জাতিসংঘে গেলেন প্রধানমন্ত্রী
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩বিশ্লেষকরা মনে করছেন এসব আলোচনা বাংলাদেশের সংকটময় রাজনীতি ও বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা ছেড়েছেন রবিবার সন্ধ্যায়৷ এবার তাঁর সফরসঙ্গী ১৪০ জন৷ এই দলে মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী এবং সুশীল সমাজের সদস্যরা রয়েছেন৷ রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা এম গিয়াসউদ্দিন৷
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে৷ আর সেদিনই সন্ধ্যায় একান্ত বৈঠকের কথা রয়েছে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুনের সঙ্গে৷ ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর৷ তবে সেটা কোনদিন হবে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ডয়চে ভেলকে বলেন এই সফরে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত বৈঠক বাংলাদেশের সংকটময় রাজনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ জাতিসংঘ মহাসচিব এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন৷ তিনি তাঁর টেলিফোন সংলাপে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন৷ আর সংলাপ বা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট দূর করে সমঝোতার কথা বলেছেন৷ অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন জাতিসংঘ মহাসচিব নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর টেলিফোন সংলাপের ‘ফলো-আপ' জানতে চাইবেন৷ জানতে চাইবেন নির্বাচনে সবদলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে৷
অন্যদিকে নির্বাচনের আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকও খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ গত মে মাসে ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল৷ তবে প্রধানমন্ত্রী সময়ের অভাবে সে আমন্ত্রণ রক্ষা করতে পারেননি৷ অধ্যাপক ইমতিয়াজ বলেন বর্তমান সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বেশ কিছু চুক্তি হয়েছে৷ সেসব চুক্তির বাস্তবায়ন চায় বাংলাদেশ৷ কারণ কোনো চুক্তিই বাস্তবায়িত না হলে তা আগামী নির্বাচনে বর্তমান সরকারের জন্য হবে বড় অস্বস্তির বিষয়৷ মমতার কারণে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি এই সরকারের আমলে যে হচ্ছে না তা নিশ্চিত৷ তবুও সীমান্ত চুক্তি যদি কার্যকর হয় তাহলেও হয়তো মুখরক্ষা হবে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়তো তেমন একটা কিছুই চাইবেন৷ অন্যদিকে ট্রানজিট ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই ভারতের প্রধানমন্ত্রীও চাইবেন পুরোপুরি ট্রানজিট সুবিধা৷
তবে সব মিলিয়ে এই সফরে দুটি বৈঠকের ফল কি হবে তা আগেভাগে আঁচ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ৷ কারণ আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকারের যে অবস্থান তার কোনো পরিবর্তন ঘটার ইঙ্গিত এখনো দেখা যায়নি৷ আর নির্বাচনের আগে ভারত ঘেঁষা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাইবে না সরকার৷
২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের পথে রওয়ানা হবেন বলে জানা গেছে৷