কৃষিক্ষেত্রে নতুন ভাবনাচিন্তা
বিশ্বায়নের এই যুগে কৃষিক্ষেত্রের চরিত্র আমূল বদলে গেছে৷ বিপুল চাহিদা, উন্নত প্রযুক্তি, পরিবেশের উপর চাষবাসের প্রভাবের পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়ে গেছে নতুন ভাবনাচিন্তা৷
জনসংখ্যা ও বাড়তি চাহিদা
পৃথিবীর জনসংখ্যা বাড়ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে খাদ্যের চাহিদা৷ জাতিসংঘের অনুমান, পৃথিবীর বুকে ২০৫০ সালে ৯৭০ কোটি মানুষ বসবাস করবে৷ তাদের জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করতে হলে চাই টেকসই কৃষি উৎপাদন৷
বিশাল আকারে কৃষিকাজ
অঙ্কের হিসেবে আল দিয়ে জমি ভাগ না করে বড় আকারে কৃষিকাজ করলে ফলন ও মুনাফা বেড়ে যায়৷ কিন্তু এমন উদ্যোগের পরিবেশগত ও সামাজিক মূল্য কম নয়৷ ‘মোনোকালচারাল ফার্মিং’ জমিরও ক্ষতি করতে পারে৷
সারের যথেচ্ছ ব্যবহার
ফলন বাড়াতে ও পোকামাকড়ের উপদ্রব এড়াতে রাসায়নিক সারের প্রয়োগ একটা বড় সমস্যা৷ স্বল্পমেয়াদি ভিত্তিতে এর সুফল পাওয়া গেলেও আখেরে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়৷ পানির মাধ্যমে ক্ষতিকারক দ্রব্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে৷
বিপন্ন ছোট খামার
বিশ্বায়নের ফলে শুধু বাংলাদেশ বা ভারত নয়, জার্মানি সহ শিল্পোন্নত দেশগুলিতেও ছোট চাষিদের টিকে থাকতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে৷ প্রতিযোগিতার বাজারে বার বার ধাক্কা খেয়ে হাল ছেড়ে দিচ্ছেন অনেকে৷
অরগ্যানিক কৃষিকাজ
টেকসই পদ্ধতিতে চাষবাস করতে অনেকে অরগ্যানিক ফার্মিং-এর পথ বেছে নেয়৷ এর ফলে জীববৈচিত্র্যও ধরে রাখা সহজ হয়৷ কিন্তু অধিক মূল্যের কারণে এখনো এই পদ্ধতি সব ক্ষেত্রে লাভজনক হতে পারছে না৷ শুধু পরিবেশ সচেতন ভোক্তারাই বাড়তি মূল্য দিতে প্রস্তুত৷
চাহিদা ও যোগানের ভারসাম্যের অভাব
নতুন বাজার ধরার আশায় ইউরোপের বাজারে দুধ উৎপাদন হচ্ছে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি৷ ফলে দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্যগুলির মূল্য প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে৷ ফলে অনেক চাষিকে ইইউ-র ভরতুকির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে৷ এমন কৃত্রিম হস্তক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে মোটেই সহায়ক হবে না বলে অনেকে মনে করেন৷
পরিবর্তনের দাবি
জার্মানির অনেক মানুষ কৃষিক্ষেত্রে চিন্তাধারার আমূল পরিবর্তনের দাবিতে পথে নেমেছেন৷ তাঁদের দুশ্চিন্তার অনেক কারণ রয়েছে৷ দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য, পশুদের সুরক্ষা থেকে শুরু করে পরিবেশ দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন – এই সব বিষয় বিবেচনা করেই চাষবাস করা উচিত বলে তাঁরা মনে করেন৷