1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

করোনা জয় করে কাজে ফিরতে চান সেলিব্রিটিরা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
৮ আগস্ট ২০২০

করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষ৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রের এই সেলিব্রিটিরা কেউ এখন সুস্থ, কেউ হোম আইসোলেশনে রয়েছেন৷ করোনা জয় করে ফের তাঁরা কাজে ফিরতে আগ্রহী৷

https://p.dw.com/p/3gej5
Indien Kolkata | Coronavirus | Der Weg zurück zur Normalität
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের৷ এর মধ্যে ২৭ জন কলকাতার৷ প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে৷ সুস্থতার হার সন্তোষজনক হলেও সংক্রমণ কমানো যাচ্ছে না৷ এই পরিস্থিতিতে আনলক শুরু হওয়ায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে৷ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ যেমন কাজে যোগ দিয়েছে, তেমনই সমাজের বিশিষ্টজনেরা বেরিয়েছেন ঘর থেকে৷ অভিনেতা থেকে রাজনৈতিক কর্মী সকলেই ফের কাজ শুরু করেছেন৷ এর মধ্যেই সুপরিচিত একাধিক মুখ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে করোনার কোপে

বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার প্রয়াত হয়েছেন৷ শ্রমিক আন্দোলনের এই নেতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন৷ এর আগে মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের৷ এছাড়াও করোনা আক্রান্তের তালিকায় রয়েছেন অনেক বিশিষ্ট মানুষ। চলচ্চিত্র জগতের রঞ্জিত মল্লিক, কোয়েল মল্লিক থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় যেমন রয়েছেন, তেমনই রাজনীতির জগতে উল্লেখযোগ্য নাম মন্ত্রী সুজিত বসু, সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য ও অনাদি সাহু, প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম, চিকিৎসক ফুয়াদ হালিম প্রমুখ৷ এঁদের কেউ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন, কেউ রয়েছেন হোম আইসোলেশনে৷ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কথা বলেন করোনাজয়ী সাংসদ লকেট৷ তিনি বলেন, "মানুষ হতাশায় ভুগছে৷ প্যানিক করছে৷ করোনা চলে গেলে জীবন কোন খাতে বইবে বুঝতে পারছে না৷ এরকম সময়ে মানুষ জনপ্রতিনিধিকে পাশে চান৷ এখন কে তৃণমূল, কে বিজেপি, কে সিপিএম সেটা মানুষ দেখছে না৷ তাই রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলে মিলে কাজ করা দরকার৷”

গাইডলাইন মেনে লড়াই-সংগ্রামে থাকতে হবে: হালিম

সিএবি সচিব ও দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের করোনা আক্রান্ত হলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা শুরু করেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ৷ বিসিসিআই বা আইপিএলের সমস্ত কাজকর্মই তিনি বাড়ি থেকেই করেছেন৷ এরই মধ্যে মহিলা আইপিএলের সূচী ঘোষণা করেছেন তিনি৷

 সিপিএম নেতা ফুয়াদ হালিম চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন৷ তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে এখন হোম আইসোলেশন আছেন৷ তাঁর মতো অনেককেই নাড়া দিয়ে গিয়েছে শ্যামল চক্রবর্তীর বিদায়৷ শোক মিছিলে শেষযাত্রা করা সম্ভব হয়নি৷ করোনা বিধি মেনে শেষকৃত্য হয়েছে ধাপার মাঠে৷ এমন হৃদয়বিদারক ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও লড়াইয়ের মাঠ ছাড়তে রাজি নন ডা. হালিম৷ তিনি বলেন, "গাইডলাইন মেনে আমাদের লড়াই-সংগ্রামে থাকতে হবে৷ এখন সবচেয়ে জরুরি গরিব মানুষকে খাবার জোগানো ও তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করা৷ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে কমিউনিস্ট পার্টি৷ কমরেড শ্যামল চক্রবর্তী সেই লড়াইয়ের সৈনিক ছিলেন৷ তাঁর প্রয়াণ সত্ত্বেও লড়াই থামবে না৷” আবারও কাজে ফিরতে চেয়ে তিনি বলেন, "আমার হোম আইসোলেশন শেষ হবে ১০ আগস্ট৷ একবার করোনা হয়েছে বলে ঘরে বসে থাকলে চলবে না৷ কমিউনিস্ট পার্টির কোনো সদস্যই ঘরে বসে থাকবেন না৷ আমিও কাজে যোগ দেব৷”

করোনা সংক্রমণের জন্য সেলিব্রিটিদের দিকে আঙুলও উঠেছে৷ বলিউডের একাধিক অভিনেতা-অভিনেত্রী বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন, করোনা ছড়িয়েছেন৷ এমনই দাবি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের৷ বলিউড মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি বলেন, "অনেক সেলিব্রিটিই দেশে করোনা নিয়ে এসেছেন৷ তাঁরা একটি গণ্ডির মধ্যে ঢুকে পড়ছেন৷” যদিও এটাও ঠিক, সমাজের বিশিষ্টজনেরা করোনা মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেও এগিয়ে এসেছেন৷ তাঁরা নিয়মিত বার্তা দিচ্ছেন দেশবাসীকে৷ করোনা এতটা ব্যাপক আকার নেওয়ার আগে পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতারা এনিয়ে একটি ছবিও তৈরি করেন জনতাকে সাহস জোগাতে৷ এতে অভিনয় করা কোয়েল মল্লিক পরে করোনায় আক্রান্ত হন৷ অনেকের মতে, এভাবেই মারণ ভাইরাসের প্রকোপে আদতে মুছে গিয়েছে মান্যগণ্য ও সাধারণের মধ্যে বিভেদরেখা৷ সবাইকে এক জায়গায় এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে আধুনিক কালে মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় এই সংকট৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য