1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বন্দি শিবিরের বৈধতা দিলো চীন

১১ অক্টোবর ২০১৮

বন্দি শিবিরে উইগুর মুসলিমদের আটকে রাখার বিষয়টি স্বীকার করেছে চীন৷ আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের কর্তৃপক্ষ বন্দি শিবিরগুলোকে আইন করে বৈধতা দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/36LeG
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Azubel

বলা হচ্ছে, ইসলামি কট্টরবাদ মোকাবেলার অংশ হিসেবে আটক উইগুরদের আদর্শ শেখানো, তাদের চিন্তা-চেতনায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা চলছে৷

মেলবোর্নের লাট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ এথনিক পলিসি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ জেমস লাইবোল্ড সংবাদ সংস্থা এপি'কে বলেছেন, ‘‘এত মানুষকে বন্দি রাখার বৈধতা দেয়া হলো এই আইনের মাধ্যমে৷ জিনজিয়াং-এর  মুসলিম উইগুর, কাজাখ এবং অন্য সংখ্যালঘুরা রয়েছেন এই বন্দি শিবিরে৷ এমন ধরনের আদর্শ শেখানোর কথা এই আইনে বলা হয়েছে, যা আসলে অনৈতিক এবং অগ্রহণযোগ্য৷ আসলে তাদের নির্যাতনকে বৈধতা দেয়ার একটা হাতিয়ার হলো এই আইন৷’’

এ সংক্রান্ত মূল আইনটি ঘোষণা করা হয়েছিল ২০১৭ সালে৷ সেই সময় আইনে নিকাব, প্রকাশ্যে কট্টরবাদি আলোচনা এবং রেডিও বা টেলিভিশনে এ সংক্রান্ত আলোচনা শোনা বা দেখা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল৷ বর্তমান আইনে নতুন তিনটি ধারা যোগ হয়েছে৷ চীনের নতুন আইনে বলা হয়েছে, যেসব আচরণের কারণে বন্দি শিবিরে আটক করা হতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে খাবার ছাড়া অন্য হালাল পণ্য ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় টিভি দেখতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় রেডিও শুনতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে সন্তানদের দূরে রাখা৷ চীন বলছে, এসব বন্দি শিবিরে চীনা ভাষা শেখানো হবে, চীনের আইন শেখানো হবে এবং বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে৷

চীনা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনের আওতায় ধর্মীয় উগ্রবাদের কবলে পড়া উইগুরদের নতুন করে শিক্ষা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ তবে কীভাবে তা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে কিছু মন্তব্য করতে চাননি চীনা কর্মকর্তারা৷

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দাবি, এসব বন্দি শিবিরে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে উইগুরদের শপথ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ একই সঙ্গে, তাঁদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আত্মসমালোচনা করানো হচ্ছে৷ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত চীন প্রায় ১০ লাখ উইগুর মুসলিমকে বন্দি করেছে

হালাল পণ্য ও নিকাব এবং বোরকা নিষিদ্ধ

জিনজিয়াংয়ে বিভিন্ন ইসলামি রীতি এবং আচারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রচারণা শুরু হয়েছে৷ বিশেষ করে খাদ্য ছাড়া বিভিন্ন হালাল পণ্য ব্যবহারের প্রবণতার বিরোধিতা করা হচ্ছে৷ স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে লেখা হয়েছে, টুথপেস্টের মতো পণ্যে হালাল জড়িয়ে মানুষকে ধর্মীয় উগ্রবাদের পথে নেয়া হচ্ছে৷

চীনের নতুন আইনে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, মুসলিম নারীরা মুখ ঢাকা বোরকা ব্যবহার করতে পারবে না৷ অপরদিকে, কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যদের এবং কর্মকর্তাদের স্থানীয় ভাষা ব্যবহারের পরিবর্তে চীনা ম্যান্ডারিন ব্যবহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷

বন্দি শিবিরগুলোতে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের কথা বলেছেন বন্দিরা৷ সাবেক বন্দিদের উদ্ধৃত করে নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, বন্দিদের জোর করে কমিউনিস্ট পার্টির বন্দনার গান গাওয়ানো হয়৷ গানের কথা ভুলে গেলে সকালের নাশতা দেয়া হয় না৷

উইগুর মুসলিমরা জিনজিয়াংয়ের জনসংখ্যার ৪৫ শতাংশ৷  তাদের ভাষা অনেকটা তুর্কি ভাষার মতো৷

এপিবি/এসিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি)