ইন্দোনেশিয়ায় ‘গাঁজা কফি’
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু আছে৷ নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও সেখানে গাঁজা মেশানো কফি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷
আচেহতে শরিয়া আইন
ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ প্রদেশে শরিয়া আইন চালু আছে৷ ঐ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন থামানোর লক্ষ্যে ২০০১ সালে ঐ প্রদেশের জন্য ‘বিশেষ স্বায়ত্তশাসন’এর ব্যবস্থা করা হয়৷ এরপর সেখানে শরিয়া আইন বাস্তবায়ন শুরু হয়৷ অ্যালকোহল পান কিংবা প্রকাশ্যে চুমু খাওয়ার শাস্তি হিসেবে সেখানে বেত্রাঘাত করার পাশাপাশি মাথার চুলও কেটে নেয়া হয়৷
আচেহতে গাঁজার চাষ
আচেহতে একসময় গাঁজার চাষ বৈধ ছিল৷ সে সময় বাড়ির পেছনে অনেকে গাঁজা চাষ করতেন৷ তবে গত শতকের সত্তরের দশক থেকে গাঁজা চাষ অবৈধ করা হয়৷
যেভাবে এসেছে
একদল বলেন, ডাচ ঔপনিবেশিকরা ঐ এলাকার সুলতানকে উপহার হিসেবে গাঁজা দিয়েছিলেন৷ তবে তারমিজি আব্দুল হামিদ নামের স্থানীয় এক ইতিহাসবিদ বলছেন, ডাচরা আসার আগে থেকেই আচেহতে গাঁজা ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়৷ ‘‘রান্না ও ওষুধ তৈরিতে গাঁজার ব্যবহার ছিল৷ অবশ্য গাঁজা সেবনের বিষয়টির উল্লেখ প্রাচীন কাগজপত্রে নেই,’’ বলে জানান তিনি৷
বর্তমান অবস্থা
ছবিতে ইন্দোনেশিয়ার এক পুলিশ সদস্যকে গাঁজার গাছ পোড়াতে দেখা যাচ্ছে৷ গতবছর এভাবে ১০০ টনের বেশি গাঁজা গাছ পোড়ানো হয়৷ এছাড়া গাঁজা চাষী ও ব্যবহারকারীদের প্রায়ই গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে৷ ইন্দোনেশিয়ায় এখন মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন রয়েছে৷ মাদকপাচারে জড়িত থাকার অপরাধে মৃত্যুদণ্ডও দেয়া হয়৷
গাঁজা মেশানো কফি
পুরো দেশে যেখানে গাঁজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে শরিয়া আইন চালু থাকা একমাত্র রাজ্য আচেহতে গাঁজা মেশানো কফি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে৷ বার্তা সংস্থা এএফপি আগুস (ছদ্মনাম) নামে এক কফি ব্যবসায়ীর তথ্য তুলে ধরেছে, যাঁর এক কেজি গাঁজা মেশানো কফি প্রায় সাড়ে ছয় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে৷ আচেহ ছাড়াও অন্য রাজ্যের মানুষরাও তা কিনছেন৷
আগুস ভয় পান না
আগুস এএফপিকে জানান, তিনি পুলিশকে ভয় পান না৷ ‘‘যে জিনিস সব জায়গায় পাওয়া যায় সেটা আপনি কীভাবে নিষিদ্ধ করবেন? এটা (গাঁজা) পুরো আচেহতেই আছে৷ অভিযানের কারণে শুধু মানুষের চোখের আড়ালে এর চাষ হচ্ছে,’’ বলেন তিনি৷ আগুস বলেন, তাঁর প্রতিদিনের ভয় হচ্ছে, কফি ও গাঁজার মিশ্রনটা ঠিকভাবে করা৷ ৭০ ভাগ কফির সঙ্গে ৩০ ভাগ গাঁজা মিশিয়ে কফি বানান তিনি৷ গাঁজার পরিমাণ একটু বেশি হলে কফির স্বাদ নষ্ট হয়ে যায় বলে জানান আগুস৷