1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইচ্ছামৃত্যুর অধিকার

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

ভারতে ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে অপারগ সুপ্রিম কোর্ট এই সামাজিক প্রশ্নের মীমাংসা ঠেলে দিলেন বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চের দিকে৷ অসুস্থ ব্যক্তির নিরাময়ের সম্ভাবনা না থাকলে তাঁর ইচ্ছামৃত্যুর অধিকার নিয়ে এ বিতর্ক৷

https://p.dw.com/p/1BFB2
ছবি: picture-alliance/dpa

ভারতে ইচ্ছামৃত্যুর (ইউথেনেশিয়া) অধিকারের স্বীকৃতি সুপ্রিম কোর্ট ছেড়ে দিলেন বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চের হাতে৷ এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে পাঁচ সদস্যের এক সাংবিধানিক বেঞ্চ৷ বহুদিন ধরে গুরুতর অসুস্থ কোনো ব্যক্তি, যার সুস্থ হবার আশা নেই, জড় পদার্থের মত বেঁচে আছেন – জীবনদায়ী কৃত্রিম ব্যবস্থার দ্বারা সেই নিদারুণ রোগ যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পেতে তাঁর ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে অপারগ হলেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন এক বেঞ্চ৷ সর্বোচ্চ আদালত এই মর্মে রায় দেন যে, ‘‘ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারের প্রশ্নটি আইন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শকাতর বিষয়৷ মানবিকতা এবং নৈতিকতার স্বার্থে বিষয়টি বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চের বিবেচ্য হওয়া উচিত বলে আদালত মনে করেন৷'' প্রধান বিচারপতি সদাশিবম বলেন, অরুণা শানবাগ মামলায় আদালতের আগেকার নির্দেশিকায় কিছু অস্পষ্টতা থেকে গেছে৷

‘কমন কজ' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অতি সম্প্রতি ইচ্ছামৃত্যুর অধিকার অনুমোদনের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল৷ সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য জানিয়ে কমল জয়সওয়াল বলেন, ‘‘সম্মানের সঙ্গে মৃত্যুর অধিকার ব্যক্তি স্বাধীনতার মধ্যেই পড়ে৷'' এ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেশেন্ট অটোনমি অ্যান্ড সেল্ফ ডিটারমিনেশন আইনের উল্লেখ করেন৷ ঐ আইনে রোগী বা রোগিনীর শারীরিক অবস্থা বিশেষে ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে৷

Betäubungsmittel Natrium Pentobarbital
ভারতে ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারের স্বীকৃতি সুপ্রিম কোর্ট ছেড়ে দিলেন বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চের হাতেছবি: picture-alliance/dpa

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ইচ্ছামৃত্যুর অধিকারের বিরোধিতা করা হয়৷ যুক্তি দেখানো হয় যে, এই অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া হলে গোটা দেশে তার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে৷ সব থেকে বড় কথা, কৃত্রিমভাবে জীবনদায়ী ব্যবস্থায় যাঁদের বাঁচিয়ে রাখা হয়, তা তুলে নেবার সিদ্ধান্ত সেই ব্যক্তি নিজে নিতে পারেন না৷ নিতে পারেন একমাত্র ডাক্তাররা৷ চিকিৎসকদের কর্তব্য জীবন দেয়া, জীবন নেয়া নয়৷ এমন কি বিচার বিভাগও তা নিতে পারেন না৷

অতি সম্প্রতি বেলজিয়ামে শিশুদেরও ইচ্ছামৃত্যু আইনের আওতায় আনা হলে বিদেশের প্রচার মাধ্যমগুলিতে তার বিরূপ সমালোচনা হয়৷ বলা হয়, এর ফলে শিশুদেরকেও মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে৷ এটা সামাজিক ও নৈতিক দিক থেকে এক অতলান্ত অবক্ষয়৷

বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ অবশ্য তা মনে করেন না৷ মনে করেন, এই আইন অমানবিক নয়৷ নিরাময়ের আশা না থাকা অল্পবয়স্করা রোগ যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্তি পেতে তাঁর মা-বাবার মত নিয়ে ইচ্ছামৃত্যু চাইতে পারে৷ উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বেলজিয়ামে বয়স্কদের ক্ষেত্রে ইচ্ছামৃত্যু আইন পাস হয়৷ বেলজিয়ামের প্রায় ৭৫ শতাংশ নাগরিক ঐ আইনের পক্ষে মত দেন৷ প্রতিবেশী উদারপন্থি দেশ নেদারল্যান্ডসকেও এ বিষয়ে পাশে পেতে চাইছে বেলজিয়াম৷ ইচ্ছামৃত্যুর অধিকার আইন নেদারল্যান্ডসে বয়স্কদের পাশাপাশি ১২ বছর পর্যন্ত নাবালকদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য