে চাইলে যেতে পারেন সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে৷ ভারতের কোলঘেঁষে অবস্থিত এই হাওর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ‘রামসার’ সাইট৷
পাখি আর মাছের অভয়ারণ্য
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলায় টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান৷ ছোট-বড় মিলিয়ে ১২০টি বিল আছে এ হাওরে৷ পরিযায়ী পাখি আর মাছের অভয়ারণ্য বিস্তীর্ণ এ জলাশয় জুড়ে৷ বর্ষায় পুরোটাই পানিতে ডুবে থাকলেও শীতে পানি কমতে থাকে৷ ১৪০টির বেশি প্রজাতির স্বাদু পানির মাছ আছে সেখানে৷
পাখিদের মিলনমেলা
শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ হাওরে বসে পাখিদের মিলনমেলা৷ তবে সম্ভবত ফেব্রুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি পাখির দেখা মেলে৷ প্রতি বছর প্রায় ২০০ প্রজাতির পরিযায়ী পাখির সমাগম ঘটে৷ এছাড়া হাওরে বাস করে প্রায় ২০৮ প্রজাতির পাখি, ১৫০ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ, ৩৪ প্রজাতির সরিসৃপ ও ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণী৷
আছে দু’শ’ প্রজাতির গাছ
সারি সারি হিজল-করচ শোভিত টাঙ্গুয়ার হাওরে দু’শ’রও বেশি প্রজাতির গাছ আছে৷ যেমন নলখাগড়া, দুধিলতা, নীল শাপলা, পানিফল, শোলা, হেলঞ্চা, শতমূলি, শীতলপাটি, স্বর্ণলতা, বনতুলসী ইত্যাদি৷
যেভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে সুনামগঞ্জ যেতে হবে৷ শহরের আগে অবস্থিত সুরমা সেতু থেকে লেগুনা কিংবা মোটরবাইকে যেতে হবে তাহিরপুর কিংবা সোলেমানপুর৷ এরপর সোলেমানপুর থেকে ইঞ্জিনের নৌকা করে টাঙ্গুয়ার হাওরে যাওয়া যাবে৷ হাওরে ঘোরার জন্যও আছে ইঞ্জিনের নৌকা৷
থাকার ব্যবস্থা
সুনামগঞ্জ জেলা তথ্য বাতায়নের ওয়েবসাইট বলছে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সেখানে রাতে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই৷ তবে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে টেকেরঘাটের চুনাপাথর খনি প্রকল্পের রেস্ট হাউজে অবস্থান করা যেতে পারে৷ তবে চাইলে নৌকায়ও রাত কাটাতে পারেন৷
সতর্কতা
শীতকালে গেলে হাওরে পানি কম থাকায় মশা ও পোকা মাকড়ের উপদ্রব বাড়ে৷ তখন সঙ্গে করে পতঙ্গনাশক ক্রিম, স্প্রে, জরুরি ওষুধ ইত্যাদি নিয়ে যাওয়া ভালো৷
আহ, কী শান্তি!
বাংলাদেশের দ্বিতীয় ‘রামসার সাইট’-এর স্বীকৃতি পাওয়া টাঙ্গুয়ার হাওরে আপনি চাইলে এভাবে আরাম করতে পারবেন৷ রামসার হচ্ছে ইরানের একটি শহর, যেখানে ১৯৭১ সালে বিশ্বব্যাপী জীববৈচিত্র্য রক্ষায় একটি কনভেশন স্বাক্ষরিত হয়েছিল৷
হাওর এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা
স্থানীয় শিশুরা এভাবে নৌকা নিয়ে ঘোরে৷ তারা পর্যটকদের হাওর এলাকা ঘুরিয়ে দেখায়৷ এছাড়া মাছ ধরে জীবন চলে টাঙ্গুয়ার হাওরবাসীদের৷
ওপাশে ভারত
দূরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া জৈন্তা পাহাড় দেখা যাচ্ছে৷