ইউরোপীয় চিত্রকলায় বসন্ত এসেছে বার বার...
উত্তর গোলার্ধের মানুষরা শীতের ছয় মাস বৃষ্টি, বরফ আর আঁধারিতে কাটানোর পর বসন্তের জন্য যেন মুখিয়ে থাকেন৷ সেই আকুলতা অভিব্যক্তি পেয়েছে এই পাঁচটি ক্লাসিক ক্যানভাসে৷
‘বসন্তে ফলের বাগান’ (১৮৮১)
আপেলগাছের সাদা ফুল আর চেরি গাছের গোলাপি ফুল - এই মিলিয়েই তো বসন্ত৷ প্রথমে ফুল, পরে ফল৷ বসন্তে সেইরকম একটি ফুলের বাগানের ছবি এঁকেছেন ব্রিটিশ চিত্রকর অ্যালফ্রেড সিসলে (১৮৩৯-১৮৯৯), যিনি তাঁর জীবন কাটিয়েছেন ফ্রান্সে৷
‘আসনিয়েরেসের কাছে সেইন নদীর তীরে হাঁটতে যাওয়া’ (১৮৮৭)
ওলন্দাজ চিত্রকর ভিনসেন্ট ফান গখ (১৮৫৩-১৮৯০) তাঁর সমকালীন শিল্পী অ্যালফ্রেড সিসলে’র ইমপ্রেশনিস্ট অঙ্কণশৈলীর খুব ভক্ত ছিলেন৷ তবে ফান গখ স্বয়ং বিশ্বের সবচেয়ে নামকরা ছবি-আঁকিয়েদের অন্যতম৷ তাঁর ছবি দেখলেই চেনা যায়, এমনকি সেইন নদীর তীরে বসন্তের ফুল ধরা গাছগুলির নীচে হাঁটতে যাওয়া এক নিঃসঙ্গ পুরুষের এই প্রতিকৃতিটিতেও৷
‘জিভের্নির বসন্ত’ (১৯০০)
ফরাসি ইমপ্রেশনিস্ট চিত্রকরদের মধ্যে ক্লদ মোনে (১৮৪০-১৯২৬) নিঃসন্দেহে অন্যতম৷ তাঁর কাছে বসন্ত ছিল শিল্পীদের পক্ষে সবচেয়ে সৃজনশীল একটি ঋতু৷ জিভের্নিতে তাঁর নিজের বাড়ি ও বাগান থেকে মোনে তাঁর বহু ছবির প্রেরণা পেয়েছেন৷ তাঁর ‘জলপদ্ম’ পর্যায়ের ছবিগুলিকে তাঁর সেরা সৃষ্টির মধ্যে গণ্য করা হয়৷
‘বসন্ত’ (১৯০৪)
ছবিটি এঁকেছেন রুশ আভঁ গার্দ শিল্পী কাজিমির মালেভিচ (১৮৭৯-১৯৩৫), বিমূর্ত চিত্রশিল্পের দিকে ঝোঁকার আগে যিনি প্রাকৃতিক দৃশ্য আঁকতে ভালোবাসতেন৷ তরুণ শিল্পী হিসেবে মালেভিচ ইম্প্রেশনিস্ট চিত্রকলার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন৷ বিশেষ করে মোনের একটি ছবি তাঁকে বিশেষভাবে মুগ্ধ করেছিল, ‘সেই প্রথম আমি নীল আকাশে আলোর খেলা দেখি, স্বচ্ছ, বিশুদ্ধ নানা রঙের খেলা,’ ১৯০৪ সালে লেখেন মালেভিচ৷
‘বসন্তে ঝোপঝাড়’ (১৯২৫)
সুইশ-জার্মান চিত্রকর পাউল ক্লে (১৮৭৯-১৯৪০) নিজে থেকেই ছবি আঁকতে শিখেছিলেন৷ ১৮৯৮ সালে মিউনিখ অ্যাকাডেমি তাঁকে ছাত্র হিসেবে নিতে অস্বীকার করে; কাজেই তিনি সারা দুনিয়া ঘুরে নানা ধরনের অঙ্কণশৈলী শেখেন৷ বিশেষ করে ভিনসেন্ট ফান গখ এবং পল সেজানের আঁকা ছবি দেখে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন৷ কিন্তু তিনি চাইছিলেন তাঁর নিজস্ব স্টাইল সৃষ্টি করতে... বসন্তের এই ছবিটিতে যা স্পষ্ট৷
প্রতিবেদন: হাইকে মুন্ড/এসি
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী