1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউনিভার্সিটি ক্যান্টিন ‘মেনজা'

৩০ নভেম্বর ২০১০

জার্মানির প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিজস্ব স্টুডেন্ট ক্যান্টিন রয়েছে৷ এই ক্যান্টিগুলো ‘মেনজা' নামে পরিচিত৷ খুব সস্তায় এখানে ‘ফুল প্লেট মেনু' পাওয়া যায়৷ কখনো কখনো ছাত্র-ছাত্রীদের প্রিয় খাবারও পরিবেশন করা হয় ‘মেনজা'-য়৷

https://p.dw.com/p/QLaY
কম দামে চটজলদি খাবার পাওয়া যায় ক্যান্টিনেছবি: DW / Grudinina

ভাত বা আলু, সঙ্গে মাছ বা মাংস, একটি স্যুপ এবং একটি সালাদ৷ মেনজা-য় এই হচ্ছে প্রতিদিনের মেনু৷ তবে ছাত্র-ছাত্রীর সবচেয়ে প্রিয় খাবার হচ্ছে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বা আলু ভাজা এবং মাংস৷ স্টেক আকারে ভাজা মাংসের বড় একটি টুকরো৷ যারা রান্নার দায়িত্বে থাকে, তাদের মূল লক্ষ্য হল খুব দ্রুত খাবার তৈরি করা, পরিবেশন করা এবং অবশ্যই সেই খাবার যেন ছাত্র-ছাত্রীদের পেট ভরায়৷ প্লেট ভর্তি খাবার –সেই তুলনায় দাম খুবই কম৷ যে কোন ছাত্র-ছাত্রীর যেন মেনজা-য় এসে খাওয়ার সামর্থ্য থাকে – সেদিকে লক্ষ্য রাখা হয়৷ অনেকেই মনে করেন মেনজায় যেহেতু একসঙ্গে প্রচুর কাঁচা শাক-সবজি এবং মাছ-মাংস কেনাকাটা করা হয়৷ তাই ভাল এবং টাটকা খাবার কেনা হচ্ছে কিনা, সেদিকে নজর দেওয়া হয় না৷ কথাটা কিছুটা ঠিক৷

Symbolbild Bio Mensa
মেনজা’র কর্মীদের ঠিক সময়ে খাবার প্রস্তুত রাখতে হয়ছবি: picture-alliance/ dpa/dpaweb

তবে রেগেন্সবুর্গ শহরের দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এর ব্যতিক্রম৷ মেনজা কর্তৃপক্ষ সুপারমার্কেট নয়, আশেপাশের কাঁচা বাজার থেকেই মাছ-মাংস এবং শাক-সবজি কিনছে৷ এবং যা কেনা হচ্ছে তা পুরোটাই টাটকা৷ ডিম কেনা হচ্ছে সেই খামার থেকে, যেখানে মুরগী সারাদিন ছুটে বেড়ায়৷ পাসাউ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফাখহোখশুলে পাসাউ এর স্টুডেন্টেনভ্যার্ক বা ছাত্র সংগঠনও আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের টাটকা খাবার পরিবেশনায়৷

তবে টাটকা খাবার পরিবেশন করার ফলে মেনজা-র খাবারের দামও একটু বেশি৷ রেগেন্সবুর্গের মেনজা-র তালিকায় একদিন ছিল নুডলসের সঙ্গে বাঁধাকপির সস৷ একজন পাস্তা রান্না করছে বিশাল একটি কড়াইয়ে৷ আরেক জন দ্রুত সবজি কাটছে৷ সবই করা হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে, ক্যান্টিনে৷ খাবারের ট্রে হাতে সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী৷ সবাই ক্ষুধার্ত৷ এখনি কিছু খেয়ে আবার ছুটতে হবে ক্লাসে৷ একজন ছাত্র- জানাল ‘‘আমার এতক্ষণ স্প্যানিশ ক্লাস ছিল, খিদেয় মরে যাচ্ছি৷ আমি আজকে নেব স্প্যাগেটির সঙ্গে টমেটো আর বাদামের সস৷'' আরেকজন জানাল, ‘‘আমার ভীষণ খিদে পেয়েছে, আমি নিচ্ছি পেঁয়াজ দিয়ে কড়া করে ভাজা মাংস৷'' আরেকজন বলল, ‘‘আমি নিচ্ছি মাংস কারণ এটার দাম সবচেয়ে কম৷'' বেশ কয়েকজন বলল, ‘‘আগে ঘুরে দেখি আজকের মেনুতে আর কী কী আছে, তারপর সিদ্ধান্ত নেব কী খাওয়া যায়৷''

Flash-Galerie Reportage über Studium in DE
ক্লাসের ফাঁকে চটজলদি খাবার সেরে নেওয়া যায়ছবি: Elton Hubner

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছেই রয়েছে সবজির বাগান৷ সেখানে বেশ কিছু মহিলা কাজ করছেন৷ কেউ আলু তুলছেন, কেউ গাজর তুলছেন, কেউ শশা৷ সবই তোলা হচ্ছে পরেরদিন দুপুরের জন্য৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে কাঁচা সবজি সরবরাহ করেন ইনগ্রিড কুফনার৷ তিনি জানান, ‘‘আজ টাটকা গাজর তোলা হচ্ছে, কারণ আগামীকাল মেনজার খাবারের তালিকায় থাকবে গাজরের একটি আইটেম৷ এরপর তোলা হবে সালাদের জন্য সবজি৷ কালকের মধ্যে সরবরাহ করতে হবে প্রায় একশো থেকে দেড়শো কিলো সবজি৷ কাঁচা সবজি প্রথমে তোলা হয়, বাছা হয়, খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে পাঠানো হয়৷ টাটকা সবজিই আমরা সরবরাহ করি৷ একদিন পুরনো হয়ে গেলে তা কখনোই পাঠানো হয় না৷''

শুধু সবজি নয়, বিভিন্ন ধরণের রুটি আর মাংসের জন্য রয়েছে অন্যান্য সরবরাহকারী৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন বিষয় দেখাশোনা করেন গ্যার্লিন্ড ডিটেল৷ তিনি জানান,‘‘আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা মেনজায় পরিবেশিত খাবারের কয়েকটি বিষয় পরীক্ষা করে দেখে৷ তার মধ্যে একটি হল খাবারের মান৷ আমরা প্রায়ই মেনজার খাবার নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলি৷ তাদের মতামত গ্রহণ করি৷ এরা আমাদের কাছে অতিথির মত৷ তাই তাদের জানানো আমাদের কর্তব্য কোথা থেকে আমরা খাবার আনছি৷ মাছ-মাংস কত টাটকা, ডিমগুলো খাঁচায় আটকে থাকা মরগীর কিনা– এসব৷ আর এ কারণেই এখানকার মেনজার খাবারের দাম একটু বেশি৷''

রেগেন্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে এ ধরণের খাবার পরিবেশিত হচ্ছে৷ জার্মানির একটি মাত্র মেনজা-য় ১০০ ভাগ টাটকা এবং প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি খাবার পরিবেশিত হচ্ছে – এই স্বীকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চায়৷ এখন শুধু অপেক্ষার পালা৷

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন