1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এইডস রোগীদের প্রতি মানুষ এখনও সহানুভূতিপ্রবণ নয়

৯ মে ২০১১

শুধু শারিরীক সমস্যাই নয় সামাজিকভাবেও এইডস রোগীরা নানা ধরণের বৈষম্যের শিকার হয়৷ জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন সম্প্রতি জানিয়েছেন যেভাবেই হোক এইডস প্রতিরোধ করতে হবে৷ তিনি বিশেষভাবে জোর দেয় কেনিয়ার ওপর৷

https://p.dw.com/p/11Bt2
বিশ্বে এইডস রোগে আক্রান্তদের ৫ শতাংশ বসবাস করে কেনিয়াতেছবি: UNI

গত ৩০ বছর ধরে বিশ্বের নানা দেশে এইডস রোগ ডানা মেলে রয়েছে৷ বৈষম্য, এইডস রোগীদের এড়িয়ে চলা, তাদের সঙ্গে স্বাভাবিকবাবে না মেশা এই রোগ প্রতিরোধকে আরো দুর্বোধ্য করে তুলেছে৷ বৈষম্য দূর করতে হবে, তাদের সমাজে ফিরিয়ে আনতে হবে – বেশ জোর দিয়ে কথাগুলো বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন৷

১৯৮১ সালে প্রথম এইডস রোগের কথা বিশ্ববাসী জানতে পারে৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ৬ কোটি মানুষ এইডস রোগে আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছে প্রায় ৩ কোটি মানুষ৷ এইডস রোগটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাজারে বের হয়েছে অ্যান্টি রেট্রো ভাইরাল ড্রাগ সংক্ষেপে যা এআরভি নামে পরিচিত৷ তবে এইডস রোগ নিরাময়ের কোন ওষুধ এখনো আমাদের হাতে আসেনি৷

তিন দশক পর চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এইডস রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমেছে৷ আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে নিয়মিত৷ সবচেয়ে বড় কথা হল বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এখন মোটামুটি সবাই জানে এইডস রোগ কী, কীভাবে এই রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ এবং এরোগের ভয়ঙ্কর পরিণতির কথা৷

World AIDS Day
সামাজিকভাবেও এইডস রোগীরা নানা ধরণের বৈষম্যের শিকারছবি: AP

কোনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় কাজ করছেন ডা. রেক্স ইমপাসাঞ্জে৷ তিনি এইচআইভি অফিসার৷ কেনিয়াতে এইডস রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘সারা বিশ্বের যত মানুষ এইডস রোগে আক্রান্ত তার প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ বসবাস করে কেনিয়াতে৷ অর্থাৎ প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ এদেশে এইডস রোগে আক্রান্ত৷ কেনিয়াতে এই রোগটি মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে৷ তা আমরা বেশ স্পষ্টভাবেই বলতে চাই৷ এইডস সাঙ্ঘাতিক এক সমস্যা – এই তালিকায় যদি দশটি দেশ উল্লেখ করা হয় তাহলে অবশ্যই কেনিয়া আসবে৷ এইডস রোগটি এদেশে খুবই গুরুতর একটি সমস্যা৷''

কেনিয়ার যেসব জায়গায় এইডস রোগী রয়েছে বা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে সেখানে সক্রিয় বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা৷ কেনিয়ার সরকার এই রোগ প্রতিরোধে যে সব প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার সঙ্গে একযোগে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ সংস্থা পরামর্শ দিচ্ছে, বিভিন্ন কৌশল এবং নীতি বাস্তবায়নে সাহায্য করছে একই সঙ্গে পরামর্শ গ্রহণ করছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন সহায়ক গ্রুপও তৈরি করেছে৷ গ্রুপের সদস্যদের এইডস বিষয়ে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ গ্রুপ শুধু এইডস রোগীদের সাহায্য করছে না, যারা এইডস রোগে আক্রান্ত নয় – তাদের আচার-আচরণ এইডস রোগীদের প্রতি কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েও কাজ করছে৷ এর পাশাপাশি রোগ নিয়ে গবেষণাও চালিয়ে যচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷

জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেন, ৩০ বছর আগে এইডস-এর অর্থ ছিল নির্ঘাত মৃত্যু৷ আজ অনেক পরিবর্তন হয়েছে৷ এইডসে আক্রান্ত হলেই সেই মানুষটি মারা যাবে এখন পরিস্থিতি আর নেই৷ এইডস রোগীকে আরো অনেকদিন বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করছে এআরভি৷ তবে কেনিয়াতে এ রোগ মহামরি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে৷

২০৩০ সালে এইডস রোগ কি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে? নাকি এই রোগ প্রতিরোধে আমরা সফল হবো? ডা. রেক্স ইমপাসাঞ্জে বললেন, ‘‘এটা নির্ভর করছে অনেকগুলো বিষয়ের ওপর৷ আমরা সফল হয়েছি এই রোগ প্রতিরোধে তা আমরা এখনো জোর দিয়ে বলতে পারি না৷ নতুন নতুন সংক্রামক ব্যাধির আবির্ভাব হচ্ছে৷ যদি কেনিয়ার দিকে তাকানো যায় তাহলে বলবো ২০০৭ সালে যত মানুষ এইডসে আক্রান্ত হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম মানুষ আক্রান্ত হয়েছে ২০১০ সালে৷ রোগটি যেন আর ছড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করেছি কিন্তু তা প্রতিরোধে এখনো আমরা সফল হইনি৷ তবে আমরা আশা করতে পারি, যেভাবে কাজ করছি সেভাবে কাজ করে যেতে পারলে অন্ততপক্ষে মহামারি আকারে এইডস ছড়িয়ে পড়বে না৷''

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক