করোনার বিরুদ্ধে তাদের গোবর আর গো-মূত্রের থেরাপি
ভারতে হু হু করে বাড়ছে করোনায় মৃতের সংখ্যা৷ সরকারের প্রধান বিবেচনা সবার জন্য টিকা নিশ্চিত করা৷ চিকিৎসকেরা বলছেন টিকাই একমাত্র ‘রক্ষাকবচ’৷ অথচ কিছু লোক করোনার বিরুদ্ধে শুরু করেছেন তথাকথিত ‘গোবর থেরাপি’৷ দেখুন ছবিঘরে...
‘গোবর থেরাপি’ কী ও কেন?
আসলে নাম ‘গোবর এবং গো-মূত্র থেরাপি’ও হতে পারত৷ কারণ তারা মনে করেন গোবর আর গো-মূত্র মিলিয়ে এক ধরনের মিক্সচার তৈরি করে তা সারা গায়ে মেখে শুকালে করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা দূর হবে৷ ছবিতে গৌতম মণিলাল বোরিসা নামের এক ব্যক্তির গায়ে গোবর আর গো-মূত্রের মিশ্রণ মাখার দৃশ্য৷
সযত্নে শুকানো
গোবর আর গোমূত্রের মিশ্রন গায়ে মেখে সঙ্গে সঙ্গে ধুয়ে ফেললে করোনাকে পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না৷ তাই মিশ্রণ ভালো করে শুকিয়ে নেন তারা৷ ছবিতে শ্রী স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানমের খোলা জায়গায় শুয়ে সেই মিশ্রণ শুকাচ্ছেন একজন৷
প্রার্থনা
গায়ে গোবর আর গো-মূত্রের মিশ্রণ মাখার পরে প্রার্থনার দৃশ্য৷ আহমেদাবাদের স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানমে প্রার্থনা করোনা আসার আগে থেকেই নিয়মিত হয়, কারণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি চালান হিন্দু ঋষিরা৷
দুধ বা মাখন দিয়ে গোসল
স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানমে ভালো করে গোবর থেরাপি নেয়ার পর গোসলটাও সেরে নিচ্ছেন অশোক ওঝা৷ সেখানে আবার সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করলে হয় না৷ তারা বিশ্বাস করেন, দুধ বা মাখন দিয়ে গা পরিষ্কার করলে তবেই মুক্তি মিলবে করোনার হাত থেকে৷
বিশ্ববিখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির পাশেই!
স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানম কিন্তু বিশ্ববিখ্যাত ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি জিডুস কাডিলা (Zydus Cadila)-র কাছেই৷ বিশ্বের অনেক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই বলছেন, গুজরাট রাজ্যের এমন একটি জায়গায় নিছক ধর্ম বিশ্বাস থেকে কিছু মানুষ যেভাবে করোনার হাত থেকে বাঁচতে চাইছে, তা একেবারেই ঠিক নয়৷
ভিত্তিহীন বিশ্বাস
অনেক চিকিৎসকই বলছেন, গোবর থেরাপি উপকার তো হবেই না, উল্টো অন্য রোগ বাঁধানোর আশঙ্কা বাড়াবে৷ ভারতের জাতীয় মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জেএ জয়লাল বললেন, ‘‘গোবর এবং গো-মূত্র কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এমন বিশ্বাসের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই৷এসব একেবারেই বিশ্বাসপ্রসূত৷এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাই বেশি৷’’
তবু বিজ্ঞানকে অস্বীকার
চিকিৎসকদের কথা আমলেই নিচ্ছেন না আহমেদাবাদের স্বামীনারায়ণ গুরুকুল বিশ্ববিদ্যা প্রতিষ্ঠানমের ঋষি এবং তাদের কাছে করোনামুক্তির উপায় খুঁজতে যাওয়া ব্যক্তিরা৷ স্থানীয় এক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির ম্যানেজার গৌতম মণিলাল বোরিসা বরং সব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়ে বললেন, কই, এখানে তো ডাক্তাররাও আসেন৷ তারাও তো বিশ্বাস করেন এই থেরাপি ইমিউনিটি বাড়াবে৷ এখানে থেরাপি নিয়ে গিয়ে তো তারা রোগীদের চিকিৎসাও করছেন৷’’
তারাও গোবরথেরাপিতে আস্থাশীল!
উদ্ধব ভাটিয়া একজন ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার৷ সুতরাং করোনা সংকটের সময় মানুষের প্রাণরক্ষায় সামনে থেকেই লড়েছেন, লড়ছেন৷ গায়ে গোবর আর গো-মূত্রের মিশ্রণ লাগিয়ে একটা গরুকে শ্রদ্ধাভরে স্পর্শ করছেন তিনি৷