1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গণতন্ত্র হত্যা দিবস বনাম বিএনপির মনের জ্বালা দিবস

হারুন উর রশীদ স্বপন
৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস' আর বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট বলছে ‘কালো দিবস'৷ তবে আওয়ামী লীগের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস' উদযাপনের দিনে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘‘এটি বিএনপির জ্বালা দিবস৷''

https://p.dw.com/p/3VVtF
Zusammenstoß von Polizei und linkem Parteibündnis in Dhaka, Bangladesch
বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীদের লাঠিপেটা করছে পুলিশছবি: bdnews24.com

বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে সোমবার দুপুরে পুলিশি হামলার শিকার হয়েছে৷ নারীসহ তাদের অন্তত ৫০ জন নেতা-কর্মী হামলায় আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ আর বিএনপিকে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচির অনুমতিই দেয়নি পুলিশ৷ পুলিশ বিএনপিকে রাস্তায় সমাবেশ করার অনুমতি না দিলেও বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ ঠিকই তাদের ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবসের' সমাবেশ করেছে৷
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘‘আমরা এই দিনটিকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস মনে করি৷ তাই গণতন্ত্র হত্যা দিবসে আমাদের আজ (সোমবার) কালো দিবসের কর্মসূচি ছিল৷ প্রতিবাদ সমাবেশ ছিল৷ কিন্তু সরকার সেই কর্মসূচি পালন করতে না দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, এটা আসলেই কালো দিবস৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হয়নি৷ নির্বাচন কমিশনও পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়নি৷ ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচন হয়ে  গেছে৷ নির্বাচন কমিশন বলেছে, বিরোধী দল যদি ইভিএম-এ নির্বাচনে রাজি হতো তাহলে এই ধরনের ঘটনা ঘটতো না৷''
তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে এখন মানুষকে কথাও বলতে দিচ্ছে না৷ মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই৷ সভা সমাবেশের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে৷ তাই গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই অধিকার ফিরে আসবে৷''
দুপুর দুইটায় বিএনপির সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল৷ পুলিশ সকাল থেকেই বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রাখে৷ তাই নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টন এলাকায় যেতেই পারেননি৷
দুপুরে সিপিবি'র নেতৃত্বে ৮টি বাম সংঠনের মোর্চা বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীরা প্রেসক্লাব থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালায়ে প্রতিবাদী শোভাযাত্রা নিয়ে যাওয়ার পথে হাইকোর্ট কদম ফোয়ারার কাছে প্রথমে পুলিশ ব্যারিকেডের মুখে পড়ে৷ ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যায় তারা৷ তবে মৎস ভবনের সামনে আবার পুলিশি বাধার মুখে পরে৷ তখন পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে৷ এসময় পুলিশের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়৷
বাম গণতাান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি রতন জানান, নারীসহ তাদের ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ নারী পুলিশ ছিল না৷ তাদের নারী নেতা-কর্মীদের স্পর্শকাতর জায়গায়ও আঘাত করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা ভোটডাকাতি করে ক্ষমতায় আছে, তার তো আমাদের দাবি মানবে না৷ আমরা ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকেই নতুন নির্বাচন দাবি করে আসছি৷ যারা সরকারকে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এনেছে তারাই এখন হামলা করে সরকারকে টিকিয়ে রাখতে চাইছে৷''

শামসুজ্জামান দুদু

মাহবুব উল আলম


তিনি বলেন, ‘‘এখন মানুষের ভোট দেয়ার অধিকারই কেড়ে নেয়া হয়েছে৷ তাই ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রতিবাদের অধিকারও কেড়ে নেয়া হচ্ছে৷''
এদিকে বিকেলে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবসের' সমাবেশ করেছে৷ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্রের জন্য নির্বাচন হয়েছে৷ এটা কালো দিবস হবে কেন? বিএনপি মহসাচিব ৩০ ডিসেম্বর সারাদিন বলেছেন ভোট সুষ্ঠু হয়েছে, ভোট ভালো হয়েছে৷ যখন বিএনপি'র লজ্জাজনক পরাজয় হলো, তখন উনি বলা শুরু করলেন ভোট কারচুপি হয়েছে৷ বিএনপি এখন যা বলছে, তা মনের জ্বালা থেকে বলছে৷ এটাকে কালো দিবস না বলে তারা যদি ‘মনের জ্বালা দিবস' বলতো তাহলে বেশি মানানসই হতো৷
এদিকে পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘অফিস খোলার দিন হওয়ায় জনদুর্ভোগ এড়াতেই বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি৷'' আর বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি ডিএমপির কোনো কর্মকর্তা৷
তবে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘‘এটা আমাদের কোনো বিষয় নয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়৷ বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দিলেই তো তারা জ্বালাওপোড়াও করে৷ গাড়ি ভাঙচুর করে৷ আওয়ামী লীগ সমাবেশ করেছে৷ আওয়ামী লীগ তো আর গাড়ি ভাঙচুর করে না৷''