অজ্ঞান পার্টি!
৫ অক্টোবর ২০১৪ঢাকা মহানগর পুলিশের হিসেবে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে ইতোমধ্যে মারা গেছেন দু'জন৷ পুলিশ অবশ্য এবার বেশ তত্পর৷ ঈদযাত্রীদের সচেতন করতে বিলি করা হয়েছে প্রায় দুই লাখ লিফলেট৷ ১০টি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে৷ টেলিভিশনগুলো প্রচার করছে অজ্ঞান পার্টি নিয়ে নানা খবর৷ এবারে ঈদের ‘হিরো' বা ‘ভিলেন' এখন অজ্ঞান পার্টি৷
অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়াদের সবার কাহিনী প্রায় একই রকম৷ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অপরিচিত ব্যক্তিরা সখ্যতা গড়ে কিছু খাইয়ে অজ্ঞান করে সবকিছু নিয়ে গেছে তাদের৷ আর তাদের উদ্ধার করা হয়েছে রাস্তা, বাসস্টেশন বা লঞ্চঘাট থেকে৷
অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়া রোগীদের পরীক্ষা করে চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, খাবারের সঙ্গে অনেকক্ষেত্রে উচ্চমাত্রার ‘ডায়াজিপিন' ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ মিশিয়ে অজ্ঞান করার কাজ করে প্রতারক চক্র৷ আর এর প্রতিক্রিয়ায় অজ্ঞান হওয়া ছাড়াও ডায়াবেটিস ও লিভারের সমস্যাগ্রস্ত রোগীরা মারাও যেতে পারেন৷ পুলিশের ভাষ্যমতে, অচেতন করার এসব ওষুধ আমদানি নিষিদ্ধ৷ তারপরও অসাধু ব্যবসায়ীরা চোরাই পথে আমদানি করে উচ্চ মূল্যে প্রতারক চক্রের কাছে বিক্রি করে৷
পুলিশ এবং গোয়েন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশে অজ্ঞান পার্টির ২০টি চক্র সক্রিয় রয়েছে৷ তাদের সদস্য তিনশ'র বেশি৷ অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা একদলে কমপক্ষে চারজন থাকে৷ তারা নানা কৌশলে যাত্রী বা কেনাকাটা করতে আসা ব্যক্তিদের টার্গেট করে ভাব জমায়৷ এরপর তারাও খায়, শিকারকেও খেতে দেয়৷ আর এরমধ্যেই থাকে কারসাজি৷
পুলিশ শনিবার পর্যন্ত অজ্ঞান পার্টির ৪০ জন সদস্যকে আটক করার কথা জানিয়েছে৷ আর অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের ধরতে গঠন করেছে বিশেষ টিম৷ তারা লঞ্চ, রেল ও বাসষ্টেশন এবং জনসমাগম স্থলে নজরদারি বাড়িয়েছে৷
পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন আরো তথ্য৷ তিনি জানান, অপরিচিত কারো কাছ থেকে কিছু না খেতে এবার ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হয়েছে৷ উচ্চক্ষমতার ঘুমের বড়ি পানিতে গুলে বা চা, শরবত, ডাবের পানি, ভাত, জুসের প্যাকেট, শসা, কোমলপানীয়, পান, ঝালমুড়ি, ক্রিম দেয়া বিস্কুটে মিশিয়ে কৌশলে মানুষকে খাইয়ে অজ্ঞান করে সব লুটে নেয়া হয়৷