1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আটক জঙ্গিরাই এখন বড় হুমকি?

২৯ অক্টোবর ২০১৯

বাংলাদেশে কারাগারে আটক জঙ্গিরা সবচেয়ে বড় হুমকি হতে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা৷ কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, এ কারণে তারা আটক জঙ্গিদের কঠোর নজরদারিতে রাখছেন৷ কিন্তু যারা জামিন পায় তাদের ব্যাপারে তাদের করণীয় কিছু নেই৷

https://p.dw.com/p/3S9H6
Bangladesch Extremisten werden nach Hinrichtung beerdigt
ফাইল ফটোছবি: Getty Images/AFP/Str

হোলি আর্টিজান হামলার পর ব্যাপক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাংলাদেশ জঙ্গিদের সক্ষমতা এখন অনেকটাই কমে গেছে৷ এপর্যন্ত বড় ধরনের ২২টি অভিযানে একশরও বেশি জঙ্গি নিহত হয়েছে৷ আর আটক হয়েছে এক হাজারেরও বেশি জঙ্গি৷ তাদের একটি অংশ এখন কারাগারে আছে৷ আবার কেউ কেউ জামিনেও ছাড়া পেয়েছে৷ তবে হোলি আর্টিজান হামলার আগেও জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় আটক হয়৷
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এবং কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের(সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম মনে করেন,‘‘বাগদাদি নিহত হওয়ায় বাংলাদেশে জঙ্গিদের মনোবল আরো ভেঙে যাবে৷ হোলি আর্টিজানের পর অভিযানে তারা দুর্বল হয়ে পড়লেও শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের ঘটনার পর তারা কিছুটা উজ্জিবীত হয়েছিল৷ দ্বিতীয় দফা অভিযানে তাও শেষ হয়ে গেছে৷''
তিনি বলেন,‘‘বাংলাদেশে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক এখন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে৷ ভার্চুয়াল জগতেও তারা দুর্বল হয়ে পড়েছে৷''

মনিরুল ইসলাম


কারা সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন কারাগারে ৫৭৭ জন জঙ্গি আটক ছিলো৷ কিন্তু এখন আছে ৪৭০ জন৷ বাকিরা এরই মধ্যে জামিন পেয়েছে৷ জানা গেছে আটক জঙ্গিদের মধ্যে যারা দুর্ধর্ষ তারা আছে গাজীপুর কারাগারে ৷ বাকিরা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন কারাগারে আছে৷
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন,‘‘বাইরে জঙ্গিরা দুর্বল হয়ে পড়লেও বাংলাদেশে এই কারাবন্দি জঙ্গিরাই সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশেও দেখা গেছে কারাগার থেকেই জঙ্গিরা আরো প্রশিক্ষিত হয়ে বের হয়৷ নিহত আবুবকর আল-বাগদাদিও শুরুতে বড় জঙ্গি ছিল না৷ সে কারাগার থেকেই বড় জঙ্গি হয়ে ওঠে৷ আমাদের এখানে কারাগারে জঙ্গিদের জন্য আলাদা কোনো সেল নেই৷ থাকলেও দুই একজনের জন্য আছে৷ তারা কারাগারে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে পারছে৷ মিশতে পারছে৷ এর ফলে তারা সেখান থেকেই নতুন পরিকল্পনার সুযোগ পাচ্ছে৷ যারা জামিনে বের হচ্ছে তারাও বা কি করছে আমরা জানি৷''
তিনি আরো বলেন,‘‘কারাগারে এইসব জঙ্গিদের ডিরেডিক্যালাইজেশনের কোনো উদ্যোগ নেই৷ আমার সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি আইজি প্রিজনের কথা হয়েছে৷ তিনিও বলেছেন এটা সম্ভব হচ্ছে না৷ কারণ এজন্য সরকারের দেয়া কোনো ফান্ড নেই৷'' তাই যারা কারাগারে আছে এবং যার জামিনে বের হচ্ছে তারাই এখন বড় হুমকি বলে মনে করেন এই নিরাপত্তা বিশ্লেষক৷ তিনি বলেন,‘‘ডিরেডিক্যালাইজড না হয়ে যারা জামিনে ছাড়া পাচ্ছে তারা আরো ভয়ঙ্কর হতে পারে৷''

ইশফাক ইলাহী চৌধুরী


বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে এখন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), নব্য জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম (এবিটি), আনসার আল ইসলাম, হিযবুত তাহরির, হিযবুত তাওহীদ ও হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশসহ আরো কিছু জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা আটক আছে৷ তাদের মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জনকে দুর্ধর্ষ জঙ্গি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে৷ অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল আকবর হোসেন জানান,‘‘দুধর্ষ জঙ্গিদের গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে রাখা হয়েছে৷ আটক সব জঙ্গিদের ব্যাপারেই আমাদের কঠোর নজরদারি আছে৷ তারা যাতে অন্য বন্দিদের সাথে মিশতে না পারে৷ নামাজে ইমমাতি করতে না পারে সে ব্যাপারে নির্দেশনা দেয়া আছে৷ তাদের সাথে যারা দেখা করতে আসেন তাদের ব্যাপারেও আমরা নজরদারি করি৷ তবে যেসব জঙ্গি জামিনে বের হয়ে যায় তারা কি করে তা আমরা জানি না৷''
আটক জঙ্গিদের ডিরেডিক্যালাইজেশনের ব্যাপারে কারা কতৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প বা ফান্ড নেই ৷ তবে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ধর্মীয় এবং সাইকোজিক্যাল মোটিভেশনের কাজ বরছে বলে জানান তিনি৷
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘যারা কারাগারে আটক আছে তাদের একাংশ আমাদের হেফাজতে থাকার সময়ই ডিরেডিক্যালাইজড হয়েছে৷ আর যারা জামিনে ছাড়া পায় তাদেরও আমরা নজরদারীতে রাখি৷ কারাগারে এখনো রেডিক্যালাইজড যারা আছে তাদেরকে আমরা বড় ধরনের থ্রেট মনে করছিনা৷ তবে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য