1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একটি বিপজ্জনক খেলা

১২ অক্টোবর ২০১৩

গত মঙ্গলবার চীনের টিয়ানমেন পর্বতাঞ্চলে এভাবেই প্রাণ হারালেন হাঙ্গেরির ভিক্টর কোভাট্স৷ মধ্য চীনের এই জাতীয় অরণ্যোদ্যানে চলেছে দ্বিতীয় বিশ্ব উইংস্যুট চ্যাম্পিয়নশিপ৷ তার ঠিক আগেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল৷

https://p.dw.com/p/19y7G
***ACHTUNG: Bilder nur zur Berichterstattung über den Film DEUTSCHLAND VON OBEN, 2012 Universum Film GmbH verwenden!!!*** Auf dem Bild: 28_Wingsuit_Jumper_BadSassendorf_3 Copyright: Deutschland von oben / Universum Film GmbH 2012
ছবি: Deutschland von oben / Universum Film GmbH 2012

স্কাইডাইভিং কিংবা বেস জাম্পিং অথবা ক্যানোপি পাইলটিং-এর ছবি যারা দেখেছেন, তারা হয়তো বুঝতে পারবেন উইংস্যুট ফ্লাইং-টা ঠিক কতোটা বিপজ্জনক৷ শুধু মাথার উপর প্যারাশুট ধরে বিভিন্ন পাইলনের মধ্য দিয়ে জলের উপর ভেসে যাওয়া নয় – যা হল ক্যানোপি পাইলটিং: অনেকটা যেন ঘুড়ি উড়িয়ে ঘুড়ির সাথে ওড়া, তবে মাটির, অর্থাৎ জলের কাছে৷

বেস জাম্পিং হল কোনো পাহাড় বা খাড়াইয়ের মাথা থেকে নীচে উপত্যকার দিকে ঝাঁপ দেওয়া – তবে পিঠে প্যাক করা প্যারাশুট নিয়ে৷ রোমাঞ্চটা হল প্রথমে ফ্রি ফল-এর পর যতো দেরিতে সম্ভব দড়ি টেনে প্যারাশুটটা খোলা৷ আর স্কাইডাইভিং তো জানেনই: প্যারাশুট পিঠে নিয়ে এয়ারোপ্লেন থেকে ঝাঁপ দেওয়া এবং প্যারাশুট খোলার আগে অবধি নানা কসরত, ফর্মেশন ফ্লাইং ইত্যাদি করা৷

প্লবনশীলতা

এক হিসেবে বলা যেতে পারে, প্লেনে চড়ে আকাশে ওঠার পরও মানবজাতির যে পাখিদের মতো ওড়ার স্বপ্নটা অক্ষত এবং অপূর্ণই রয়ে গেছে, সেই স্বপ্নটাই নানাভাবে তাড়না করে বেড়াচ্ছে এই সব মানুষদের৷ তারা পাখিদের মতো, বাদুড়দের মতো, পক্ষান্তরে এক ধরনের বিশেষ উড়ন্ত কাঠবিড়ালির মতো উড়তে চান৷ সেই স্বপ্নেরই শেষ পর্যায় এখন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই উইংস্যুট ফ্লাইং৷

Stuntman Gary Connery is seen in the sky wearing a specially developed wingsuit near Henley-on-Thames, west of London May 23, 2012. He had jumped from a helicopter at 2,400 feet and successfully landed without the use of a parachute. REUTERS/Eddie Keogh (BRITAIN - Tags: TRANSPORT SOCIETY)
প্যারাশুট পিঠে নিয়ে এয়ারোপ্লেন থেকে ঝাঁপ দেওয়া এবং প্যারাশুট খোলার আগে অবধি নানা কসরত, ফর্মেশন ফ্লাইংছবি: Reuters

উইংস্যুট আর কিছু নয়, একটা বিশেষ ধরনের জাম্পস্যুট, যা মানুষের শরীরে আরো কিছু পরিধি যোগ করে বাতাসে তার প্লবনশীলতা বাড়ায়৷ শক্ত শোনালেও ব্যাপারটা সহজ৷ মানুষের দুই পায়ের মধ্যে আর দুই বাহু ও দেহের মধ্যে যদি বাদুড়ের পাখার মতো চামড়া থাকতো, তাহলে উঁচু জায়গা থেকে ঝাঁপ দিলে মানুষ পাহাড়ি কাঠবিড়ালির মতো উড়ে যেতে পারতো – যে বিশেষ জাতের কাঠবিড়ালি এক গাছ থেকে আরেক গাছের কাণ্ডে উড়ে যেতে পারে৷

আধুনিক উইংস্যুটগুলো সৃষ্টি হয় নব্বইয়ের দশকের শেষাশেষি৷ উইংস্যুটগুলো বার্ডম্যান স্যুট, ফ্লাইং স্কুইরেল স্যুট কিংবা ব্যাট স্যুট নামেও পরিচিত৷ উইংস্যুট যখন হল, তখন উইংস্যুট ফ্লায়ার-রা স্বভাবতই পাহাড়ি এলাকায় খাদ-খন্দরের মাঝখান দিয়ে দুর্ধর্ষ গতিতে উড়ে যাবার চেষ্টা করবেন, কোথাও কোনো আঘাত না লাগিয়ে – কেননা পাথর ও অরণ্য ঘেরা এলাকায় ঐ প্রচণ্ড গতিতে কোথাও ধাক্কা লাগানোর অর্থ: মৃত্যু৷

দুর্ঘটনার খুঁটিনাটি

সেই মৃত্যুই বরণ করলেন হাঙ্গেরির অভিজ্ঞ উইংস্যুট ফ্লায়ার ভিক্টর কোভাট্স৷ মঙ্গলবার দুপুরে ৭০০ মিটার উচ্চতা থেকে ঝাঁপ খাবার পর তিনি তাঁর বাহুর সঙ্গে সংযুক্ত ‘পাখা'-গুলোর ‘জিপ' খুলে উইংস্যুট ফ্লাইং করতে শুরু করেন৷ যেখানে তাঁর নামার কথা, সেই টার্গেট স্পটের দিকেও ভালোভাবেই এগোচ্ছিলেন কোভাট্স – কিন্তু তারপরেই তিনি প্যারাশুট না খুলে অন্য একদিকে টাল খেয়ে যান৷ ভিডিও ফুটেজে শুধু দেখা যায়, তিনি কিছু গাছের পিছনে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন৷

দু'শোর বেশি উদ্ধারকর্মী মঙ্গলবার সারারাত ধরে ঐ দুর্গম অঞ্চলে কোভাট্স-এর খোঁজ চালানোর পর বুধবার তাঁর মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়৷ দৃশ্যত কোনো খাড়া পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে কোভাট্স-এর যে মাথায় চোট লাগে, তা থেকেই তাঁর মৃত্যু ঘটে৷ ওয়ার্ল্ড উইংস্যুট লিগ হাঙ্গেরির তিনবারের উইংস্যুট চ্যাম্পিয়ন ভিক্টর কোভাট্স-এর মর্মান্তিক মৃত্যুর পর ভবিষ্যতে কিছু কিছু পরিবর্তন করার কথা ভাবছে, বলে জানিয়েছে৷

কিন্তু যে খেলায় মানবজাতির সবচেয়ে পুরনো – প্রায় একটি বিবর্তনবাদী স্বপ্নের সঙ্গে ঝুঁকি – এমনকি প্রাণের ঝুঁকি নেবার অস্তিত্ববাদী রোমাঞ্চ যুক্ত হয়েছে, সে খেলা থেকে বিপদকে কখনোই বাদ দেওয়া চলে না৷ আসলে ব্যাপারটা কি জানেন? পাখিরা ওড়ে, কেননা সম্ভবত তারা ওড়াটাকেই পায়ে হাঁটার চেয়ে বেশি নিরাপদ পন্থা বলে মনে করে! মানুষের ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য নয়৷

এসি / এসবি (এপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য