করাচিতে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২৫ জন নিহত
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০পাকিস্তানে ছয় সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে শিয়াদের ওপর এটি দ্বিতীয় বড় ধরণের হামলা৷ শিয়াদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব মুহররমের শেষদিনে একটি বাস এবং একটি হাসপাতাল লক্ষ্য করে ওই হামলা চালানো হয়৷
প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মোটরসাইকেল আরোহী এক বোমা হামলাকারী শিয়া পুণ্যার্থীদের একটি বাস লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে সেখানে নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে ১২জন নিহত হয়৷ এই ঘটনায় কমপক্ষে ৪৯জন আহত হন৷
এর কিছুক্ষণ পর করাচির জিন্নাহ হাসপাতালে দ্বিতীয় বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় আরও ১৩জন৷ আহত হয় আরো প্রায় ৫০ জনের মতো৷ বোমার আঘাতে হাসপাতালের প্রবেশ পথে একটি অ্যাম্বুলেন্স এবং জরুরি বিভাগের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ প্রথম বিস্ফোরণে আহতদের ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল এবং হতাহতদের আত্মীয় স্বজনরা ওই প্রবেশ পথে অপেক্ষা করছিলেন৷
স্থানীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বোমা বিস্ফোরণের শিকার হওয়া ওই বাসটিতে করে শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষজন নিকটবর্তী একটি ধর্মীয় তীর্থে যাচ্ছিলেন৷ মুহররমের শেষদিন উপলক্ষ্যে প্রতিবছর এই তীর্থযাত্রায় অংশ নিয়ে থাকে স্থানীয় শিয়া সম্প্রদায়ের শত শত নারী পুরুষ৷
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং আহত এক ব্যক্তির আত্মীয় ২৬ বছরের আজম আলি বলছিলেন, ‘‘আমি একটা প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেলাম৷ আগুন আর ধোঁয়ার মধ্যে সবকিছু লণ্ডভণ্ড হয়ে আকাশে উড়তে দেখলাম৷ দুইজন মানুষ আমার সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লো৷ আমার মনে হয় ওরা মারা গেছেন৷''
আজম আরও বলেন, ‘‘হতাহতদের বেশিরভাগই শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ৷ এই হাসপাতালের সামনে যারা ছিলেন তাদের বেশিরভাগই প্রথম বিস্ফোরণে হতাহতদের আত্মীয়স্বজন৷''
স্থানীয় সাহায্য সংস্থা ‘ইডিএইচআই' এর স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ মেজবুব জানান, ‘‘ আমার তিন সহকর্মী আহত হয়েছেন৷ পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স প্রায় বিধ্বস্ত হয়ে গেছে৷ আমরা আসলে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছি৷ আমরা যে বেঁচে আছি এটাই বিশ্বাস হচ্ছে না৷''
ওদিকে, নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হাসপাতালটির পার্কিংয়ে একটি টেলিভিশনের মধ্যে পেতে রাখা বোমা নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছেন তারা৷
প্রতিবেদক: মুনীর উদ্দিন আহমেদ
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক