একটু আলোর জন্য
নরওয়ের একটি শহরের বাসিন্দারা বছরের ছয়মাস রোদের আলোর ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত ছিলেন এতদিন৷ অভিনব এক উপায় বের করে সে সমস্যার সমাধান করেছেন তাঁরা৷
অন্ধকারে ছয়মাস
নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরের ছোট্ট শহর রুকন৷ মাত্র সাড়ে তিন হাজার মানুষের বাস সেখানে৷ চারদিকে পাহাড় দিয়ে ঘেরা থাকায় শীতকালে সেখানে রোদ পৌঁছতে পারে না৷ ফলে বছরের অর্ধেকটা সময় (সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ) সেখানকার অধিবাসীরা রোদের দেখা পান না৷
শত বছর আগে
রুকনের বাসিন্দাদের জন্য আলোর ব্যবস্থা করতে প্রায় একশো বছর আগে স্যাম আয়ডে নামের এক ব্যবসায়ী একটি অভিনব পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন৷ কিন্তু প্রযুক্তির অভাবে সেটার বাস্তবায়ন করা যাচ্ছিল না৷ তাই বিকল্প হিসেবে, বছরের ঐ সময়টা অধিবাসীরা যেন রোদ পান, তাই তাদের কেবল কার-এ করে পাহাড়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷
বিশাল আয়না স্থাপন
স্থানীয় মার্টিন অ্যান্ডারসেন ২০০৫ সালে শত বছর আগের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন৷ এর আওতায় সমতল থেকে প্রায় সাড়ে চারশো মিটার উপরে পাহাড়ের গায়ে তিনটি বড় আয়না স্থাপন করা হয়৷ শীতকালে রোদ সেই আয়নাগুলোতে প্রতিফলিত হয়ে শহরের গায়ে ঢোলে পড়ে৷
কম্পিউটার চালিত
একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামের মাধ্যমে আয়নাগুলো সূর্যের পথ বুঝে এদিক-সেদিক নড়াচড়া করে৷ এভাবে রুকন শহরের প্রায় ৬০০ বর্গমিটার এলাকায় রোদ পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে৷ এজন্য খরচ হয়েছে ছয় লক্ষ ২০ হাজার ইউরো, অর্থাৎ প্রায় ছয় কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা৷
ইটালিতেও একই ব্যবস্থা
রুকনের আগে আলপ্সের কাছে ইটালির একটি গ্রামে ২০০৬ সালে এই আয়নাটি বসানো হয়৷ এর ফলে ভিগানেলা গ্রামে শীতকালে রোদের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়েছে৷
জার্মানির একটি পরিবার
জার্মানির দক্ষিণের ভিল্ডগুটাখের ছোট্ট এক গ্রামের একটি পরিবার এতদিন মধ্য অক্টোবর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রোদের দেখা পেত না৷ সে সমস্যার সমাধানে তাঁরা ২০১০ সালে ছোট্ট এই আয়নার ব্যবহার শুরু করে৷
আশার আলো
নরওয়ের রুকনের মতো এত বেশি আলো না পেলেও জার্মানির পরিবারটি যে আলো পাচ্ছে তাতেই তাঁরা সন্তুষ্ট৷ ছবিতে পরিবারের এই নারী সদস্যের মুখের হাসিই তার প্রমাণ৷