গাড়ির কি আজকাল কোনো প্রয়োজন আছে?
শ’খানেক বছর ধরে বাস, ট্রেন আর গাড়ি ছাড়া বেঁচে থাকার কথা ভাবাই যেতো না৷ কিন্তু ই-মোবিলিটি আর স্বয়ংক্রিয় গাড়ির যুগে, যখন স্টিয়ারিংই উধাও হতে চলেছে, তখনও কি পেট্রোল আর ডিজেলের গাড়ি চলবে?
আগামীর পৃথিবী
২০০৮ সালের পর থেকে পৃথিবীতে গ্রামের চেয়ে শহরেই বেশি মানুষ বাস করছেন৷ গবেষকরা বলছেন, আগামীর শহরকে কার্বন-নিরপেক্ষ, জলবায়ু-সম্মত, ডিজিটাল ও স্বয়ংক্রিয় হতে হবে৷ নেটওয়ার্কিং আর শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে পরিবহণ আরো সাশ্রয়ী ও সুদক্ষ হয়ে উঠবে৷ যানবাহন ও যাতায়াত একটি পরিষেবায় পরিণত হবে৷ কারোর আর ব্যক্তিগতভাবে গাড়ি রাখার প্রয়োজন পড়বে না৷
‘স্মার্ট’ বা ‘ডিজিটাইজড’
ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেটওয়ার্কিংয়ের ফলে শহরের পরিবহণ প্রণালীগুলির সমন্বয় করা সম্ভব হবে৷ এর অর্থ, গাড়ি চলাচল অনুযায়ী ট্র্যাফিক লাইট নিজে থেকেই বদলে যাবে৷ সেন্সর আর ট্রান্সমিটার থাকার ফলে গাড়িগুলো নিজেরাই ধাক্কা লাগা রোধ করতে পারবে৷ গাড়ির সার্ভিসিং, রক্ষণাবেক্ষণ, বীমা অথবা পার্কিং মিটারের আর কোনো প্রয়োজন পড়বে না৷
স্বয়ংচালিত গাড়ি?
সত্যিই কি অ্যামাজোন, গুগল ইত্যাদি কোম্পানিগুলি ভবিষ্যতের গাড়ি নির্মাতায় পরিণত হবে আর ড্রাইভাররা পেছনের সীটে বসে থাকবেন? তবে যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্বয়ংচালিত গাড়ি এক মহিলা সাইকেল আরোহীকে চাপা দেবার পর উবার স্বয়ংচালিত গাড়ি বন্ধ রেখেছে৷
স্মার্টফোন থাকলেই হলো
অ্যাপের মাধ্যমে ট্যাক্সি ডাকুন৷ সরকারি পরিবহণও ক্রমেই আরো বেশি ইন্টারনেটনির্ভর হয়ে উঠছে৷ খবরাখবর তো বটেই, এমনকি স্মার্টফোনের মাধ্যমে বাসের টিকিট কিনতেও কোনো অসুবিধা নেই৷
পার্সেল আসবে ইলেকট্রিক ভ্যানে
ডয়চে পোস্ট (ডিএইচএল) সংস্থা আখেন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে মিলে কার্বনমুক্ত ‘স্ট্রিট স্কুটার’ চালু করেছে, যা কিনা নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলে৷ বিদ্যুৎচালিত গাড়ির বিদ্যুৎ কোথা থেকে আসে, ভবিষ্যতে সেটাও একটা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াবে৷
দেখতে স্মার্ট কারের মতো হলেও, আসলে স্মার্ট বাইক
চার চাকার ই-বাইক, নাম পডরাইড৷ এক মিটার আশি সেন্টিমিটার লম্বা৷ গাড়ির মতোই ভেতরে আরামে বসা যায়৷ হিটিং আছে৷ উঁচু-নীচু কিংবা এবড়ো-থেবড়ো রাস্তায় চলতে পারে – অবশ্যই একটি ইলেকট্রিক মোটরের সাহায্যে৷
স্বয়ংচালিত উড়ন্ত গাড়ি?
ডজন খানেক কোম্পানি এ ধরনের গাড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত, তাদের মধ্যে এয়ারবাসও রয়েছে, যাদের ‘ভাহানা’ নামের ফ্লাইং কারটিকে ছবিতে দেখা যাচ্ছে৷ এই বাহনে চড়ে নাকি যাত্রীবাহী জেটের মতোই প্রায় ন’হাজার মিটার উচ্চতায় ঘণ্টায় ৪৮০ কিলোমিটার গতিতে উড়ে যাওয়া যাবে – ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঠানো সংকেতের মাধ্যমে৷ তবে মাঝেমধ্যে ব্যাটারি রিচার্জ করার জন্য মাটিতে নামতে হবে৷
ই-বিমান
জার্মানির বাওহাউস বিমানচালনা সমিতির ‘সিই’ বিমানটি চলবে দু’টি বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে৷ ভবিষ্যতের বিমানবন্দরে নাকি বার্লিন ও অপরাপর রেলওয়ে স্টেশনের মতো একাধিক লেভেলে প্লেন উঠবে-নামবে বা ব্যাটারি চার্জ করা হবে৷ ওঠা-নামা হবে স্বভাবতই সবচেয়ে ওপরের লেভেলে!