ইটালিতে সেতু ধসে প্রাণহানি
মঙ্গলবার ইটালির জেনোয়া শহরের মরান্দি সেতুর একটি অংশ ধসে যায়৷ এতে কমপক্ষে ৩৭ জন মারা গেছেন৷ আহত হয়েছেন আরো অনেকে৷
নিহতের সংখ্যা
মরান্দি ব্রিজ ধসে বুধবার সকাল পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে জার্মানিভিত্তিক বার্তা সংস্থা ডিপিএ৷ এছাড়া আরো ১৬ জন আহত হয়েছেন বলে জানাচ্ছে তারা, যাদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ এর আগে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও সালভিনি জানান যে, সেতু ধসে মৃতদের মধ্যে ৮, ১২ ও ১৩ বছর বয়সি তিন শিশুও রয়েছে৷
দুর্ঘটনা
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে প্রায় ১.১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটির মাঝামাঝি প্রায় ১০০ মিটার অংশ ভেঙ্গে পড়ে৷ মোটরযান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত সেতুর ঐ অংশটি মাটি থেকে প্রায় ৪৫ মিটার উঁচুতে ছিল৷ ভেঙে পড়া অংশ দিয়ে কয়েকটি গাড়ি মাটিতে পড়ে বিধ্বস্ত হয়৷
মরান্দি ব্রিজ
মরান্দি ব্রিজটি ইটালির উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বন্দর শহর জেনোয়াতে অবস্থিত৷ এই শহরটি লিগুরিয়া রাজ্যের রাজধানী ও বাণিজ্যের শহর হিসেবে পরিচিত৷ মরান্দি ব্রিজ জেনোয়ার ‘ব্রুকলিন ব্রিজ’ হিসেবেও পরিচিত৷ এটি ইটালির রিভেরিয়া অঞ্চল ও ফ্রান্সের দক্ষিণ উপকূলের সঙ্গে অন্যতম সংযোগ সেতু হিসেবে কাজ করে৷
কেন এই দুর্ঘটনা
এখনো দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ধার করা যায়নি৷ অনুমিত নানা কারণকে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে৷ কেউ কেউ বলছেন, বিজলীর আঘাতে দুর্ঘটনাটি ঘটতে পারে৷ তবে দু’বছর আগে জেনোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নির্মাণ বিশেষজ্ঞ সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন যে, এই সেতুর নির্মাণে গলদ (ইঞ্জিনিয়ারিং ফেইলিওর) আছে৷ এছাড়া ১৯৬৭ সালে নির্মিত সেতুটি বয়সের ভারেও ধসে পড়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷
উদ্ধার অভিযান
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তুপ থেকে দুর্ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার সারারাত ও বুধবার সকাল পর্যন্ত টানা অভিযান চালিয়েছেন৷ তাঁরা নিশ্চিত হতে চাইছেন যে, ধ্বংসস্তুপের নীচে আর কোনো লাশ পড়ে নেই৷
অবকাঠামো নিয়ে দুশ্চিন্তা
মাত্র পাঁচ দশকেই একটি সেতু যদি ভেঙে পড়ে, তাহলে তা চিন্তার কারণই বৈকি৷ ইটালির পুরাকৌশলীরা বলছেন, ৫০ ও ৬০-এর দশকে নির্মিত সেতুগুলো আসলে পঞ্চাশ বছরের কার্যকরী মেয়াদেই তৈরি করা হয়েছিল৷ প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টে দেশের সব অবকাঠামো পুনঃনিরীক্ষণের তাগিদ দিয়েছেন৷
এবারই প্রথম নয়
এর আগেও সেতু ধসে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে৷ ২০১৮ সালের জানুয়ারিতেই কলম্বিয়ায় নির্মাণাধীন চিরাজারা সেতু ধসে নয় জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ ২০০৮ সালের আগস্টে চেক রিপাবলিকের স্টুডেন্কা সেতু ধসে আটজন মারা যান৷ আগের বছর যুক্তরাষ্ট্রের মিসিসিপি সেতু ধসে ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়৷