আড়ি পাতা রুখতে প্রযুক্তি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্র হিসেবে জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমে ফ্রাইবুর্গ শহরের সুনাম আছে৷ এখানেই ‘বিফাইন সলিউশনস' নামের এক কোম্পানি ই-মেল চালাচালি আরও নিরাপদ করে তুলতে চায়৷
সংস্থার কর্ণধার ইয়োসেফ হিমেলসবাখ ভালোই জানেন, তাঁর গ্রাহকদের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এই ব্ল্যাক ফরেস্ট অঞ্চলের মাঝারি মাপের একটি কোম্পানি চীনে এক শাখা ও গবেষণা কেন্দ্র খুলেছিলো৷ তারা হঠাৎ দেখলো যে তাদের চীনা অফিসে কোনো ই-মেল আসছে না৷ প্রযুক্তিগত সব ভালো করে পরীক্ষা করে তারা নিশ্চিত হলো যে সব ই-মেল নিশ্চয় মাঝপথেই সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷''
তখন গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহ তীব্র হলো৷ বিশেষ করে এই অঞ্চলে এমন আশঙ্কা অমূলক নয়৷ জার্মানির দক্ষিণে অনেক মাঝারি মাপের কোম্পানি ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে৷ তাদের সুরক্ষার চাহিদাও বাড়ছে৷ ইয়োসেফ হিমেলসবাখ বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ ধরে দেখছি, চাহিদা বাড়ছে৷ ওয়েবসাইটের ভিজিটর-এর সংখ্যা দেখেই তা বোঝা যাচ্ছে৷''
সংস্থার কর্মী ১৫ জন৷ নিরাপদে তথ্য পাঠানোর প্রক্রিয়াই তাদের মূল প্রোডাক্ট৷ সাধারণ ই-মেল সফটওয়্যারের সঙ্গে যুক্ত করলেই হলো৷ এর আওতায় সরাসরি প্রেরক কোনো ই-মেল পাঠকের কাছে পাঠায় না, অ্যাটাচমেন্ট সহ ই-মেলটি এনক্রিকশন করে একটি সার্ভারে রাখা হয়৷ তারপর পাঠকের কাছে একটি ‘কি' বা চাবি পাঠানো হয়৷ সেটা দিয়ে সে ই-মেল-টি সার্ভার থেকে ডাউনলোড করতে পারে৷
বিষয়টি হাতেনাতে পরীক্ষা করে দেখা যায়৷ প্রথমে একটা ফাইল খোলা যেতে পারে৷ কেউ হয়তো আড়ি পেতে ই-মেল-টি পড়তে পারে, কিন্তু এনক্রিপশন-এর কল্যাণে সে কিছুই বুঝবে না৷ সফটওয়্যার প্রোগ্রামার রেনে হার্টভিশ বলেন, ‘‘এখানেই এটা দেখা যাচ্ছে৷ যেমনটা দেখছেন, স্বাভাবিক সংখ্যা ও হরফ পড়া যাচ্ছে৷ কিন্তু এটাও বুঝছেন, যে পড়েও কিন্তু কিছু বোঝা যাচ্ছে না৷ এটা টেক্সট মেসেজ বা অন্য কিছু হতে পারে৷''
আজও অনেক কোম্পানি এনক্রিপশন ছাড়াই তথ্যের আদান-প্রদান করে৷ অথচ তারাই আবার তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নিরাপত্তার খাতিরে ফায়ারওয়াল ও অ্যান্টি ভাইরাসের পেছনে অনেক খরচ করে৷ ইয়োসেফ হিমেলসবাখ বলেন, ‘‘আমার মনে হয়, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী, যাদের ভালো প্রোডাক্ট রয়েছে, বাজারে যাদের ভালো অবস্থান রয়েছে, যারা বিশ্বের বাজারে নিজেদের পণ্য বিক্রি করতে চায় – তারা এখন ই-মেল-এর মাধ্যমে তথ্যের আদান প্রদান নিরাপদ করার বিষয়ে বেশ ভাবনাচিন্তা করছে৷''
অন্য কেউ তাদের ই-মেল পড়ে নিলে যে বিশাল লোকসান হতে পারে, সেই উপলব্ধি বাড়ছে৷