গাদ্দাফিপন্থী বন্দুকধারীদের দখলে ত্রিপোলি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১১ত্রিপোলির বর্তমান অবস্থা
মুয়াম্মার আল-গাদ্দাফি'র সমর্থকদের দখলে আছে ত্রিপোলিসহ লিবিয়ার পশ্চিমাঞ্চল৷ ৪০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এই শাসকের ছেলে সাইফ আল-ইসলাম গাদ্দাফি বুধবার দাবি করেন, সবকিছু স্বাভাবিক আছে৷ তিনি বলেন, বিভিন্ন বন্দর, স্কুল এবং বিমানবন্দর - সব খোলা আছে৷ পূর্বাঞ্চলে কিছু সমস্যা রয়েছে৷ তবে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত৷ সাইফ আল-ইসলাম এর বক্তব্যের সঙ্গে বাস্তব পরিস্থিতির অবশ্য মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ কেননা, রাজধানীর ত্রিপোলির রাস্তায় টহল দিচ্ছে গাদ্দাফিপন্থী বন্দুকধারীরা৷ বিদেশি সেনা ভাড়া করে সরকারবিরোধীদের দমনের চেষ্টা করছে সেদেশের শাসকগোষ্ঠী৷ তাসত্ত্বেও সরকার বিরোধী আন্দোলন মাথা চাড়া দিচ্ছে পশ্চিমের বিভিন্ন শহরে৷
পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, ত্রিপোলি কার্যত এক বন্ধ শহর৷ সরকার ইতিমধ্যে সবাইকে কাজে যোগ দিতে আহ্বান জানালেও তাতে খুব একটা সাড়া মিলছে না৷ রাজধানীর এক বাসিন্দা বিবিসিকে জানিয়েছেন, আমি আশা করছি কেউ কাজে যোগ দেবেনা৷ এটা হবে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ৷ আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য বাড়িতেই অবস্থান করবো৷ ত্রিপোলির অবস্থা যখন এমন, তখন সেদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর বেনগাজিতে উৎসব করছে সরকারবিরোধীরা৷ পূর্বাঞ্চলের বিক্ষোভকারীরা এবং গাদ্দাফির পক্ষ ত্যাগ করা সেনারা বৃহস্পতিবার রাজধানীর দিকে অগ্রসর হতে পারে৷ বলাবাহুল্য, গত সপ্তাহখানেক ধরে চলা এই গণআন্দোলনে কমপক্ষে ৩০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷
বিদেশিরা লিবিয়া ছাড়ছে
বিদেশিরা লিবিয়া ছাড়তে গিয়ে বেশ ভোগান্তিতে পড়ছে৷ ত্রিপোলির বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে৷ সেদেশ ত্যাগ করা এক মার্কিন নাগরিক ভিয়েনায় জানিয়েছেন, লিবিয়া ত্যাগের জন্য অসংখ্য মানুষ বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছে৷ পরিস্থিতি বেশ সঙ্গিন৷ এছাড়া বিভিন্ন দেশ উদ্যোগী হয়ে তাদের নাগরিকদের লিবিয়া ছাড়তে সহায়তা করছে৷ বাংলাদেশ সরকার প্রয়োজনে লিবিয়ায় অবস্থানরত ৫০ হাজার বাংলাদেশিকে সেদেশ থেকে সরিয়ে নেয়ার কথা বলেছে৷ ভারত লিবিয়ায় অবস্থানরত ১৮ হাজার ভারতীয়কে নিজদেশে ফিরিয়ে আনার কথা জানিয়েছে৷
পশ্চিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়া
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লিবিয়ার মানুষের এই দুর্ভোগের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন৷ জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন লিবিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আলোচনা চালাচ্ছে, বিশেষ করে সেদেশের উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়