ঐতিহাসিক স্থাপনার শহর ভালেটা

প্রায় সাড়ে চারশ’ বছর আগে দূর্গ শহর ভালেটার নির্মাণকাজ শুরু হয়৷ এখনও প্রতিদিন দুপুর ১২টায় দূর্গের এই অংশে জড়ো হন পর্যটকরা৷ কারণ, সেই সময় পুরনো কামান থেকে গোলা ছোড়া হয়৷

ভালেটার কেন্দ্রস্থলকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার অন্তর্ভূক্ত করেছে ইউনেস্কো৷ কারণ, ভালেটায় আছে প্রায় তিনশ’র বেশি দূর্গ, প্রাসাদ আর গির্জা৷

ভালেটা শহরের নাম এসেছে গ্র্যান্ড মাস্টার জ্যঁ প্যারিজো ডে লা ভালেটের নাম থেকে৷ ভালেটের প্রাসাদটি সবচেয়ে পুরনো ও সুন্দরগুলোর মধ্যে একটি৷ বর্তমানে এটি মাল্টার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হলেও প্রাসাদের বেশিরভাগ অংশ পর্যটকদের জন্য খোলা রয়েছে৷

দ্য গ্র্যান্ড মাস্টার্স প্যালেস ঘেঁষে রয়েছে এটি, যার নাম রিপাবলিক স্কয়ার৷ সেখানে আছে অনেকগুলো ক্যাফে আর রেস্তোরাঁ৷ ফলে পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় এলাকা এটি৷

বলা হয়, মাল্টায় আছে ৩৬৫টি গির্জা, অর্থাৎ বছরের একেকদিনের জন্য একটি গির্জা৷ সেই হিসেবে রাজধানী ভালেটায় আছে অনেকগুলো চার্চ৷ এগুলোর মধ্যে বিখ্যাত সেন্ট জনস কো-ক্যাথিড্রাল৷ নির্মাণে মাত্র পাঁচ বছর (১৫৭৩-১৫৭৮) সময় লাগলেও ভেতরের নকশার কাজ শেষ হতে লেগেছে প্রায় একশ’ বছর৷

২০১৪ সালে সিটি গেট প্রকল্পের কাজ শেষ হয়৷ এর আওতায় নতুন সংসদ ভবন ও একটি খোলামঞ্চও তৈরি করা হয়েছে৷

শহরের পুরনো অংশ হাঁটাহাঁটি করলে কাঠের তৈরি এমন রঙিন ব্যালকনি দেখতে পাওয়া যাবে৷ এসব ব্যালকনিতে বসে বাড়ির মহিলারা রাস্তায় কী হচ্ছে তা দেখতে পেতেন৷ আর ঘেরা থাকার কারণে রাস্তার লোকজন তাঁদের দেখতে পেতেন না৷

মাল্টার ইতিহাস বেশ পুরনো৷ সেই পাথর যুগ থেকে শুরু৷ ফলে সেখানকার মাটি খুঁড়ে অনেক মন্দির, সমাধি ইত্যাদির অংশ পাওয়া গেছে৷ সেগুলো রাখা আছে জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘরে৷ যেমন ছবির ‘স্লিপিং লেডি’ একটি৷ এটি প্রায় চার হাজার বছরের পুরনো৷

ঘোরাঘুরির সময় ক্লান্ত হয়ে পড়লে ‘আপার বারাক্কা গার্ডেনস’-এ যাওয়া যেতে পারে৷ ১৬৬১ সাল থেকে এটি শান্তির জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷ সেখান থেকে ভালেটার পোতাশ্রয়ও দেখা যাবে৷

সূর্য ডোবার পর মাল্টার রাজধানী শহর রোম্যান্টিকতায় পূর্ণ হয়ে ওঠে৷ পুরনো দূর্গের পাশ দিয়ে হাঁটা, মাঝে সেখানকার ক্যাফেগুলো বসে নাস্তা কিংবা রাতের খাবার খেতে আপনার ভালই লাগবে৷