আলবেনিয়ায় চিঠি খুঁজছে ঠিক ঠিকানা
১৫ মে ২০১০ভাবতে পারেন, আলবেনিয়ার ডাক পদ্ধতির আজ এমন বিভ্রান্ত অবস্থা যে, প্রতি পাঁচটি চিঠির মধ্যে একটি প্রেরকের কাছে ফেরৎ আসে? আলবেনিয়া বলে নাক কুঁচকোতে পারবেন না, কেননা এই আলবেনিয়া ১৯৯১ সালের আগের কম্যুনিস্ট শাসিত আলবেনিয়া নয়৷ এই নতুন, গণতান্ত্রিক আলবেনিয়া ন্যাটো'র সদস্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য পদপ্রার্থী৷ কিন্তু একটি রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থা থেকে আরেকটিতে উত্তরণের কিছু সমস্যাও আছে৷
তারই একটি হল, কম্যুনিস্টরা যাবার পরে মানুষেরা যেখানে সেখানে যাবার এবং বসবাস করার অধিকার পেয়েছে৷ মানুষজন গ্রাম ছেড়ে আসছে শহরে, বিশেষ করে রাজধানী টিরানায়৷ ওদিকে টিরানায় সব রাস্তার নামের ফলক উধাও হয়ে গেছে, নয়তো সেগুলো মরচে ধরা, কিংবা তাদের ওপর নির্বাচনের পোস্টার সাঁটা হয়েছে৷ খোদ প্রধানমন্ত্রী সালি বেরিশা'র বাড়ির রাস্তারও ঐ অবস্থা ছিল৷ আরেক সমস্যা হল যথেচ্ছ এবং যত্রতত্র বাড়ি তৈরি করার ফলে বাড়ির নম্বর কি নামের কোনো নিশ্চয়তা নেই৷
তা'হলে চিঠি যাচ্ছে কীভাবে? এই ধরুন ‘আটবছরের স্কুলটার পাশের নীল বাড়ি', ‘তীর দেওয়া বাড়ি', ‘ঘোড়ার ছবি দেওয়া বাড়ি', এই ধরণের মধ্যযুগীয় ঠিকানায়৷ কিংবা কোন কোম্পানির বাড়ি বলে পরিচিত ভবনে৷ এমনকি ডাকঘর থেকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে, ‘আমি আপনার পোস্টম্যান', পাশে সেই পোস্টম্যানের মোবাইল ফোন নম্বরও দেওয়া আছে৷ মানুষজন কোনো দরকারি চিঠি আসার কথা থাকলে, পোস্টম্যানকে টেলিফোন করে জিজ্ঞাসা করছে৷ ব্যবসায়ীরা বলছে, বিল কি কনট্র্যাক্ট ঠিক মতো পৌঁছয় না৷ এমনকি আদালতের নোটিশ পর্যন্ত না৷ এ্যামবুলেন্স কর্মীরা স্রেফ তাঁদের অভিজ্ঞতা এবং আন্দাজ থেকে ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেখছেন কোনো বৃদ্ধা মহিলা হাঁপাতে হাঁপাতে সেদিকে দৌড়চ্ছেন৷
তবে সমাধান? সমাধান হল ইউরোপীয় নিরাপত্তা এবং সহযোগিতা সংগঠন ওএসসিই'র ‘ঠিকানা আধুনিকীকরণ কর্মসূচি'৷ আলবেনিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিমান থেকে তোলা ছবি এবং ডিজিটাল মানচিত্র দিয়ে সর্বাধুনিক তথ্য সংগ্রহ করছে এবং জানিয়েছে, ‘প্রত্যেক নাগরিকের কাছে তাঁর নিজের ঠিকানা দিয়ে একটি চিঠি যাবে৷'
প্রতিবেদন: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন