1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গরীবের কথা বলে নোবেল অভিজিতের

১৪ অক্টোবর ২০১৯

বিশ্বে দারিদ্র্য মোকাবিলা করার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করে অর্থনীতিতে নোবেল জিতলেন অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্তু ঠিক কী তাঁর এই পদ্ধতি?

https://p.dw.com/p/3RFth
Abhijit Banerjee
অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ছবি: DW/Uhlig

অর্থনীতিবিদ বাবা-মায়ের সন্তান অভিজিৎ প্রথমে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে স্নাতকস্তরে ও পরে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে নিয়ে পড়াশোনা করেন৷

এরপর উচ্চতর গবেষণার উদ্দেশে পাড়ি দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে৷ এর আগে, ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিকাল ইন্সটিটিউটে পড়তে গিয়ে মাঝপথে ছেড়ে দেন পড়া৷ কেন? গণিতের ভাষায় অর্থনীতি বুঝতে গিয়ে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে অভিজিতের বাস্তব মনে হয়নি৷ হার্ভার্ডে পড়তে এসে শুরু করলেন সমাজবিজ্ঞানের সমান্তরালে অর্থনীতিকে দেখতে শেখার অভ্যাস৷

এরই ফলস্বরূপ ২০০৩ সালে এমআইটি অর্থাৎ, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে ‘আবদুল লতিফ জামিল পভার্টি অ্যাকশন ল্যাব' বা ‘জেপ্যাল' গঠন৷ এই কাজে অভিজিতের সাথে ছিলেন তাঁর স্ত্রী, এসথার ডুফলো ও সেনথিল মুলাইনাথান৷ উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে অভিজিতের সাথে যুগ্মভাবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এসথার ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইকেল ক্রেমার৷

জেপ্যাল ছাড়াও, অভিজিৎ এখন এমআইটিতে ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর অফ ইকোনমিক্স হিসাবে কর্মরত৷

কীসের জন্য এই ‘ল্যাব'?

জেপ্যালের কাজ উন্নতশীল দেশগুলিতে মানবজীবনের মানোন্নয়ন নিয়ে গবেষণা৷ গবেষণা ছাড়া, জেপ্যালের কাজের মধ্যে রয়েছে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির আর্থিক নীতিগঠনে সহায়তা প্রদান, আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা ও ক্ষমতায়নের নানা কর্মসূচীও৷

২০০৮ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সমকালীন বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতিবিদদের একটি সমীক্ষা চালায়৷ সেখানে দেখা যায়, সব পরিমাপেই তালিকার শীর্ষে রয়েছেন অভিজিৎ, এসথার ও তাঁদের চিন্তার ফসল ‘জেপ্যাল'৷ বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ডেভিড রোমার সেখানে বলেন. ‘‘বর্তমান অর্থনীতির কাছে এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন দারিদ্রের৷ কেন বিশ্বের এত এত মানুষ দরিদ্র? আর অর্থনীতির এখানে আসলেই কী করণীয়? জেপ্যালের কাজের সাহায্যে এখন আমরা আস্তে আস্তে এই প্রশ্নগুলির ধারণা পাচ্ছি৷''

উন্নতশীল বিশ্বে দারিদ্র ঠেকাতে চালু রয়েছে একাধিক সহায়তা প্রকল্প৷ কিন্তু বাস্তবে কতটুকু সফল হচ্ছে এই প্রকল্পগুলি, তা পরীক্ষা করে জেপ্যাল৷ গত ১৬ বছর ধরে তাঁদের গবেষণা থেকে উঠে এসেছে বেশ কিছু যুগান্তকারী চিন্তাধারা, যার সাম্প্রতিকতম ফল ২০১৯ সালে প্রকাশিত অভিজিৎ ও এসথারের ‘হোয়াট দ্য কান্ট্রি নিডস নাও‘ শীর্ষক বইটি৷

ভারতের বর্তমান আর্থিক অবস্থা ও মন্দা থেকে উত্তরণের পরামর্শ রয়েছে সেখানে৷ উন্নতশীল বিশ্বে নাগরিকের খরচ প্রবণতার সহজ অথচ প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ করে ২০১১ সালে এসথার ও অভিজিৎ রচিত ‘পুওর ইকোনমিক্স' বইটি  ‘গোল্ডম্যান স্যাকস বিজনেস বুক অফ দ্য ইয়ার' পুরস্কার পায়৷

উল্লেখ্য, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেখানো সূত্রের ওপর ভিত্তি করেই ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে কংগ্রেস তাঁদের ‘ন্যায়' প্রকল্প গড়ে তোলে৷ বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক নীতির অন্যতম সমালোচক অভিজিৎ এর আগে নরেন্দ্র মোদীর ‘নোটবন্দি‘ বা ডিমনিটাইজেশনের কড়া সমালোচনা করেন৷

সোমবার নোবেল পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থা রয়াল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেসের ঘোষণার পর থেকে স্বাভাবিকভাবেই ভারতে নতুন করে আলোচনায় রয়েছেন চতুর্থ বাঙালি নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়৷

এসএস/কেএম (নিউইয়র্ক টাইমস)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান