1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উত্তর কোরিয়ায় ইয়োনমির দুঃসহ স্মৃতি

৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

২০০৭ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে উত্তর কোরিয়া থেকে পালিয়ে চীনে, পরে দক্ষিণ কোরিয়ায় আশ্রয় নেন ইয়োনমি পার্ক৷ তারও সাত বছর পর ২০১৪ সালে বিশ্ব শুনতে পায় তাঁর জীবনের এক করুণ গল্প৷ যাঁরা সে গল্প এখনও জানেন না, এ লেখা তাঁদের জন্যই৷

https://p.dw.com/p/2jPIT
ছবি: YouTube/One Young World

তিন বছর আগেও ইয়োনমিকে কেউ চিনতেন না৷ প্রতি বছরের মতোই ২০১৪ সালেও ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে আয়োজন করে বিশ্ব যুবা সম্মেলন৷ বিশ্বের নানা সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করতে আমন্ত্রণ পান বিভিন্ন দেশের তরুণ-যুবকরা৷ তাঁদের একজন ছিলেন উত্তর কোরিয়ার ইয়োনমি৷

কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে মঞ্চে আসেন তিনি৷ কথা শুরুর আগেই কান্নায় ভেঙে পড়েন ইয়োনমি৷ ধীরে ধীরে বর্ণনা করেন কী দুঃসহ স্মৃতি৷

ইয়োনমি বলেন, বেড়ে ওঠার পুরো সময়টাতেই নারী-পুরুষের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক তিনি দেখেননি৷ কোনো বইয়েও এর উল্লেখ থাকতো না, কোনো গানেও না৷ ‘‘ওখানে কোনো রোমিও এবং জুলিয়েট নেই৷ প্রতিটি গল্পেই শুধু স্বৈরাচারি কিমদের প্রোপাগান্ডাই থাকতো৷’’

 

১৯৯৩ সালে উত্তর কোরিয়ার রিয়াংগাং প্রদেশের হিয়েসেনে জন্ম হয় ইয়োনমির৷ কখনও বোঝেননি স্বাধীনতা কী জিনিস৷ ইয়োনমির সবচেয়ে কাছের বন্ধুর মাকে হলিউডের সিনেমা দেখার অপরাধে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়৷ তাঁর বয়স তখন মাত্র ৯ বছর৷

উত্তর কোরিয়া থেকে চীনে সপরিবারে পালিয়ে গিয়েও সহজে বাঁচতে পারেননি তাঁরা৷ চীনে পলাতক অবস্থাতেই বাবা মারা গেলে তাঁকে গোপনে কবর দেয়া হয়৷ এমনকি, উত্তর কোরিয়ার ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হবে, এই ভয়ে কাঁদতেও পারেননি ইয়োনমি৷

যেদিন উত্তর কোরিয়া থেকে পালান ইয়োনমি, সেদিন তাঁর সামনেই ধর্ষণের শিকার হন তাঁর মা৷ ধর্ষকেরা ছিল চীনা নাগরিক৷ সেই ভয়াবহ দিনের কথা দর্শকদের সামনে তুলে ধরেন ইয়োনমি৷ ‘‘তারা আমাকেই ধর্ষণ করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু আমার বয়স ছিল মাত্র ১৩, আমি ছিলাম দুর্বল৷ আমার মা আমাকে বাঁচাতে নিজেকে তাদের হাতে তুলে দেন৷’’

প্রায় ৮ মিনিটের এ বক্তব্যে বিশ্ববাসী ও রাজনৈতিক নেতাদের উত্তর কোরিয়ার জনগণকে মুক্ত করতে আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান৷

দুই বছর আগের ঘটনা হলেও, স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের ইস্যুগুলিতে এখনও ক্রমাগত ওঠে আসে ইয়োনমির এই বক্তব্য৷ মাত্র দু'দিনেই এই ভিডিও পৌঁছে যায় পাঁচ কোটি মানুষের কাছে৷ তবে এখন বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে ছড়িয়ে গেছে এই ভিডিও৷ দেখেছেন প্রায় ১০ কোটিরও বেশি মানুষ৷

এডিকে/ডিজি