কলকাতায় ইফতারের বাজার বেশ চড়া
ভারতে শুক্রবার থেকে শুরু পবিত্র রমজান মাস। প্রস্তুতি শেষ। কলকাতায় রমজানের বাজার ঘুরে দেখল ডিডাব্লিউ।
নাখোদা মসজিদের সামনে
চিৎপুর রোডের নাখোদা মসজিদের আশেপাশের অনেকটা অংশ জুড়ে মুসলিম বসতি। রমজান মাস শুরুর আগের বিকেলেই জমে উঠেছে বাজার। তাই রবীন্দ্র সরণীতে (চিৎপুর রোড) গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলো বিকেল থেকে। বসল গার্ডরেল।
ক্রেতাদের ভিড়
কলকাতায় নাখোদা মসজিদের সামনে ক্রেতাদের ভিড়।
খেজুরের দাম বেশি
প্রতিদিন রোজা শেষ করে ইফতারের আহারের এক অন্যতম খাদ্যবস্তু এই খেজুর। রমজানের বাজারে তাই খেজুরের বিশাল চাহিদা। বিক্রেতা মুস্তাকিন জানালেন এখন খেজুর তিনি ১২০টা কেজি দরে বিক্রি করছেন। যত ভালো মানের খেজুর নেবেন, তত দাম বেশি। তবে তার দাবি, কাল থেকে দাম একটু কমতেও পারে। বেশি বিক্রি হলে কম লাভে সকলে বিক্রি করবেন, তাই দু-তিনদিনে দর ১০০টাকায় নেমে যেতে পারে।
দাঁতনের বিক্রি বাড়ে
দাঁতন বিক্রেতা ইলিয়াস জানালেন রমজানে মাসে এই দাঁতনের বিক্রিও বেড়ে যায়। এই সময়টায় সারামাস শুচিতায় বিশ্বাস করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। মিসওয়াক দাঁতনের এই দণ্ডগুলি কুড়ি টাকা করে। দাঁত মাজার ব্রাশ আবিষ্কারের বহুকাল আগে থেকে মানুষ দাঁত পরিষ্কারের জন্য নিমগাছের ডাল, মিসওয়াক ডাল ব্যবহার করে আসছেন।
টুপির বাজার ভালো
এই টুপি বিক্রেতা সারাবছরই এই বাজারে টুপি বিক্রি করেন। জানালেন এই সময়টায় টুপির বিক্রি বাড়ে। আগামী একটা মাস ভালো ব্যবসার দিকে তাকিয়ে আছেন এরা।
টুপির দাম বেড়েছে
এবার টুপির দামও সামান্য বেড়েছে। পঞ্চাশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত টুপি আছে এই বিক্রেতার কাছে।
সিমাইয়ের দাম বাড়েনি
রমজান মাসের এক উল্লেখযোগ্য খাদ্যবস্ত হলো সিমাই। কলকাতার বিভিন্ন মুসলমান অঞ্চলের বাজারে নজরে পড়বে সিমাইয়ের পাহাড়। বিক্রেতা হায়দার জানালেন, সিমাইয়ের দাম এইবছর খুব বেশি বাড়েনি। কেজি প্রতি দশ থেকে কুড়িটাকা বেড়েছে। ১০০ টাকা থেকে ২২০ টাকা কেজি দরের দেশি ঘিয়ে ভাজা সিমাই রয়েছে তার কাছে।
ফলের দাম বেড়েছে
বেড়েছে ফলের দাম। তরমুজের দাম সাধারণ সময়ে কেজি প্রতি কুড়ি টাকা থাকে, কিন্তু রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই তা একলাফে তিরিশ টাকা কেজি হয়ে গেছে। ফল বিক্রেতা জানালেন এইবছর চৈত্র মাসে রমজান শুরু হওয়ার ফলের দাম আরও বাড়বে।
আটা ফলের চাহিদা
চৈত্র চড়ক গাজনেরও মাস। একসঙ্গে দুটো ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য ফলের চাহিদা আগামী কদিন তুঙ্গে থাকবে। অনেকে কাটা ফল কিনেও ইফতার সারেন। কুড়ি থেকে চল্লিশ টাকা প্লেট দরে মেলে এই কাটা ফল। হোটেলেও নানা ফল সাজানো থাকে।
ছোলার চাহিদা তুঙ্গে
রমজান মাসে ছোলার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। ইফতারের আহারে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে অঙ্কুরিত ছোলাও খান অনেকে।
বাখরখানির চাহিদা তুঙ্গে
বাখরখানির চাহিদা মুসলমান অঞ্চলে সারাবছর, তবে রমজান মাসে বিক্রিটা তিনগুন বেড়ে যায়। বিভিন্ন দামের রয়েছে এই বাখরখানি, শিরমাল। বড় সাইজের একখানি বাখরখানির দাম ষাটটাকা।
লেড়ো বিস্কিট
বেকারির পদগুলির মধ্যে সবথেকে জনপ্রিয় হলো লেড়ো। বহুকাল ধরে এই লেড়োর জনপ্রিয়তা অক্ষুন্ন।
রমজান সকলের
আমীর-ওমরাও থেকে গরীবগুর্বো, খোদা সকলের। রমজান মাসে রোজা রাখতে পারেন মুসলমান ধর্মাবলম্বী যেকোনও মানুষ। ভিক্ষুক এই মানুষটিও আগামী কয়েকটা দিন রোজা রাখবেন। বললেন, “এই বয়সে কতদিন রোজা রাখতে পারব জানিনা। আল্লাহ চাইলে শেষপর্যন্ত রাখব।”