ইউরোপে নাইজেরিয়ান মাফিয়ার দৌরাত্ম্য
২৯ ডিসেম্বর ২০১৯সলিডারিটি উইথ উইম্যান ইন ডিসট্রেস নামের এনজিওর কর্মকর্তা বারবারা ভেলনার জানান, এখানকার মহিলাদের অধিকাংশই নাইজেরিায়ার সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর সদস্য, যারা শিক্ষা ও অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অংশ৷
সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর নারীরা প্রায়ই এ মাফিয়া চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়৷ তাদের ঠিকানা হয় এখানে৷ মাফিয়াদের এ চক্রটি বেশ শক্তিশালী বলেও জানান বারবারা৷
তিনি বলেন, ‘‘সুবিধাবঞ্চিত এ নারীদের বলা হয় ইউরোপ পৌঁছুতে হলে তোমাদের একটি বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিতে হবে৷ এর জন্য বেশ কিছু টাকা প্রয়োজন৷ তবে এটা কোন সমস্যা নয়৷ কেননা, ইউরোপে পৌঁছেই তোমরা ভালো অংকের আয়-রোজগারের পথ পেয়ে যাবে৷''
বাড়ছে পাচারের সংখ্যা
২০১৮ সালে জার্মান পুলিশ পাচার হওয়া এমন ৬৮ জন নারীর সন্ধান পান যারা নাইজেনিয়ান পাচারকারীদের মাধ্যমে এখানে এসেছেন৷ পরিসংখ্যান বলছে, আফ্রিকা থেকে পাচার করা নারীদের বেশিরভাগই নাইজেরিয়ান৷ সংখায় এটি শতকরা ৬১ ভাগ৷
পাচারকারীদের ঠেকাতে তৎপর রয়েছে জার্মান পুলিশ৷ ২০১৭ সালে এক অভিযানে ৪৭ জন পাচারকারীকে আটক করে পুলিশ৷
নাইজেরিয়ান পাচারকারীদের এ দৌরাত্ম্য ঠেকাতে একটি বিশেষ প্রকল্প রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের৷ এ প্রকল্পে যোগ দিয়েছে জার্মানিও৷ নাইজেরিয়ান সরকারের সহযোগিতায় মাফিয়া চক্রকে থামানোই হচ্ছে প্রকল্পের উদ্দেশ্য৷
নাইজেরিয়ার নতুন চক্র
ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে গত তিন বছরে নাইজেরিয়া থেকে প্রায় ২০ হাজার নারী ইটালি এসেছেন বলে জানা গেছে৷
আফ্রিকা থেকে ইটালি আসা এমনই এক নারী হেলেন ওকোরো৷ প্রায় ২০ বছর আগে তিনি এসেছেন ইটালিতে৷ হেলেন বর্তমানে দেশটির সিসিলির কাটানিয়া শহরের ক্যাথলিকদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে কাজ করেন৷
হেলেন জানান আশ্রয়ের জন্য এখানে অনেক নারী আসেন, কিন্তু কেন্দ্রটিতে যথেষ্ট জায়গা নেই৷ গত কয়েক বছরে হেলেন পাচারকারীদের নিষ্ঠুরতার পরিচয় পেয়ে আসছেন৷
তবে সিসিলিয়ানদের অনেকেই নতুন নতুন পাচারকারীর কথা বলছেন যারা এখানকার পরিবেশের সাথে মিশে গেছে৷ ইটালির সাংবাদিকরা অবশ্য দেশটির সরকারকেও এ অবস্থার জন্য দায়ী করছেন৷
সিসিলির সরকার পক্ষের আইনজীবী লিনা ট্রোভাটো অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ তিনি বলেন নাইজেরিয়ান পাচারকারীদের বিষয়ে সরকার যথেষ্ট সচেতন রয়েছে৷
ইয়ান-ফিলিপ শোলৎ, আন্ড্রেয়া লুয়েগ/আরআর/এডিকে