আসামের নাগরিকপঞ্জি: কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বছর
ভারতের আসাম রাজ্যে শনিবার চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করা হয়েছে৷ রাতারাতি নাগরিকত্ব হারিয়েছেন ১৯ লাখেরও বেশি মানুষ৷ চলুন তার আগে জেনে নিই, কীভাবে এই অবস্থায় পৌঁছলো আসাম৷
১৯৪৭
ব্রিটিশ শাসন শেষে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়৷ ঐ ঘটনায় লাখ লাখ মানুষ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়া শুরু করে৷
১৯৪৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অবাধ যাতায়াতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়৷
১৯৫১
আসাম রাজ্যের জন্য প্রথম নাগরিকপঞ্জি তৈরি করে ভারত সরকার৷
১৯৫৫
নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হয়৷ জন্ম, উত্তরাধিকার ও নিবন্ধনসূত্রে ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার নীতিমালা প্রণীত হয়৷
১৯৬১
পূর্ব পাকিস্তানের লাখ লাখ মানুষকে আসাম ছেড়ে পূর্ব পাকিস্তানে চলে যেতে বাধ্য করা হয়৷
১৯৬৪
পূর্ব পাকিস্তানে হিন্দু-পাকিস্তান দাঙ্গার কারণে বাঙালি হিন্দুরা ভারতে চলে যান৷
১৯৬৫
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের কারণে আরও শরণার্থী আসাম হয়ে ভারতে যায়৷
১৯৭১
স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম হয়৷ এই সময় নতুন করে আরও শরণার্থী ভারতে চলে যান৷
১৯৮৩
লালুঙ সম্প্রদায়ের হাতে দুই হাজারের বেশি বাঙালি অভিবাসী প্রাণ হারান৷ এক আইনে বলা হয়, যারা ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের মধ্যে আসামে ঢুকেছে তারা দশ বছরের জন্য ভোটাধিকার হারাবে৷ যারা ২৪ মার্চ ১৯৭১ সালের মধ্যে আসামে ঢোকার প্রমাণ দিতে পারবেন না, তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হবে৷
১৯৮৫
আসাম চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়৷ এর আওতায় ১৯৬৬ সালের ১ জানুয়ারির পর যারা ভারতে গেছেন তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়৷
২০০৩
নাগরিকত্ব (সংশোধিত) আইন অনুযায়ী, ১৯৫০ থেকে ১৯৮৭ সালের মধ্যে জন্ম নেয়া যে কেউ এবং ১৯৮৭ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে অন্তত একজন ভারতীয় বাবা-মার ঘরে জন্ম নেয়া শিশু ভারতের নাগরিক বলে গণ্য হবে৷
২০১৩
সুপ্রিম কোর্ট আসামের রাজ্য কর্তৃপক্ষকে নাগরিকপঞ্জি হালনাগাদ করার নির্দেশ দেন৷
২০১৫
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে রাজ্য কর্তৃপক্ষ গণনা ও নাগরিকদের ভেরিফাই করা শুরু করে৷
২০১৬
পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি৷
২০১৭
আসামের নতুন নাগরিকপঞ্জির প্রথম খসড়া প্রকাশ করা হয়৷ এতে আবেদন করা তিন কোটি ২৯ লাখ মানুষের মধ্যে এক কোটি ৯০ লাখের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়৷
২০১৮
দ্বিতীয় খসড়ায় দুই কোটি ৮৯ লাখের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়৷ বাদ পড়েন প্রায় ৪০ লাখ জন৷
২০১৯
৩১ আগস্ট শনিবার চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ করা হবে৷ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে৷