‘উগ্রপন্থিদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে আওয়ামী লীগও'
২৭ এপ্রিল ২০১৮জার্মানির গ্যোটিঙেন শহরে বৃহস্পতিবার এই সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়৷ সেখানে প্রথমদিনের আলোচনা শুরু হয় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে৷ উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশে ব্লগার, লেখক, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও মুক্তচিন্তার মানুষদের ওপর বেশ ক'য়েকটি সাম্প্রদায়িক হামলা দৃষ্টি কেড়েছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের৷
নিহত হয়েছেন অনেকেই৷ সর্বশেষ হামলাটি হয়েছে ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবালের ওপর৷ তবে তিনি বেঁচে গেছেন৷
এ সব হামলায় বেশ কয়েকজন ব্লগার জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আশ্রয় পেয়েছেন৷ গ্যোটিঙেনে চার দিনের সম্মেলনের প্রথম দিনের আলোচনার বিষয় ছিল, ‘ধারালো অস্ত্রের কোপ থেকে বাঁচতে'৷ অংশ নিয়েছেন জার্মানিতে আশ্রিত দুই বাংলাদেশ ব্লগার ও লেখক৷ তাঁরা হলেন অর্পিতা রায়চৌধুরী ও জোবায়েন সন্ধি৷
আলোচনায় একটি প্রবন্ধের কিছুটা পাঠ করেন অর্পিতা৷ সেখানে তিনি বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিল যে তাদের ওপর আর কোনো হামলা অত্যাচার হবে না৷ কিন্তু সেই আশায় গুঁড়েবালি৷ বরং এ আমলে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের হামলা রেকর্ড ছাড়িয়েছে৷
‘‘আস্তে আস্তে তাদের (আওয়ামী লীগের) চরম সাম্প্রদায়িক রূপ বেরিয়ে আসতে শুরু করে, এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো আওয়ামী লীগও কট্টর, উগ্র ও ধর্মান্ধ ইসলামিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি করতে থাকে৷''
ধর্ম নিয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে একজন হিন্দু ও নারী হিসেবে দেশে চরম অবমাননার শিকার হতে হয়েছে বলে জানান অর্পিতা৷ তিনি বলেন, লেখালেখির মাধ্যমেই সমাজ বদলাতে চান তিনি৷
‘‘আমি সমাজ পরিবর্তনের জন্য অনলাইন মাধ্যমে কাজ করছি৷ নারীদের সচেতন করার জন্য লেখালেখি করে যাচ্ছি৷'' বলেন অর্পিতা৷
জোবায়েন সন্ধি মনে করেন, রাজনীতির বাইরে গিয়ে বাংলাদেশে উগ্রপন্থাকে দেখার সুযোগ নেই৷ ‘‘বাংলাদেশে সব রাজনৈতিক দলই উগ্রপন্থিদের ব্যবহার করে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য৷'' বলছিলেন তিনি৷
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে প্রগতিশীল চিন্তাচেতনা অতীতের তুলনায় আরো বাড়ছে৷ তিনি তাঁর ব্লগ দিয়ে সমাজ পরিবর্তনের কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান৷
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশে যারা মুক্তিচন্তার মানুষ আছেন, বিশেষ করে যাঁরা ব্লগে লেখালেখি করেন, তাঁদের অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন৷
আলোচনার শুরুতে বাংলাদেশের একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরেন জার্মান ইন্সটিটিউট ফর পলিসি অ্যান্ড সিকিউরিটি'-র গবেষক ক্রিস্টিয়ান ভাগনার৷ সেখানে তিনি আওয়ামী লীগকে সংস্কৃতি ও ভাষা জাতীয়তাবাদে এবং বিএনপিকে ধর্মীয় জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী দল হিসেবে উল্লেখ করেন৷
প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনার মতামত জানান নীচের ঘরে৷